সময় এখন ডেস্ক:
বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফর ঠেকাতে মতিঝিলে ছাত্র ও যুব অধিকার পরিষদে মিছিল থেকে শিশুবক্তা হিসেবে খ্যাত উস্কানিদাতা ওয়াজি রফিকুল ইসলাম মাদানিকে ধরে নিয়ে গেছে পুলিশ।
কর্তব্যরত পুলিশ সদ্যদের ওপর হাম’লার দায়ে তার বিরু’দ্ধে মামলা করা নিয়ে আলোচনায় বসেছে বাহিনীর উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। মতিঝিল জোনের এডিসি নূরুল আমিন বলেছেন, পুলিশের ওপর হাম’লায় তাদের বিরু’দ্ধে মামলা হতে পারে।
বৃহস্পতিবার সাড়ে ১১টার দিকে ছাত্র ও যুব অধিকার পরিষদের একটি মিছিল রাজধানীর জিরো পয়েন্ট থেকে শুরু হয়ে বিজয়নগর নাইটিংগেল মোড় হয়ে মতিঝিলের শাপলা চত্বরে পৌঁছায়। সেখানেই পুলিশের সঙ্গে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ায় জড়ায় সংগঠনটির পাঁচ শতাধিক নেতাকর্মী।
পুলিশ সদস্যদের ওপর হাম’লা চালায় নেতাকর্মীরা। কয়েকজন পুলিশ সদস্যকে র’ক্তাক্ত করা হয়। তাদের উদ্ধারে এগিয়ে আসে গণমাধ্যমকর্মীরা। সেখান থেকেই রফিকুলসহ অন্তত ১০ জনকে আটক করে পুলিশ।
এই সংঘ’র্ষে ২ জন পুলিশ সদস্যও আহত হয়েছেন। তারা হলেন মতিঝিল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) শহীদুল ইসলাম ও ওয়াহিদুর রহমান। মতিঝিল থেকে জানানো হয়েছে, এসআই দুজন গুরুতর অবস্থায় রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
অন্যদিকে ছাত্র অধিকার পরিষদ থেকে বলা হয়েছে পুলিশের হাম’লায় তাদের বেশ কয়েকজন নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন।
সংগঠনের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক আহ্বায়ক বিন আমীন মোল্লা বলেন, মতিঝিলের ঘটনায় আমাদের পাঁচ-সাতজন গুরুতর আহত হয়েছে। সংগঠনের গাজীপুর শাখার মাজেদুল, ঢাকা মহানগর ছাত্র অধিকার পরিষদের সুবর্ণা, শরীয়তপুর ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি নেহাল আহত হয়েছেন। তাদের ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়েছে।
আমীন মোল্লা বলেন, আমরা জিরো পয়েন্ট থেকে মিছিল শুরু করি। এরপর বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের সামনে দিয়ে বিজয়নগর, নাইটিংগেল মোড় হয়ে যখন মতিঝিল পৌঁছাই তখন পুলিশ পেছন থেকে হাম’লা করে, টিয়ার গ্যাস ও রাবার বুলেট ছোড়ে। তখন পুলিশের সঙ্গে ছাত্র ও যুব অধিকার পরিষদের নেতা-কর্মীদের সংঘ’র্ষ হয়। প্রায় অধা ঘণ্টা চলে।
বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে যোগ দিতে ঢাকা সফরে আসছেন প্রতিবেশী পাঁচ দেশের রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধান। এরই মধ্যে ঢাকা সফর করে গেছেন মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ সলিহ, শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসে ও নেপালের প্রেসিডেন্ট বিদ্যা দেবী ভান্ডারি। বর্তমানে সফরে রয়েছেন ডা. লোটে শেরিং।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদির সফরে আসার কথা ২৬ মার্চ। এবারের সফরে প্রথম কোনো ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ঢাকার বাইরেও যাবেন মোদি। টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা জানানোর পর পরিদর্শন করবেন সেখানকার ওড়াকান্দি ও সাতক্ষীরায় দুটি মন্দির।
তার এ সফর ঠেকাতে বিক্ষোভ করছে ইসলামপন্থি কয়েকটি সংগঠন। একই দাবিতে নানা কর্মসূচি দিচ্ছে ছাত্র অধিকার পরিষদসহ কয়েকটি বাম সংগঠনও। দুই পক্ষই ভারতীয় সরকারপ্রধানের সফর ঠেকানোর ঘোষণা দিয়েছে।
গত জুমার নামাজ শেষে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম এলাকায় বিক্ষোভ সমাবেশ করে কয়েক হাজার মুসল্লি। বিক্ষোভ থেকে হুম’কি দিয়ে বলা হয়, যদি মোদিকে আসতে দেয়া হয়, তাহলে আমরা সবাই সন্ত্রা’সে পরিণত হব। বাংলা হবে আফগান, আমরা হব তালেবান।