সময় এখন ডেস্ক:
নিষ্ক্রিয়তার কারণে বিএনপির অঙ্গ সংগঠন জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কঠোর সমালোচনা করলেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
ছাত্রদলের নেতা-কর্মীদেরকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, আজকে সারাদেশে যে অ’ন্যায়-অ’বিচার চলছে, সমস্ত রাজপথ প্রকম্পিত হওয়া উচিত ছিল। আপনাদের যতক্ষণ এই বোধ না আসবে যে জেলে বাস করছি, শৃঙ্খলিত অবস্থায় বাস করছি ততক্ষণ কেউ শৃঙ্খল ভাঙতে পারবে না। আসলেই বিপ্লব, বিদ্রোহ, সংগ্রাম ছেলেখেলা নয়।
বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবে এক আলোচনায় এসব কথা বলেন ফখরুল।
১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ সেনাপ্রধান থাকা অবস্থায় রাষ্ট্রপতি বিচারপতি আবদুস সাত্তারকে অ’স্ত্রের মুখে হটিয়ে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের ক্ষমতা দখলের দিনটিতে এই আলোচনার আয়োজন করে ৯০ এর ডাকসু ও সর্বদলীয় ছাত্রঐক্য।
বর্তমান সরকারকেও স্বৈ’রাচারী আখ্যা দিয়ে ফখরুল বলেন, গত ১০-১২ বছরে আমাদের ৩৫ লাখ নেতাকর্মী আসামি হয়েছে, ৫০০’র ওপর গুম হয়েছে, হাজারের বেশি খু’ন হয়েছেন।
ছাত্রদলের পাশাপাশি নিজেদেরও ব্যর্থতার কথা উল্লেখ করে বিএনপি নেতা বলেন, প্রতি মূহুর্তে আমরা আওয়ামী লীগের দ্বারা নির্যা’তিত, কিন্তু আমরা এখনও সেভাবে তাদের বিরু’দ্ধে দঁড়াতে পারিনি। এ দায়-ব্যর্থতা আমাদের সকলের। গণতন্ত্রকে যারা বিশ্বাস করি এ দায় থেকে আমরা সরকারকে সরাতে পারিনি।
আমাদেরকে কেউ গণতন্ত্র এনে দেবে না, নিয়ে আসতে হবে। এজন্য সমস্ত শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
ক্ষমতায় টিকে থাকতে সরকার অ’বৈধ কাজ, মিথ্যাচার করছে অভিযোগ করে ফখরুল বলেন, সরকার অত্যন্ত কৌশলী। তারা বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন কর সব সময়, কারণ তারা এটা না করলে ক্ষমতায় থাকতে পারবে না।
সুবর্ণজয়ন্তীর নামে মুজিববর্ষ
স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর নামে সরকার আসলে মুজিববর্ষ পালন করছে বলেও মন্তব্য করেন ফখরুল।
বলেন, চতুর্দিকে দেখবেন সব মুজিববর্ষ। আপনারা সুবর্ণজয়ন্তী পালন করছেন কিন্তু মানুষ তো কাউকে দেখি না, জনগণ সঙ্গে নাই। প্যারেড গ্রাউন্ডে প্রোগ্রামে কিছু আমলা, তাঁবেদার গোষ্ঠী ছাড়া আর কাউকে দেখা যায় না।
আর বাইরে থেকে কিছু মেহমান এনে বলতে চান অভূতপূর্ব-অলৌকিক উন্নয়ন হয়েছে, কোনো অভাব নাই। অথচ এখন মোটা চালের দাম ৮০ টাকা, তেল-লবণের দাম বেড়েছে।
ফখরুল বলেন, তারা যতই বলুক যতই ঢাক ঢোল বাজাক, দেশে আসলে গরিব আরও গরিব হচ্ছে, ধনী আরও ধনী হচ্ছে। মেগা প্রকল্পের নামে মেগা দুর্নীতি চলছে।
সুনামগঞ্জের শাল্লায় হিন্দু গ্রামে হাম’লায় সরকার সমর্থকদের সংশ্লিষ্টতার অভিযোগও আনেন ফখরুল। বলেন, সুনামগঞ্জে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট হয়েছে। কিন্তু ওবায়দুল কাদের সাহেব বললেন, এটা বিএনপি করেছে। আর এখন ধরা পড়ল কে? এক নম্বর আসামি যুবলীগের সদস্য স্থানীয় মেম্বার।
আসলে সমস্যা হয়েছে, ওনারা প্রতি রাতে দুঃস্বপ্ন দেখেন, এই বিএনপি আসলো। সুতরাং ওনাদের মুখে বিএনপি ছাড়া কোনো কথা বের হয় না।
বিএনপি নেতা বলেন, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টকারী যত ঘটনা ঘটেছে, যা কিছু হয়েছে সব আওয়ামী লীগের আমলে হয়েছে। আপনারা নিরপেক্ষ তদন্ত করে দেখুন হিন্দুদের বাড়ি-জমি কারা দখল করে রেখেছে, দেখবেন বেশির ভাগই আওয়ামী লীগের দখলে।
করোনা বাড়ল কেন
করোনার সংক্রমণ আবার ছড়িয়ে পড়ায় সরকারের সমালোচনা করেন ফখরুল। বলেন, অথচ প্রধানমন্ত্রী নাকি করোনা সুষ্ঠুভাবে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য একটা পুরস্কার পেয়েছেন। কিন্তু প্রয়োজনীয় কাজগুলোই তারা করে নাই।
এখন বলছে আইসিইউ বেড নেই। তাহলে ১ বছর ধরে কী করলেন? কেন মানুষ আজকে হাসপাতাল থেকে হাসপাতালে দৌড়াচ্ছে? কেন এত দিনেও মানুষের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি করতে পারলেন না?
19