ব্রাহ্মণবাড়িয়া সংবাদদাতা:
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ার আকাশে ক্যামেরাযুক্ত অবৈধ ড্রোন উড়িয়ে ছবি ও ভিডিও ধারণ করার ঘটনা জানা গেছে। পূর্বানুমতি ছাড়া ওই ড্রোন দিয়ে ছবি ও ভিডিও ধারণ করা হচ্ছিল কিনা, তা সঠিক জবাব দিতে পারেননি স্থানীয় প্রশাসন। তবে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ড্রোন চালানোর জন্য যে অনুমতি নিতে হয়, জেলা প্রশাসকের কার্যালয় এবং বেবিচক (বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ) থেকে তেমন কোনো অনুমতি নেয়া হয়নি।
সোমবার দুপুরে (১৪ জানুয়ারি) আখাউড়া উপজেলার মোগড়া ইউনিয়নের গঙ্গাসাগর রেলওয়ে ষ্টেশন এলাকার আকাশে উড্ডয়নে ছবি ও ভিডিও ধারণ করা হচ্ছে- এমন খবর পেয়ে আখাউড়া রেলওয়ে পুলিশের একটি দল পৌছার আগেই কালো একটি জিপ গাড়িতে চড়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে ড্রোন ক্যামেরা ব্যবহারকারী দলটি।
তবে গঙ্গাসাগর রেলওয়ে ষ্টেশন মাষ্টার ও স্থানীয়দের ধারণা, ড্রোনটি অবাঙালি কেউ ব্যবহার করেছে। তারা জানায়, তারা একে অপরের সাথে উর্দু ভাষায় কথা বলছিলো।
গঙ্গাসাগর রেলওয়ে ষ্টেশন মাস্টার মো. আসাদুজ্জামানের বরাত দিয়ে আখাউড়া রেলওয়ে থানার ওসি শ্যামল কান্তি দাস জানান, বেলা সাড়ে ১১টার দিকে আখাউড়া রেলসেকশনের গঙ্গাসাগর রেলওয়ে ষ্টেশন এলাকায় নির্মাণাধিন ‘আখাউড়া-আগরতলা’ রেলপথ কাজের এলাকাসহ আশপাশের আকাশে ড্রোন সদৃশ একটি যন্ত্র ভেসে বেড়াতে দেখেন স্থানীয়রা। এসময় বিষয়টি আখাউড়া রেলওয়ে থানায় জানানো হয়। খবর পেয়ে (এএসআই) মো. আব্দুর রহমানকে ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়।
জানা যায়, পুলিশ গঙ্গাসাগর রেলওয়ে ষ্টেশনে পৌছার আগেই ড্রোন ব্যাবহারকারীরা এলাকা ত্যাগ করেন। স্থানীয়দের কয়েকজন পুলিশকে জানায়, তারা ধারণা করছিলেন আখাউড়া-আগরতলা রেলপথ নির্মাণ কাজের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ভারতীয় কর্তৃপক্ষের কেউ হয়ত ড্রোন ক্যামেরা ব্যবহার করে ছবি ও ভিডিও ধারণ করছে। তবে তাদের ভুল ভাঙে যখন ড্রোন নিয়ন্ত্রকরা নিজেদের মধ্যে উর্দু ভাষায় কথা বলছিল। পাকিস্থানি নাশকতাকারী ধারনা করে তখনই তারা থানায় খবর দেয়।
প্রসঙ্গত, তবে ড্রোনের মাধ্যমে ছবি ও ভিডিও ধারণ করার ক্ষেত্রে অবশ্যই উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের পূর্বানুমতি লাগে। সেক্ষেত্রে তাদের অনুমতি ছিল কিনা থানা তাৎক্ষণিক জানাতে পারেনি। যদিও অনুমতি যে নেয়া হয়নি, সেটা পরে জানা গেছে।
স্থানীয়রা আরও জানায়, ড্রোন ব্যবহারকারী উর্দু ভাষীরা পুলিশে খবর দেয়ার বিষয়টি টের পেয়ে যে কালো রঙের জিপ গাড়িতে চড়ে এলাকায় এসেছিল, সেটি নিয়ে দ্রুত পালিয়ে যায়। তাদের গাড়িতে রেল মন্ত্রণালয়ের স্টিকার বা সরকারি গাড়ির কোনো চিহ্ন ছিল না।
এ বিষয়ে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ২৫ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্ণেল মুহাম্মদ গোলাম কবির বলেন, এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। ড্রোন ব্যবহার করে ছবি বা ভিডিও ধারণ করতে হলে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের পূর্বানুমতির প্রয়োজন লাগে। আখাউড়া গঙ্গাসাগর এলাকায় কে ড্রোন ব্যবহার করেছে তা আমার জানা নেই। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে জানার চেষ্টা করছি বলে তিনি জানিয়েছেন।