বিশেষ প্রতিবেদন:
সরকারবিরোধী আন্দোলনে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আগ্রহী হয়ে বারবার কর্মসূচি ঘোষণা করলেও তাতে আগ্রহী নন নেতাকর্মীরা। বরং দিচ্ছেন বাধা। বলছেন, এই মুহূর্তে আন্দোলন করাটা বোকামি হবে। কিন্তু ফখরুলও নাছোড়বান্দা। তিনি বলছেন, দেরি করাটা ঠিক হবে না। যা করার এখনই করতে হবে।
সরকার পতনের পরিকল্পনায় বিএনপি ইতোমধ্যে ৫০০ মিলিয়ন ডলারের একটি প্রজেক্ট হাতে নিয়েছে। যার লক্ষ্য, বাংলাদেশবিরোধী অপপ্রচার চালানো এবং সরকারের বিরু’দ্ধাচরণ করা। লন্ডনে পলাতক দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান যা দেখভাল করছেন। তিনি তার মত সব চালালেও ঘোর আপত্তি মির্জা ফখরুলের।
দলীয় মহাসচিবের ভাষ্য, সরকারের বিরু’দ্ধে শুধু অপপ্রচার চালালেই হবে না, পাশাপাশি শক্তিশালী আন্দোলনও গড়ে তুলতে হবে। কিন্তু তার এ কথা মানতে নারাজ তারেকপন্থীরা। ইতোমধ্যে তা প্রত্যাখ্যানও করেছেন। বর্তমানে এ নিয়ে দলের মধ্যে সুস্পষ্ট মতবিরোধ দেখা দিয়েছে।
তারেকপন্থীদের দাবি, এই মুহূর্তে আন্দোলনে গেলে যে হিতে বিপরীত হবে না, তার কী গ্যারান্টি! এতে লাভের চেয়ে ক্ষ’তিই বেশি। কারণ, খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়টি এই আন্দোলনের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। তাই বড় ধরনের আন্দোলনে গেলেই খালেদার মুক্ত জীবনে সংকট তৈরী করবে। বিদেশযাত্রার সম্ভাবনাও বাধাগ্রস্ত হবে। যা ফখরুল অনুধাবন করতে পারছেন না।
তাছাড়া কয়েকদিন পরেই পবিত্র মাহে রমজান। একটি আন্দোলনকে চাঙ্গা করতে যে সময় লাগে, তা বিএনপির হাতে নেই। এটাই বাস্তব। সাংগঠনিক দুর্বলতা তো আছেই। সবমিলিয়ে তারেকপন্থীরা চাইছেন না, ফখরুলের মত আবেগপ্রবণ হয়ে হুট করে কিছু করতে।
তবে এসবকে খোঁড়া যুক্তি হিসেবে অ্যাখ্যায়িত করে মির্জা ফখরুলসহ বিএনপির স্থায়ী কমিটির একাধিক সদস্য বলছেন, এসব স্রেফ অজুহাত। কারণ, সময় কারো জন্য অপেক্ষা করেনা। ভবিষ্যতে যে বিএনপির সামনে আরও দুর্দিন অপেক্ষা করছে না, তা কে জানে!
তাই, এখনই আন্দোলনের উৎকৃষ্ট সময়। প্রয়োজনে তৃণমূলসহ সবাইকে নিয়ে শক্তিশালী আন্দোলনে যাওয়া উচিত। নইলে আন্দোলন আজীবনই ‘ঈদের পরে’ থেকে যাবে। আর এভাবে চললে ১ বছর কেন, ১০ বছর পরও কোন আন্দোলন গড়ে তোলা যাবে না।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, বিএনপিতে এখন আন্দোলনপন্থী এবং লিপসার্ভিসপন্থীদের মাঝে মতবিরোধ দেখা যাচ্ছে। পরিস্থিতি এমন অবস্থায় গিয়ে পৌঁছেছে, আন্দোলন নিয়ে বিভক্ত বিএনপি যে কোন মুহুর্তেই ভাঙনের মাধ্যমে হারিয়ে যাবে। সময় পরিক্রমায় সেটাই এখন দেখার বিষয়। নিউজব্যাংক।