বিদেশি ফান্ডের জন্য যা যা করছেন বাবুনগরী-মামুনুল গং

0

বিশেষ প্রতিবেদন:

নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের বিরোধীতা, সরকারের বিরু’দ্ধে কথায় কথায় চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেয়া- এসবের পেছনে কোনো আদর্শিক বিষয় নেই, আছে টাকার নেশা। হেফাজতের বেশ কয়েকজন আলেম বলেছেন, আমীর হবার পর জুনায়েদ বাবুনগরী টাকার জন্য পাগল হয়ে গেছেন। সরকারকে চাপ দিয়ে নগদ কিছু আদায় করে নিতে চাইছেন বাবুনগরী। আর সেই সাথে সরকারবিরোধী বিদেশি শক্তির ফান্ডিংয়ের টার্গেট তো রয়েছেই।

হেফাজতের একাধিক আলেম ও কওমী শিক্ষকের সাথে কথা বলে পাওয়া গেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, হেফাজতের অনেক নেতাই মনে করেন ২০১৩ সালের ৫ মে এর ঘটনার পর সরকারের সাথে আপোষ সমঝোতা করে আল্লামা শফী বৈষয়িকভাবে লাভবান হন। হেফাজতের একজন শীর্ষ নেতাও বলেছেন, সরকারের সাথে আহমদ শফীর গিভ এ্যান্ড টেকের বিষয়টি হেফাজতের ভেতর ছিলো ওপেন সিক্রেট।

হেফাজতের সাথে সরকারের সমঝোতায় আহমদ শফীই শুধু লাভবান হয়েছেন, এটা অনেকে মনে করেন। এ থেকেই জুনায়েদ বাবুনগরীর সঙ্গে আল্লামা শফীর দূরত্ব তৈরি হয়। বাবুনগরী অনেক হেফাজতের নেতাদের বলেছেন, আমি তো কিছুই পেলাম না।

আহমদ শফীর সঙ্গে দূরত্বের পর বাবুনগরী হেফাজতের সাংগঠনিক কাজে মনোনিবেশ করেন। এ সময় আহমদ শফী অসুস্থ থাকতেন প্রায়ই। ফলে হেফাজতের মূল কর্তৃত্ব চলে আসে বাবুনগরীর কাছে। শফীর মৃ’ত্যুর পর তাই জুনায়েদ বাবুনগরী আমীর হবার ক্ষেত্রে নিরঙ্কুশ সমর্থন পান। আমীর হয়ে তিনি সরকারের কাছ থেকে বড় কিছু আদায়ে অস্থির হয়ে ওঠেন।

এজন্যই বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ইস্যুকে সামনে আনেন বাবুনগরী। নারায়ণগঞ্জের হেফাজতের এক শীর্ষ নেতা বলেছেন, কওমী মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা অধিকাংশই হত দরিদ্র। হেফাজত সংগঠনের আড়ালে আসলে তাদের গোলামের মতো ব্যবহার করে। এই শিক্ষার্থীদের যা বলে এরা তাই করে। ফলে এদের সামনে রেখে সহজেই চাপ দেয়া যায়, তা’ণ্ডব চালানো যায়। এই সুযোগে নগদ লাভের আশায় বাবুনগরী একের পর এক কর্মসূচি দিচ্ছেন। যেন সরকার তার সঙ্গে নগদ লেনদেনে আসে।

একটি সূত্র বলছে, বাবুনগরী ভারতের প্রধানমন্ত্রীর বাংলাদেশ সফরের বিরোধীতাও করেছে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য। যেন সরকার তাকে কিছু উপঢৌকন দেয়। হেফাজত এবং হেফাজতের বাইরে আলেম সমাজের অনেকেই বলেছেন বাবুনগরী এবং মামুনুলের এসব কর্মসূচির পেছনে না আছে ইসলাম না আছে আদর্শ। টাকার জন্যই তারা এসব করছে। সরকারকে চাপ দিয়ে কিছু আদায় করতে তারা পবিত্র ধর্মকে ব্যবহার করছে।

বর্তমান সরকারের বিরোধীতাকারী একটা অংশ আছে বিদেশে। যারা বিদেশে বসে সামাজিক যোাগযোগ মাধ্যমের বিভিন্ন প্ল্যাটফরমে গুজব ও অপপ্রচার চালানোর কাজে ব্যস্ত। এদের একটাই লক্ষ্য- সরকার পরিবর্তন। আর এ লক্ষ্যের সাথে জড়িত রয়েছে পাকিস্থানপন্থী একটা চক্র। যাদের পেছনে ইন্ধন যোগাচ্ছে মুক্তিযুদ্ধে পরাজিত দেশটির দূতাবাস এবং নেপথ্যে রয়েছে দেশটির কু-খ্যাত গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই।

আর এই পুরো চক্রটির সমন্বয়ের দায়িত্বে আছে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত পলাতক চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তার সহযোগি হিবেবে রয়েছে সিআইএ’র ফান্ডিংয়ে চালানো পত্রিকা নেত্র নিউজের সম্পাদক তাসনিম খলিল, ড. কামাল হোসেনের জামাতা- যু’দ্ধাপরাধী জামায়াত নেতাদের লবিস্ট ডেভিড বার্গম্যান, রাজাকারপুত্র ইলিয়াস, বহিষ্কার হওয়া সেনা সদস্য শহীদ, একাত্তরে পাকিস্থানিদের দোসর কাজী আনোয়ারা মনসুরের উপযুক্ত পুত্র গুজব রটনাকারী ফটোগ্রাফার শহিদুল আলমসহ কয়েকজন।

এই পুরো চক্রটি ভাসছে বিদেশি অর্থের ওপর। দেশে সরকারবিরোধীতা করতে গিয়ে রাস্তায় নামা লোকজনের সংখ্যা অতি নগণ্য। আর এখানে ম্যানপাওয়ার হিসেবে খাটানো হচ্ছে পিতামাতা নেই, পিছুটান নেই এমন এতিম শিশু কিশোরদেরকে। যাদেরকে সামনে রেখে যাবতীয় না’শকতামূলক কর্মকান্ড চালানো যাবে কিন্তু শিশুরা সামনে থাকায় কার্যত কোনো ব্যবস্থাই নিতে পারবে না আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলো। ফলে নিজেদের এজেন্ডা বাস্তবায়নের কোনো সমস্যা হবে না।

দেশি-বিদেশি ফান্ডিংয়ের বিনিময়ে দেশজুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা লাখ লাখ কওমি মাদ্রাসায় পড়ুয়া শিশু কিশোরদেরকে ব্যবহার করছে হেফাজতে ইসলাম। আর এভাবেই দেশকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে একটি অস্থিতিশীল অবস্থার দিকে।

শেয়ার করুন !
  • 224
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

এই ওয়েবসাইটের যাবতীয় লেখার বিষয়বস্তু, মতামত কিংবা মন্তব্য– লেখকের একান্তই নিজস্ব। somoyekhon.net-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এর মিল আছে, এমন সিদ্ধান্তে আসার কোনো যৌক্তিকতাই নেই। লেখকের মতামত, বক্তব্যের বিষয়বস্তু বা এর যথার্থতা নিয়ে somoyekhon.net আইনগত বা অন্য কোনো ধরনের কোনো প্রকার দায় বহন করে না।

Leave A Reply

error: Content is protected !!