সময় এখন ডেস্ক:
হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হককে এক বেগানা নারীসহ নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ পৌরসভার বিলাসবহুল রয়েল রিসোর্ট হোটেলে আপত্তিকর অবস্থায় ধরা পড়ার পর থেকে একে একে বেরিয়ে আসছে হতবাক করে দেয়া সব তথ্য উপাত্ত, এমনকি প্রকাশিত হচ্ছে এমন সব ফোনালাপ ও ভিডিও, যা সাধারণ ধর্মপ্রাণ মানুষকে প্রশ্নের মুখোমুখি দাঁড় করিয়েছে, এতদিন তারা কাদের মুখে ইসলামের কথা শুনে আসছিলেন!
এবার গণমাধ্যমের হাতে এলো মামুনুল হকের সাথে থাকা সেই নারী- জান্নাত আরা ঝর্না এবং শহীদুল ইসলাম দম্পতির বড় ছেল আব্দুর রহমানের একটি ভিডিও বার্তা। ১৭ বছর বয়সী এই তরুণ মামুনুল হকের ভ’ণ্ডামির মুখোশ খুলে দিয়েছেন জনসম্মুখে।
ভিডিও বার্তায় তিনি বলেন-
হ্যাঁ, আমি তো অলরেডি বড় হয়ে গেছি। অনেক কিছু শিখছি, অনেক কিছু জানছি। একটু ম্যাচিওরড একটা ভাব আইছে। আমি কিছুটা সহ্য করে নিতে পারি। কিন্তু আমার তো একটা ছোটভাই আছে। ১৩-১৪ বছর বয়স। কেবলই উঠতি বয়স। এ সময় মানুষের কত কথা শোনা লাগতিছে। সমাজের সামনে সে মুখ দেখাইতে পারতেছে না।
আমার ছোট ভাইটা (তামীম) কালকে রাতে, কাল (৩ এপ্রিল) যখন এ ঘটনাটা ঘটলো, আমি কোনোদিন দেখি নাই সে রাত ৩টা-৪টা পর্যন্ত জাইগা রইছে। কাইলকে তার চোখে কোনো ঘুমই নাই। টোটালি ওইটা নিয়ে ও মনে হচ্ছে মেন্টালি শকড। শক খাইছে। ও বাসা থেকে বেরোয় গেছে- যে আমি বাসায় থাকলে কী উল্টাপাল্টা করব, আমি নিজেও জানি না। এ কারণেই বেরোয় গেছে।
আরও বলতে হয়, এটা আমি বলব যে আমার বাবার কর্মফল। আমার বাবা মানুষকে অন্ধের মত বিশ্বাস করে, ভালোবাসে। ওই লোকটা (মামুনুল হক) কিছুদিন আগে মোংলার একটা মাহফিল ছিল। সেখানে পুলিশ তারে মাহফিল করতে দেবে না, সে একটা জায়গায় লুকাইছে। আমার বাবা সেটা দেখে এসে কীভাবে যে কানছে!
তার আগে আমি বিষয়টা জানছি যে, আমার মায়ের সাথে তার একটা সম্পর্ক আছে। আমি তখন- আমি তখন হাসতেছিলাম যে, এই লোকটা (বাবা) তার (মামুনুল) জন্য পা’গলের মত কানতেছে, এভাবে অঝোর ধারায় কানতেছে, আর ওই লোকটা (মামুনুল) এই লোকটার (বাবা) সাথে বেইমানি করতেছে!
তারপরে ওনাকে (মামুনুল) যখন জেলে (থানায়) নিলো, তখন আমার বাবা বলেছিল পুলিশের থানার ওসি কামরুজ্জামানরে, যে- তুমি আমাকে রাইখে ওই লোকরে (মামুনুল) ছাইড়ে দাও। কতটা ভালোবাসলে মানুষ এই কথাটা বলতে পারে! আর সেই লোকটা এভাবে গাদ্দারি করল!
আরও আগের ঘটনা, যখন ডিভোর্স হয়নি, আমি সে সময় অনেকটা ছোট, আমার ছোটভাই তখন আরও অনেকটা ছোট, ও দুগ্ধপোষ্য শিশু ছিল। তখন আমার বাবা একবার বাসায় ছিলেন না, তখন শুধু আমি ছিলাম। আমি ঘুমায় ছিলাম। তখন আমার মা আমার ছোটভাইকে দুগ্ধপান করাচ্ছিলেন। তখন উনি (মামুনুল) আমার মায়ের রুমে হুট করে ঢুকে যায় একটা কু-প্রস্তাব দিয়েছিল।
কিন্তু আমার মা সেটা প্র’ত্যাখ্যান করেছিল- না, এটা তো সম্ভব না, আপনি তো তাকে ঠকাচ্ছেন, আপনার কাছের বন্ধুকে (আব্দুর রহমানের বাবা)। সে (মামুনুল) তখন ফিরে এসেছিল। কিন্তু তখন থেকেই তার মনের ভেতর একটা কা’মুকভাব ঢুকে গেছিল। সে লোভ সামলাইতে পারতেছিল না। সে সব কিছুর জন্য সুযোগের অপেক্ষায় ছিল। কিন্তু এত তাড়াতাড়ি হয়ে যাবে, সে এটা বুঝতে পারেনি।
যখনই সে সুযোগ পাইছে, এনাদের (বাবা-মা) মধ্যে ডিস্ট্যান্স বাড়িয়ে দিছে। অ’বিশ্বাস- স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝ’গড়া তো হবেই। সে (মামুনুল) তখনই নক করছে। তখনই দুইজনের মধ্যে আরও ডিস্ট্যান্স বাড়িয়ে দিছে।
এইভাবে করে সে একটা পরিবারের খুশি, ভালোবাসা, একটা পরিবারের মধ্যে যে মিলমিশ, একটা সম্পর্ক- পুরোপুরি সে (মামুনুল) ধ্বং’স করে দিছে। আরও যে এভাবে কত মানুষের পরিবারের কত ভালোবাসা যে সে ধ্বং’স করছে, এর কোনো ঠিক নাই।
এখানে আমি আশা করব, আমি বাংলাদেশের মানুষের কাছে আশা করব, এর যেন সঠিক বিচার হয়। আপনারা কারো অন্ধভক্ত হইয়েন না। কাউকে অন্ধভাবে বিশ্বাস কইরেন না। কারণ, সবারই মুখোশের আড়ালে একটা চেহারা থাকে।
এই লোকটা (মামুনুল) একেবারে আলেম নামধারী এক মুখোশধারী একটা জা’নোয়ার। এর মধ্যে কোনো মনুষ্যত্ব নাই। এ সুযোগের অপেক্ষায় থাকে সব সময়। কাকে কীভাবে দুর্বল করা যায়। আমার আর কিছু বলার মত ভাষা আর নাই।
ভিডিও: