বিশেষ প্রতিবেদন:
হেফাজতে ইসলামের তা’ণ্ডবের পর দেশের মাদ্রাসাগুলোতে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। মাদ্রাসাগুলোতে অধিকাংশ দরিদ্র-এতিম শিক্ষার্থীরা লেখাপড়া করে। সেখানে বিনামূল্যে কওমী শিক্ষা দেয়া হয় এবং এখানেই তাদের আবাসন এবং এখানেই তাদের খাবারের ব্যবস্থা করা হয়। আর এই সুযোগটাই কাজে লাগান হেফাজতের নেতারা। তারা কোমলমতি মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদেরকে কাজে লাগান নিজেদের রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের জন্য।
কিন্তু এই ঘটনার পর মাদ্রাসার এই শিক্ষার্থীরাই হেফাজতের নেতৃত্বের ওপর ক্ষোভ ও অনাস্থা জানিয়েছে। হাটহাজারী মাদ্রাসায় গতকাল শিক্ষার্থীরা আলাদাভাবে সমাবেশ করেছেন এবং এই ঘটনায় যেসব শিক্ষার্থীদের জীবন গেছে এজন্য নেতারা কী করেছেন সেই কৈফিয়ত তলব করেছেন।
প্রাপ্ত খবরে জানা গেছে, হাটহাজারী মাদ্রাসার ওপর এখন সেখানকার শিক্ষকদের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। সেখানে শিক্ষকতা করেন হেফাজতের আমীর জুনায়েদ বাবুনগরী। তিনি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে দেখা করতে চাইলে তারা কথা বলছে না।
ইতিমধ্যে শিক্ষামন্ত্রী ঘোষণা করেছেন, সব শিক্ষপ্রতিষ্ঠান বন্ধের আওতায় থাকবে। মাদ্রাসাগুলোকে বন্ধ করা হয়েছে। যদিও নির্দেশনা এখন পর্যন্ত অধিকাংশ মাদ্রাসায় কার্যকর হয়নি। ধীরে ধীরে মাদ্রাসাগুলো বন্ধ করা হবে করোনার জন্য। ফলে শিক্ষার্থীরা মনে করছেন বাবুনগরী ও মামুনুল হকের উচ্চাভিলাষ, দূরভিসন্ধি এবং হঠকারিতার কারণে মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের অ’নিশ্চয়তার মুখে পড়তে হচ্ছে।
তাছাড়া মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা বলছেন, বিভিন্ন সময় তাদের জীবন দিতে হচ্ছে অথচ এই ত্যাগের বিনিময়ে হেফাজতের নেতারা নানা রকম সুযোগ সুবিধা সরকারের কাছ থেকে হাতিয়ে নিচ্ছে।
একই অবস্থা দেখা যাচ্ছে ব্রাক্ষণবাড়িয়াতেও। সেখানে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মাদ্রাসার পরিচালক ও শিক্ষকদের প্রকাশ্যে দ্ব’ন্দ্বের খবর পাওয়া যাচ্ছে। শিক্ষকরাই নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরে কিছু একটা করে দেখানোর জন্য নির্দেশনা দিয়েছিলেন বলে একাধিক মাদ্রাসার ছাত্ররা জানিয়েছে। কিন্তু যখন শিক্ষার্থীরা বের হয়, তখন তাদের আর নিয়ন্ত্রণ করা যায়নি।
সূত্র বলছে, হেফাজত নেতারা ২৫ ও ২৬ মার্চ দুইদিন মাদ্রাসাগুলোতে আলাদা আলাদাভাবে শিক্ষার্থীদের সাথে বৈঠক করেন এবং সেখানে তারা ঘোষণা করেন, নরেন্দ্র মোদির ঢাকা সফরের বিরু’দ্ধে তাদের কিছু একটা করতে হবে। আর তাদের নির্দেশেই মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা বের হন।
একাধিক মাদ্রাসার শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মাদ্রাসাগুলো সুনিয়ন্ত্রিত স্বৈ’রাচারি কায়দায় চলে। পরিচালকদের অনুমতি ছাড়া শিক্ষার্থীরা এক গ্লাস পানিও খেতে পারে না। সেই অবস্থায় শিক্ষার্থীদেরকে হা’তিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে হেফাজতের নেতারা।
এভাবে বারবার তাদেরকে ব্যবহার করা নিয়ে এখন শিক্ষার্থীরাই ক্ষুব্ধ হয়ে উঠছে বাবুনগরী-মামুনুলসহ অন্যান্য নেতাদের বিরু’দ্ধে। এর ফলে হেফাজত নেতাদের বিরু’দ্ধে মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সম্ভাবনা দেখছেন বিভিন্ন মহল। বাংলাইনসাইডার।
1.2K