অর্থনীতি ডেস্ক:
ভারত মদ ও তামাকজাত দ্রব্য বাদে সব ধরনের পণ্যে বাংলাদেশকে কর সুবিধা দিচ্ছে বলে সংসদকে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।
বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় জাতীয় সংসদে অধিবেশন শুরু হলে আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য আ কা ম সরোয়ার জাহানের লিখিত প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী এ তথ্য জানান।
ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য ঘা’টতি কমাতে সরকার নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে উল্লেখ করে বাণিজ্যমন্ত্রী জানান, মদ ও তামাকজাত দ্রব্য বাদে সব পণ্যে দেশটি বাংলাদেশকে কর সুবিধা দিচ্ছে।
মন্ত্রী জানান, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে একটি দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য চুক্তি ১৯৭২ সালে সই হয়। এটি আরও যুগোপযোগী করে সংশোধনের মাধ্যমে ২০১৫ সালে নবায়ন করা হয়েছে। ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য ঘা’টতি কমানোর লক্ষ্যে একটি কম্প্রিহেনসিভ ইকোনোমিক পার্টনারশিপ এগ্রিমেন্ট (সিইপিএ) সম্পাদনের পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে।
এ লক্ষ্যে যৌথ সম্ভাব্যতা সমীক্ষা প্রণয়ণ কার্যক্রম চলমান রয়েছে। বাংলাদেশ দক্ষিণ এশীয় অঞ্চলের জন্য মুক্তবাণিজ্য চুক্তির (এসএএফটিএ) আওতায় ভারতে তামাকজাত দ্রব্য ও মদ জাতীয় পণ্য ছাড়া সব পণ্যে শুল্কমুক্ত সুবিধা পাচ্ছে।
দুই দেশের বাণিজ্য চিত্র তুলে ধরে মন্ত্রী জানান, ২০১৯-২০ অর্থবছরে ভারত থেকে বাংলাদেশে আমদানির পরিমাণ ছিল ৪৮ হাজার ৯৪৭ দশমিক ৭১ কোটি টাকা এবং ভারতে বাংলাদেশের রপ্তানির পরিমাণ ছিল ৯ হাজার ২৯৫ দশমিক ১১ কোটি টাকা। ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য ঘা’টতির পরিমাণ ছিল ৩৯ হাজার ৬৫২ দশমিক ৬০ কোটি টাকা।
ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য ঘা’টতি দূরীকরণে নেয়া সরকারের পদক্ষেপ তুলে ধরে বাণিজ্যমন্ত্রী জানান, বিভিন্ন আঞ্চলিক জোট ও দ্বিপক্ষীয় চুক্তির আওতায় রপ্তানি বাড়াতে বাংলাদেশের সব রপ্তানি পণ্যের ভারতের বাজারে বিনা শুল্কে প্রবেশের পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের প্রচেষ্টার ফলে তামাকজাত দ্রব্য, মদ জাতীয় ২৫টি পণ্য ছাড়া বাংলাদেশের সব পণ্য এসএএফটিএর আওতায় ভারতে শুল্কমুক্ত প্রবেশের সুবিধা লাভ করেছে।
তিনি সংসদকে জানান, ভারতে বাংলাদেশি পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে অশুল্ক বাধাগুলো দূর করার লক্ষ্যে দুই দেশের বাণিজ্যমন্ত্রী, বাণিজ্য সচিব এবং ওয়ার্কিং গ্রুপ পর্যায়ে দ্বিপক্ষীয় সভা হচ্ছে।
এ ছাড়া ভারতের সঙ্গে সীমান্ত বাণিজ্য বাড়াতে চারটি বর্ডার হাট স্থাপন ও কার্যকর করা হয়েছে। আরও ১২টি বর্ডার হাট স্থাপনের প্রক্রিয়া চলছে।
মন্ত্রী জানান, বাংলাদেশ-ভারত দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য চুক্তি যুগোপযোগী করার লক্ষ্যে ২০১৫ সালের ৬ জুন তৃতীয় দেশে পণ্য পরিবহনের সুবিধায় রেখে চুক্তি নবায়ন করা হয়েছে।
বাংলাদেশ এবং ভারতের মধ্যে বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক আরও বাড়াতে ভারতের সঙ্গে কম্প্রিহেনসিভ ইকোনোমিক পার্টনারশিপ এগ্রিমেন্ট স্বাক্ষর হয়েছে। স্থল বন্দরের মাধ্যমে পণ্য পরিবহনের পাশাপাশি রেলপথে পণ্য পরিবহনে সহায়তা বৃদ্ধি এবং তার ক্ষেত্র সম্প্রসারণে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।