সময় এখন ডেস্ক:
দাড়ি থাকায় আড়ংয়ে চাকরি পাননি এক যুবক- এমন দাবির প্রেক্ষিতে সিলেটে প্রতিষ্ঠানটির বিক্রয়কেন্দ্রের সামনে সমাবেশ করেছেন স্থানীয়রা। পরে আড়ং এক বিবৃতি দিয়ে ওই যুবকের সঙ্গে ঘটে যাওয়া ঘটনাকে দুঃখজনক বলে উল্লেখ করেছে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ৮ মিনিটের একটি ভিডিওতে দেখা যায়, এক যুবক নিজেকে ইমরান হোসেন ইমন পরিচয় দিয়ে দাবি করেছেন, তিনি আড়ংয়ে বিক্রয়কর্মীর একটি নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ নেন। মুখে মাস্ক পরে তিনি সাক্ষাৎকার দেন। কর্তৃপক্ষ তার ব্যাপারে সন্তুষ্ট বলে মনে হয়েছিল তার।
কিন্তু একপর্যায়ে কর্তৃপক্ষের চাহিদা মোতাবেক তিনি মাস্ক খোলেন এবং তার মুখে দাড়ি দেখে কর্তৃপক্ষ তাকে জানায়, তাদের নীতিমালা অনুযায়ী তারা দাড়িওয়ালা ব্যক্তিদের বিক্রয়কর্মী হিসেবে নিয়োগ দিতে পারেন না। যদি ক্লিন শেভ করতে পারে, তাহলে তার জবটা তারা এখনই কনফার্ম করতে পারবে।
আজ দিনভর বিপুল সংখ্যক মানুষ ওই ভিডিওটি ফেসবুকে শেয়ার করেছেন এবং তারা ‘বয়কট আড়ং’ হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করছেন। ভিডিওটি ফেসবুকে ভাইরাল হওয়ার পর সিলেটে আড়ংয়ের বিক্রয়কেন্দ্রের সামনে প্রতিবাদ করে সিলেটের সচেতন আলেম সমাজের ব্যানারে বেশ কিছু লোক।
প্রতিবাদকারীদের মুখপাত্র শাহ মোমশাদ আহমেদ কিচু দাবি তুলে ধরে বলেন, দাড়ি নিয়ে আড়ংয়ের কোনো নীতিমালা থাকলে তা পরিবর্তন করতে হবে। নিয়োগের ক্ষেত্রে সব ধর্মের প্রতি সম্মান দেখাতে হবে এবং এই ঘটনার জন্য সুস্পষ্টভাবে ক্ষমা চাইতে হবে।
ভবিষ্যতে যেন এ ধরনের ঘটনা না ঘটে, তাও নিশ্চিত করতে হবে। ক্ষমা না চাওয়া পর্যন্ত আড়ংয়ের পণ্য বর্জনের আহ্বান জানাবেন তারা।
আড়ংয়ের বিবৃতি:
এদিকে আড়ংয়ের পক্ষ থেকে যুবকের সাথে ঘটে যাওয়া ওই অভিজ্ঞতাকে ‘দুঃখজনক’ উল্লেখ করে বিবৃতি দেওয়া হয়েছে। বাংলা ও ইংরেজি ভাষায় বিবৃতি দুটি দেওয়া হয়েছে ব্র্যাক-আড়ংয়ের চিফ অপারেটিং অফিসার মোহাম্মদ আশরাফুল আলমের নামে।
বাংলা বিবৃতিতে লেখা হয়, ‘এটি নিঃসন্দেহে আমাদের মূল্যবোধের পরিপন্থী। আড়ং বয়স, বর্ণ, ধর্ম, জেন্ডার বা জাতিগত উৎস নির্বিশেষে সকলের জন্য মানবিক মর্যাদা এবং অন্তর্ভুক্তির অধিকারগুলো সমুন্নত রাখে। আমাদের নিয়োগের সিদ্ধান্তে ধর্মীয় বিশ্বাস ও পালনকে কখনই বিবেচনা করা হয় না।’
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘আমাদের ভবিষ্যতের ইন্টারভিউ বোর্ডগুলোর পরিচালনায় আমাদের মূল মূল্যবোধগুলোর প্রতিফল নিশ্চিত করতে আমরা নিবিড়ভাবে কাজ করব।’
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, কর্তৃপক্ষ ওই চাকরিপ্রার্থী যুবকের সঙ্গে যোগাযোগ করে তার কাছে দুঃখপ্রকাশ করেছেন।
এদিকে, সিলেটের প্রতিবাদকারীরা বলছেন, আড়ংয়ের বিবৃতিতে সুস্পষ্টভাবে ক্ষমা চাওয়া হয়নি। তাই তারা আড়ংয়ের পণ্য বর্জনের সিদ্ধান্তে অটল থাকবেন।