সময় এখন ডেস্ক:
হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের নায়েবে আমির ও নারায়ণগঞ্জ জেলা কমিটির আমির পদ থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন মাওলানা আব্দুল আউয়াল।
হেফাজতে ইসলামের ডাকা সকাল-সন্ধ্যা হরতালের একদিন পর সোমবার (২৯ মার্চ) রাতে শবে বরাতের রাতে বয়ান করার সময় তিনি এই ঘোষণা দেন। ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত হতে চাইলে মাওলানা আব্দুল আওয়াল বলেন, আমি বিস্তারিত একটি ভিডিও বার্তায় তুলে ধরেছি। সেখান থেকে আপনার সব প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যাবেন।
সেই ভিডিও বার্তায় আব্দুল আওয়ালকে বলতে দেখা যায়, অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের নেতৃত্বে হরতালের দিন বিজিবি, র্যাব, পুলিশ আর আর্মি আমাকে মসজিদে নজরদারিতে রাখেন। তারা আমাকে স্পষ্ট করে জানিয়েছেন, ওপর থেকে সরাসরি অ্যাকশেনে যাওয়ার অর্ডার রয়েছে। তাই আমি মিছিল নিয়ে হরতাল পালন করতে পারিনি।
কিন্তু হেফাজতের একদল অতি উৎসাহী লোক আমাকে বুঝতে চাইছে না, অথচ সেদিন যদি আমি প্রশাসনকে উ’পেক্ষা করে হরতালের সমর্থনে বের হতাম, তাহলে হয়তো মসজিদে নামাজ পড়ার অবস্থা থাকতো না। মানুষ মা’রা যেতে পারত।
আব্দুল আওয়ালকে আরও বলতে দেখা যায়, তখন কিন্তু আপনারাই বলতেন, মায়ের বুক খালি করে তোমাকে কে নেতৃত্ব দিতে বলেছে? তাই আমি এদিকেও যেতে পারিনি, ওই দিকেও যেতে পারিনি। এখন আমার একটাই রাস্তা। আমি আমার দায়িত্ব ছেড়ে দিলাম। আমি হেফাজত ইসলামের নেতৃত্বে আর থাকবো না।
আমার আমির পদ দরকার নাই। আমার পক্ষ থেকে আর কোনোদিন ঘোষণা আসবে না। তোমরা যারা অতি উৎসাহীওয়ালা আছো, তোমরা বাবা হেফাজত ইসলাম করো। আমার বয়স হয়েছে, বেশিক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকতে পারি না, কথা বলতে পারি না।
তিনি আরও বলেন, সোমবার দোয়া মহাফিলের কথা ছিল ডিআইটি মসজিদে। কিন্তু তারা আমাকে সাইড করে দিয়ে দেওভোগ মাদ্রাসা মসজিদে দোয়া মাহফিল করতে বলেছেন।
তারা বলেছেন, আমার মতো নেতার প্রয়োজন নেই। তারা যেহেতু আমাকে সাইড করে দিয়েছে তাই আমি সাংবাদিক সম্মেলন করে হেফাজতের আমিরের পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে দিবো। আমি মুসল্লিদের সাক্ষী রেখে বলছি, আমি হেফাজতের আমিরের পদে থাকবো না।
তবে হেফাজতে ইসলামের অপর একটি সূত্র জানায়, হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল আহ্বান করা হয়। সেখানে জেলার আমির এককভাবে হরতালের সমর্থনে মিছিল মিটিং স্থগিত করতে পারেন না।
কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তের বাইরে এসে তিনি যা করেছেন তা হেফাজতের কার্যক্রমের সঙ্গে যায় না। তাকে দল থেকে বহিষ্কারের জন্য কেন্দ্রের কাছে সুপারিশ করা হবে।
প্রসঙ্গত, গত রবিবার (২৮ মার্চ) হেফাজতের ডাকা হরতালে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সাইনবোর্ড থেকে কাচঁপুর সেতু পর্যন্ত এলাকায় ৬টি কাভার্ড ভ্যান, ৮টি ট্রাক, ১টি প্রাইভেট কারসহ মোট ১৭টি গাড়ি পোড়ানো হয়েছে। এ সময় ভা’ঙচুর করা হয়েছে গণমাধ্যমের গাড়ি, অ্যাম্বুলেন্সসহ শতাধিক যানবাহন।
কমপক্ষে ১০ জন সাংবাদিককে গুরুতর আহত করা হয়। তাদের মোবাইল ফোন, মানিব্যাগ, ক্যামেরা নিয়ে যায় হেফাজত কর্মীরা। এ সময় পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশ দেড় শতাধিক টিয়ারশেল এবং ৪ হাজার রাউন্ড ব্ল্যাংক ফা’য়ার করে।
ভিডিও: