সময় এখন ডেস্ক:
মেয়েদের পড়ালেখা নিয়ে দেওয়া এক বক্তব্যের রেশ না কাটতেই এবার কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের মেয়েদের বোরকা পরতে বললেন হেফাজতে ইসলামের আমির আহমদ শফী। বলেছেন, ‘কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে মেয়েদের পড়াতে চাইলে তাদের বোরকা পরাতে হবে। তাদেরকে শুধু নারী শিক্ষকরা পড়াবেন।’
রবিবার সন্ধ্যায় গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে হেফাজত আমির এসব কথা বলেন। একই সঙ্গে তিনি অনুরোধ জানিয়েছেন, কারও বক্তব্য যেন বিকৃত করা না হয়। এতে সাধারণ মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তির সৃষ্টি ও ভুল বোঝাবুঝি হয় বলে অভিমত হেফাজত আমিরের।
এর আগে গত শুক্রবার জুমার নামাজের পর চট্টগ্রামের হাটহাজারীর দারুল উলুম মঈনুল ইসলাম মাদ্রাসার বার্ষিক মাহফিলে এক বক্তব্যে আহমদ শফী বলেন, ‘আপনাদের মেয়েদের স্কুল-কলেজে দেবেন না। বেশি হলে ক্লাস ফোর বা ফাইভ পর্যন্ত পড়াতে পারবেন।’
তার এই বক্তব্য নিয়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে। এমন বক্তব্যকে বৈষম্যমূলক অভিহিত করে তা গ্রহণের সুযোগ নেই বলে মন্তব্য করেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। আর শফীর বক্তব্যে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিস্মিত ও হতবাক হয়েছেন বলে গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন। এর মধ্যেই মেয়েদের পড়ালেখা নিয়ে আবার শফীর নতুন বক্তব্য এল।
বিবৃতিতে আহমদ শফী বলেন, ‘কারও বক্তব্যের ব্যাখ্যা দিতে হলে আপনাকে তার কথা বুঝতে হবে। অনুধাবন করতে হবে। না বুঝে নিজের মতো করে ব্যাখ্যা দাঁড় করানো একধরনের অপরাধ। আর খণ্ডিত বক্তব্যকে নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা আরও বড় অপরাধ। কোনো কিছু লিখতে চাইলে সুস্থ মস্তিষ্কে চিন্তাশীল হয়ে সঠিক কথাটি লিখবেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘একটি মহল আমাকে বিতর্কিত করতে মরিয়া হয়ে মাঠে নেমেছে। আমাকে নারীবিদ্বেষী, নারীশিক্ষাবিরোধী হিসেবে উপস্থাপন করার অপপ্রয়াস চালাচ্ছে। আমি এসব কথার জবাব দিয়েছি।’
হেফাজত আমির বলেন, ‘আবারও বলছি, নারীদের জন্য নিরাপদ পরিবেশে শিক্ষার ব্যবস্থা করুন এবং তাদের জীবন ও ইজ্জতের নিরাপত্তা নিশ্চিত করুন। কেউ কারও কন্যাকে অনিরাপদ পরিবেশের দিকে ঠেলে দিতে পারে না। কারণ দৈনিক পত্রিকা খুললেই প্রতিদিন চোখে পড়ছে কোথাও না কোথাও কোনো নারীকে ধর্ষণ করা হয়েছে অথবা খুন করা হয়েছে।
‘নৈতিকতা অর্জন না হলে ধর্ষণ, খুন ও উত্ত্যক্তকরণ বন্ধ হবে না। নারীর প্রতি বৈষম্য দূর হবে না। ইসলামই ফিরিয়ে দিয়েছে নারীর প্রকৃত সম্মান। আমার কথার সারাংশ হলো- উচ্চশিক্ষা কিংবা কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পড়াতে চাইলে বোরকা পরতে হবে এবং তাদের শিক্ষকও মহিলা হবেন।’
1