বিএনপি-জামায়াতের গুজব সেল অস্থিতিশীলতা তৈরী করছে যেভাবে

0

বিশেষ প্রতিবেদন:

হেফাজতে ইসলামের হরতাল পালনকে কেন্দ্র করে ব্রাহ্মণবাড়িয়াসহ দেশজুড়ে ধ্বং’সযজ্ঞ চালানো হয়েছে। ধ্বং’স করা হয়েছে সরকারি, বেসরকারি অর্ধশতাধিক প্রতিষ্ঠান, দু’টি মন্দির, আওয়ামী লীগ কার্যালয়, দলের নেতা ও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের বাড়িতে। রক্ষা পায়নি পুলিশের কার্যালয়ও।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করে মাঠে সক্রিয় রয়েছে। সাথে নেমেছে বিজিবি, র‌্যাব ও যৌথ বাহিনী। কিন্তু এরই ভেতর একটি মহল আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সতর্ক অবস্থানকে কেন্দ্র করে গুজব ছড়িয়ে দেশে অরাজকতা তৈরি করতে উদ্যত হয়েছে।

বিশেষ করে বিএনপি-জামায়াতের গুজব সেল এই ইস্যুকে কেন্দ্র করে নানা ধরনের অপপ্রচার চালাচ্ছে বলে জানা যায়।

সূত্র বলছে, বিএনপি নেত্রী ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা, শামসুল আলম, সাজ্জাত হোসেন, মীর জাহানের মতো বিএনপি-জামায়াতপন্থী ফেসবুক আইডি ও পেইজ থেকে এসব গুজব ছড়ানো হচ্ছে।

এসব পেইজ থেকে বলা হচ্ছে, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জামেয়া মাদ্রাসা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ঘেরাও করে ফেলেছে। হেফাজতের নেতাকর্মীদের সতর্ক থাকার অনুরোধ জানিয়েছে। সবাই সতর্ক থাকুন। যা সম্পূর্ণ মিথ্যা বানোয়াট বলে স্থানীয় সূত্রে নিশ্চিত হওয়া গেছে।

এর আগে বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও মুজিববর্ষ উপলক্ষে ২৬ মার্চ দু’দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে বাংলাদেশে আসেন বন্ধুপ্রতীম দেশ ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তার সফরসূচি ঘোষণা হওয়ার পর থেকেই স্বাধীনতাবিরোধী জামায়াত-বিএনপি চক্রের গাত্রদাহ শুরু হয়। তারা মোদির এই সফরকে বিত’র্কিত করার লক্ষ্যে ঢাকাস্থ পাকিস্থান দূতাবাসের অর্থায়নে হেফাজত ইসলামের লেবাসে ডাকসু নেতা নুরু গংদের সহায়তায় দেশব্যাপী বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে।

ইতোমধ্যে তাদের সেই সহিং’সতায় কয়েকজনের প্রাণও গেছে। কিন্তু তাতেও থামেনি মৌলবাদী গোষ্ঠীটি। বরং নতুন নতুন সহিং’স কর্মসূচি ঘোষণা দিয়ে দেশকে অস্থিতিশীল করে তুলে নিজেদের রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিলের পাঁয়তারা করছে তারা হেফাজতকে সামনে রেখে।

তথ্যমতে, নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশে আসছেন, এমন খবর শুনে প্রথম থেকেই তার বিরোধিতা করছে জামায়াত। লন্ডনে পলাতক ফেরারি আসামি ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশনায় ঢাকাস্থ পাকিস্থান দূতাবাস মোদি বিরোধী এই আন্দোলনকে চাঙ্গা করতে অর্থায়ন করে। ‘পেইড এজেন্ট’ হয়ে তাদের হয়ে কাজ শুরু করে নুরু গং।

অন্তরালে পরোক্ষভাবে তাদের মদদ যুগিয়েছেন বিএনপি-জামায়াত-শিবিরের শীর্ষ পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ। হেফাজতের পক্ষ থেকে নরেন্দ্র মোদির সফরের বিরোধিতা করে কোনো ধরনের সহিং’স কর্মসূচিতে যাওয়া হবে না বলা হলেও সেটা ছিল ভাঁওতাবাজি। বরং বিএনপি-জামায়াতের ছায়াতলে ২৬ মার্চ রাজধানীসহ চট্টগ্রামের হাটহাজারী ও ব্রাহ্মণবাড়িয়াতে তারা তা’ণ্ডব চালিয়েছে।

মোদির আগমনের খবর শুনে স্বাধীনতাবিরোধী গোষ্ঠীটি প্রথমে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশের মধ্যে তাদের কার্যক্রম সীমাবদ্ধ রাখলেও, হঠাৎ তা কেন সহিং’সতায় রূপ নিলো তার ব্যাখ্যা দিয়েছেন দেশের রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।

তাদের ভাষ্য, নিজেদের রাজনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে ষড়’যন্ত্রের নীল নকশা এঁকেছে দেশবিরোধী কু-চক্রি মহল। এতে হেফাজতসহ কয়েকটি গোষ্ঠীর যৌথ সমন্বয় রয়েছে। বিশেষ করে জামায়াত আগে থেকেই ভারত বিরোধী। পাশাপাশি নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরকালে যেহেতু বিএনপির সঙ্গে বৈঠক করবে না, সেহেতু তারাও এর পেছনে মদদ যুগিয়েছে।

একইসঙ্গে শাহ আহমদ শফীর মৃ’ত্যুর পর হেফাজত তাদের আদর্শ থেকে দূরে সরে ক্ষমতার দিকে ঝুঁকছে। আর তাদের সঙ্গে রয়েছে মৌলবাদী এবং যু’দ্ধাপরাধী এজেন্টগুলো। তারা দেশের বাইরে থেকে অর্থ ও মদদ দিচ্ছে। সবমিলিয়েই এই ষড়’যন্ত্রের অবতারণা।

রাজনৈতিক বিজ্ঞজনরা আরও বলছেন, হেফাজতকে ফ্রন্টলাইনে রেখে নেপথ্যে থেকে বিএনপি-জামায়াত সাধারণ বিক্ষোভকে সহিং’সতায় রূপ দিয়েছে। হেফাজত-নুরুর মতো পেইড এজেন্টরা এ কাজে তাদের সহায়তা করেছে। ছিলো শিবিরেরও বড় অংশগ্রহণ। আর লন্ডনে বসে এসব কিছুর কলকাঠি নাড়ছেন তারেক রহমান।

তিনি পাকিস্থান দূতাবাস ও জামায়াতের যৌথ অর্থায়নে এই সহিং’সতার মদদ যুগিয়েছেন। শেখ হাসিনা সরকারের সাথে বিজেপির সুসম্পর্কের কারণে ইতিপূর্বে বিএনপি নেতারা ভারতে গিয়ে নরেন্দ্র মোদির সাথে দেখা করতে চেয়েও দেখা পাননি। আর এটাই বিএনপিকে এই দেশবিরোধী খেলায় নামিয়েছে।

শেয়ার করুন !
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

এই ওয়েবসাইটের যাবতীয় লেখার বিষয়বস্তু, মতামত কিংবা মন্তব্য– লেখকের একান্তই নিজস্ব। somoyekhon.net-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এর মিল আছে, এমন সিদ্ধান্তে আসার কোনো যৌক্তিকতাই নেই। লেখকের মতামত, বক্তব্যের বিষয়বস্তু বা এর যথার্থতা নিয়ে somoyekhon.net আইনগত বা অন্য কোনো ধরনের কোনো প্রকার দায় বহন করে না।

Leave A Reply

error: Content is protected !!