বিশেষ প্রতিবেদন:
স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও মুজিববর্ষের অনুষ্ঠানে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর বাংলাদেশ সফরকে কেন্দ্র করে মৌলবাদী ও কিছু সরকারবিরোধীরা মিলে দেশের পরিস্থিতি উত্তপ্ত করার চেষ্টা করেছে গত কয়েকদিন ধরে। তবে এই হরতাল এবং পুলিশের সঙ্গে সহিং’সতার মধ্যে একটি বিষয় পরিস্কার, এই কর্মসূচি শুধুমাত্র হেফাজত নয় নেপথ্যে সরকারবিরোধী সকল দলের কর্মীদের অংশগ্রহণ ছিলো।
একটা বিষয় বিশেষ করে লক্ষ্যণীয়, সেটা হচ্ছে নুরুর নেতৃত্বে সহিং’স কর্মকাণ্ডে শিবির কর্মীদের উপস্থিতি। নুরুর সঙ্গে শিবিরের যোগসাজস অনেক পুরনো। কোটা আন্দোলনের শুরু থেকেই নুরুর চারপাশে যাদের দেখা গেছে, বেশিরভাগই শিবিরের কর্মী। এমনকি তার দোসর ফারুক, রাশেদদের ফেসবুক আইডির বহু পুরনো পোস্টও ভাইরাল হয়েীছল সে সময়।
তাতে দেখা গেছে, সেসব পোস্টে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী বক্তব্য, যু’দ্ধাপরাধীদের বিচারের বিরোধীতাকারী পোস্ট এবং জামায়াত নেতাদের বিভিন্ন পোস্ট বা বক্তব্য শেয়ার করা হতো। যা পরবর্তীতে সমালোচনা শুরু হলে তারা সরিয়ে ফেলে।
কোটা সংস্কারের পরবর্তীতে নুরু সাধারণ ছাত্র অধিকার পরিষদ নামের যে সংগঠনটি শুরু করেন, সেখানে শিবিরের একটা বড় ধরনের অংশগ্রহণ রয়েছে। আর এর আরেকটি উদাহরণ হচ্ছে, কয়েকদিন আগে ঢাকায় ভারতের প্রধানমন্ত্রীর বাংলাদেশ সফরের বিরোধীতায় কর্মসূচি দিয়েছিলো নুরু। সেখানে এক পুলিশ সদস্যকে প্র’হারের ছবি ও ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
সেখানে দেখা যায়, কয়েকজন মিলে এক পুলিশ সদস্যকে প্র’হার করছে। যদিও পরে বিভিন্ন গণমাধ্যম হাম’লাকারী ওই ব্যক্তিদের ছবিসহ পরিচয় প্রকাশ করেছে। সেখানে বলা হয়েছে, হাম’লাকারীদের অধিকাংশই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিবির কর্মী এবং এরা নুরুর দেয়া কর্মসূচিতে যোগ দিতে কয়েকদিন আগেই ঢাকায় এসেছে। তার মানে একটা বিষয় পরিস্কার, নুরু এবং শিবির একই এজেন্ডা বাস্তবায়ন করছে।
নুরু তার বক্তব্যে মাঝে মাঝেই বলেন, এই সরকার হটাতে কঠোর আন্দোলন করতে হবে, সরকারকে ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য করতে মাঠে নামতে হবে। নুরুর এই বক্তব্যে কিন্তু আন্দোলন, সংগ্রাম এবং সহিং’সতার বার্তা রয়েছে। বাংলাদেশে যে কোনো আন্দোলনকে সহিং’স রূপ দিতে শিবিরের চেয়ে দক্ষ কাউকে পাওয়া কঠিন।
অতীতেও দেখা গেছে কোটা সংস্কার আন্দোলন, নিরাপদ সড়ক আন্দোলনসহ ছাত্রদের অনেক যৌক্তিক আন্দোলনকে সরকারবিরোধীতায় রূপ দিতে গিয়ে শেষ পর্যন্ত মূল স্পিরিটের বারোটা বাজিয়েছে আন্তর্জাতিকভাবে সন্ত্রা’সী সংগঠন হিসেবে স্বীকৃত ইসলামি ছাত্র শিবির।
সরকারবিরোধী কর্মকান্ড পরিচালনার জন্য নুরু শিবির কর্মীদের দিয়ে সহিং’সতা ছড়িয়ে রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের নতুন কৌশল নিয়েছে।
অন্যদিকে শিবিরের যেহেতু এখন কোনো রাজনৈতিক প্লাটফর্ম নেই, তাই তারা নুরুর ব্যানার ব্যবহার করে মাঠে নেমেছে। এ ছাড়া এদের দুই পক্ষেরই লক্ষ্য যেহেতু সরকারের পতন, উভয় পক্ষেরই ভাষা ও কর্মকাণ্ড মৌলবাদী ঘরানার, তাই তারা আমেদুধে মিলেমিশে একাকার হয়ে গেছে।