সময় এখন ডেস্ক:
চট্টগ্রামের সাতকানিয়া এলাকায় প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ও আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়ার নামে লাগানো ব্যানার সরানোর চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে সাতকানিয়া-লোহাগাড়ার সংসদ সদস্য আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামউদ্দিন নদভীর বিরু’দ্ধে।
২৬ মার্চ সকালে ব্যানারটি সরানোর চেষ্টা করা হলেও পুলিশের বাধায় সেটি প’ণ্ড হয়। এরপর স্থানীয় আওয়ামী লীগের একটি পক্ষ নদভীর বিরু’দ্ধে সভা করেছে।
এই ঘটনায় সাতকানিয়া থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন স্থানীয় কেঁওচিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মনির আহমদ।
মনির আহমদ বলেন, ঘটনাটি আমার এলাকায় হয়েছে। ব্যানার লাগানো নিয়ে দুই পক্ষের দ্ব’ন্দ্বে এলাকার আইনশৃঙ্খলা অবনতি হতে পারে। এ জন্য আমি থানায় জিডি করেছি।
জিডির বিষয়টি নিশ্চিত করে সাতকানিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেন বলেন, সাতকানিয়ার মধুবন বেকারির ওপরে ৬ হাজার স্কয়ার ফিটের একটি বিলবোর্ড রয়েছে। সেই বিলবোর্ডে গত মাসে বঙ্গবন্ধু মানে বাংলাদেশ শিরোনামে একটি ব্যানার লাগানো হয়।
ব্যানারের এক পাশে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি, অন্য পাশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি এবং নিচের অংশে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়ার ছবি ছিল। ২৬ মার্চ সকালে ব্যানারটি কামাল হোসেন ও জাকির হোসেন নামে দুই যুবক নামিয়ে ফেলার চেষ্টা করেন। স্থানীয় বাসিন্দারা ব্যানারটি নামাতে দেখে পুলিশকে খবর দেন। পরে পুলিশ ওই দুই যুবককে আটক করে।
ওসি আরও বলেন, আটক যুবকদের কাছ থেকে এমপি নদভীর ছবি সংবলিত একটি ব্যানার পেয়েছি। সেই ব্যানারেও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবিও আছে। আমরা ব্যানারটি জ’ব্দ করেছি।
ব্যানার নামানোর চেষ্টার প্রতিবাদে ওই দিন বিকেলে সাতকানিয়ার রামপুরায় একটি প্রতিবাদ সমাবেশ করা হয়েছে। সমাবেশে ছিলেন আওয়ামীপন্থী চিকিৎসক নেতা ডা. আ ন ম মিনহাজুর রহমান।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু মানে বাংলাদেশ শিরোনামে ব্যানারটি ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়ার নামে লাগানো হয়েছে। এমপি নদভী সেটি সরিয়ে নিজের নামে ব্যানার লাগাতে চেয়েছিলেন। পরে পুলিশ সেই কাজে বাধা দেয়।
তিনি বলেন, এমপি নদভীর এলাকায় জনপ্রিয়তা নেই। তাই তিনি আওয়ামী লীগের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি করতে এই ধরনের কাজগুলো করছেন।
অভিযোগের ব্যাপারে জানতে সাতকানিয়া-লোহাগাড়ার সংসদ সদস্য আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামউদ্দিন নদভীর মোবাইল নম্বরে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
লোহাগাড়া ও সাতকানিয়ার আংশিক এলাকা নিয়ে গঠিত চট্টগ্রাম-১৫ আসন। এই আসনে ২০১৪ সালে দশম সংসদ নির্বাচনে জয়ী হন নদভী। একাদশ সংসদ নির্বাচনেও এই আসনে জয় পান তিনি।
তবে নদভীর সঙ্গে সাতকানিয়া-লোহাগাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের বেশির ভাগ নেতা-কর্মীর বিরোধ রয়েছে। জামায়াতসংশ্লিষ্টতার অভিযোগ এনে ইউএনওকে বদলির চেষ্টা, রোহিঙ্গা ত্রাণ নিয়ে নয়-ছয়,
বিভিন্ন জাতীয় দিবসে এলাকার কোনো অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ না করা, স্থানীয় আওয়ামী লীগের বিপরীতে অবস্থান নেয়া, তার স্ত্রী রিজিয়া রেজা চৌধুরীকে আওয়ামী মহিলা রাজনীতিতে আনার মতো বিত’র্কিত কাজে জড়িয়ে বারবার আলোচনায় এসেছেন এমপি নদভী।
এমনকি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে নৌকার প্রার্থীর পক্ষে কাজ না করে দুবাই ভ্রমণের অভিযোগ আছে তার বিরু’দ্ধে।