সময় এখন ডেস্ক:
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ভারত সুখে-দুঃখে সবসময় বাংলাদেশে পাশে আছে। সবচেয়ে বড় কথা, ভারতের প্রতিটি রাজনৈতিক দল, দলমত নির্বিশেষে ভারতের জনগণ একটি বিষয়ে ঐক্যবদ্ধ হয়— সেটি হলো বাংলাদেশ। তারা সবসময় বাংলাদেশের পাশে থাকে।
তাই ভারত শুধু আমাদের নিকটতম প্রতিবেশী বন্ধুরাষ্ট্রই নয়, তাদের সঙ্গে আমাদের ঐতিহাসিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ভৌগলিক সেতুবন্ধন রয়েছে। দুই দেশের সরকার ও জনগণ ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে।
শুক্রবার (২৬ মার্চ) জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে দেয়া সভাপতির ভাষণে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশের জনগণের পাশে দাঁড়িয়েছিল ভারত। বাংলাদেশের কোটি শরণার্থীকে দেশটি আশ্রয় দিয়েছিলেন। মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষণ থেকে শুরু করে সামরিক সরঞ্জাম সরবরাহ করেছিল। মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশের ৩০ লাখ শহিদের পাশাপাশি ভারতের অনেক সেনাসদস্যও প্রাণ উৎসর্গ করেছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতের সেই অবদানের কথা কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করেন। মুক্তিযুদ্ধে ভারতের এই অবদানের জন্য ভারত সরকার ও ভারতের জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান বাংলাদেশের জনগণের পক্ষ থেকে। একইসঙ্গে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকেও আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।
শেখ হাসিনা বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্থানি সৈন্যরা অত্যা’চার-নিপী’ড়ন চালিয়েছিল। বাংলাদেশ থেকে প্রায় এক কোটি মানুষ ভারতে গিয়ে আশ্রয় নেন। ভারত সেই শরণার্থীদের আশ্রয় দিয়েছে, খাদ্য দিয়েছে, চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছে।
সেই সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধা যারা অংশ নিয়েছেন, সেই মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষণ দিয়েছে ভারত, অ’স্ত্র সরবরাহ করে সহযোগিতা করেছে। আমি ভারতের জনগণ ও সরকারের কাছে বাংলাদেশের জনগণ ও আমার নিজের পক্ষ থেকে অশেষ কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি।
অনুষ্টানে উপস্থিত হওয়ার জন্য ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, আমি আমাদের মুক্তিযুদ্ধে ভারতের অবদান সবসময় শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করি। আজকের এই অনুষ্ঠানে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত হয়ে এই আয়োজনকে মহিমান্বিত করেছেন।
বাংলাদেশের সরকার, জনগণ, আমার ছোট বোন শেখ রেহানা ও আমার পক্ষ থেকে আমি ভারতের প্রধানমন্ত্রী ও ভারতবাসীকে আমার আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।
ভারত সরকার জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ‘গান্ধি শান্তি পুরস্কার’-এ ভূষিত করেছে। এ জন্যও ভারত সরকার ও নরেন্দ্র মোদির প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, আমি মনে করি— এই পুরস্কারে ভূষিত করার মাধ্যমে ভারত দক্ষিণ এশিয়ার একজন যোগ্য নেতা ও গান্ধিজীর প্রকৃত অনুসারীকে সম্মানিত করেছে।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী, বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও দুই দেশের কূটনীতির ৫০ বছর পূর্তিতে দুই দেশ বেশকিছু যৌথ কর্মসূচি পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
দুই দেশের দুই মহান নেতা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও মহাত্মা গান্ধীকে নিয়ে ভারত সরকার ‘বঙ্গবন্ধু-বাপু ডিজিটাল প্রদর্শনী’র উদ্যোগ নিয়েছে। এ জন্য আমি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই।
567