সময় এখন ডেস্ক:
জাতীয় সংসদে শোক প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এই আলোচনায় বক্তব্য রেখেছেন প্রধানমন্ত্রী এবং সংসদ নেতা শেখ হাসিনা। তিনি তাঁর ভাষণে যে সমস্ত ব্যক্তি গত অধিবেশন থেকে বর্তমান পর্যন্ত মা’রা গেছেন তাদের উদ্দেশে শোক প্রস্তাবের ওপর বক্তব্য রাখেন।
বক্তব্যের এক পর্যায়ে ব্যরিস্টার মওদুদ আহমদের কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, ব্যরিস্টার মওদুদ আহমদ নিঃসন্দেহে মেধাবী ছিলেন। কিন্তু মেধাটা যদি তিনি দেশের স্বার্থে কাজে লাগাতেন তাহলে ভালো হতো।
স্মৃতিচারণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মওদুদ আহমদ ১৯৬৯ সালে আগরতলা ষড়’যন্ত্র মামলার সময় ড. কামাল হোসেনের সহযোগী ছিলেন। কিন্তু তিনি অফিসিয়াল আইনজীবী ছিলেন না।
মওদুদ আহমদের দল-বদলের ফিরিস্তি দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মওদুদ আহমদ ১৯৭০ সালে আওয়ামী লীগে ছিলেন, ৭৫ এর পরে জিয়াউর রহমানের সঙ্গে বিএনপিতে যোগ দেন। এরপর এরশাদের সময় সাজাপ্রাপ্ত হলেও এরশাদ তার সাজা মওকুফ করে তাকে জাতীয় পার্টিতে নিয়েছিলেন আবার তিনি বিএনপিতে আসেন।
মওদুদ আহমদের বই সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার বইতে অনেক রঙ মেশানো কথাবার্তাও আছে। তবে তিনি একজন মেধাবী ছিলেন এ নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই।
প্রধানমন্ত্রী আগরতলা ষড়’যন্ত্র মামলার স্মৃতিচারণ করে বলেন, সে সময় আমার মা জানিয়ে দিলেন, বঙ্গবন্ধু প্যারোলে মুক্ত হয়ে বৈঠকে যোগ দেবেন না। তখন এই বার্তাটি আমি আমার বাবার কাছে দিতে গেলে সে সময় তাজউদ্দীন আহমদ, ড. কামাল, ব্যারিস্টার আমিরুল ইসলাম, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদসহ অনেকেই ছিলেন।
পরে আমি বাবাকে যখন মায়ের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দেই, তখন আমার বাবাও প্যারোলে মুক্ত হয়ে আলোচনার বিপক্ষে ছিলেন।
এরপর আমি যখন বাসায় ফিরে আসি, তখন বারান্দায় দাঁড়িয়ে ছিলেন মওদুদ আহমদ এবং ব্যারিস্টার আমিরুল ইসলাম। আমার কাছে এসে ব্যারিস্টার আমিরুল ইসলাম কথাটি বলেছিলেন এবং মওদুদ আহমদ কথায় সায় দিয়ে বলেছিলেন, ‘তুমি কেমন মেয়ে যে তোমার বাবার মুক্তি চাও না’।
আবেগতাড়িত কণ্ঠে প্রধানমন্ত্রী বলেন- আমি জবাব দিয়েছিলাম, ‘আমার বাবার মুক্তি আমি চাই এবং সসম্মানে সম্পূর্ণ মুক্ত হয়ে ফিরে আসবেন সেটাই আমি চাই’।
এই শোক প্রস্তাব আলোচনায় তিনি উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম এবং মাহমুদুর সামাদ চৌধুরীর কথাও স্মরণ করেন।