সাধারণের বিশ্বাসকে পুঁজি করে ধর্ম ব্যবসায়ীদের অধর্ম ও পাপাচার

0

মুক্তমঞ্চ ডেস্ক:

শাহজাদা সেলিম আদতে নারীলো’লুপ ছিলেন! হিন্দি সিনেমা তারে অমর করছে আনারকলির সুবাদে। বাবা সম্রাট আকবরের হেরেমের এক নর্তকীর প্রেমে বুঁদ হইয়া বাবার বিরু’দ্ধেই বিদ্রোহ করছিলেন। সেই অমর প্রেমের পরিসমাপ্তি ঘটে আনারকলির জীবন্ত সমাধিতে।

তো সেলিম এরপর কী করলেন? না, রোমিওর মতো সুই’সাইড করেন নাই, মজনুর মতো পা’গলও হইয়া যান নাই। তিনি ভিন্ন নারীতে মনোযোগ দিলেন। নারীর নাম মেহরুন্নিসা। আকবরের উজিরের মেয়ে, একইসঙ্গে প্রবল বিক্রমশালী যো’দ্ধা শের আফগানের স্ত্রী।

৩ বছর ঘুরলেন সেলিম, এর মধ্যে আকবর মা’রা গেছেন, তিনি সম্রাট হইছেন, নাম নিছেন জাহাঙ্গীর। শের আফগান তখন বিহারের গভর্নর। তার বিরু’দ্ধে বিদ্রোহের অভিযোগ আনলেন জাহাঙ্গীর। অন্য ভার্সনে বিদ্রোহ দমনে পাঠাইলেন। গুপ্তহ’ত্যা কিংবা যেভাবেই হোক শের আফগান মা’রা গেলেন। জাহাঙ্গীরের হেরেমে ঠাই হইলো মেহরুন্নিসার। জাহাঙ্গীরের ২০তম স্ত্রী। পরবর্তীতে প্রবল প্রতাপশালী সেই নুরজাহান মোগল সাম্রাজ্য শাসন করছেন।

তো ইতিহাসে এমন পরস্ত্রীকাতরতার নজির ভুরি ভুরি। ছলে বলে কৌশলে অন্যের স্ত্রীকে পটানো কখনও আলোচ্য না; যদি না ঘটনার নায়ক আলোচিত কোনো ব্যক্তি হন। সাড়া ফেলে দেওয়া মানবিক বিয়ের পেছনের গল্পটা অত্যন্ত অ-মানবিক।

আজকে আমরা ১৭ বছরের এক সদ্য তরুণের মুখে শুনলাম তার মায়ের সি’ডিউস হওয়ার কাহিনী। কতটা কষ্ট নিয়ে তারে কথাগুলা লাইভে বলতে হইছে। এরা পর্দা পর্দা বলতে মুখে ফেনা তুলে ফেলে। রক্ষণশীল একটা পরিবারের পর্দা উন্মোচন করতেও তাদের সময় লাগে না। তখন ধর্ম অদৃশ্য হইয়া যায়।

অন্ধভক্ত, যে জানহাজির করে সেবা করছে, তার বউরে পটাইলা। ডিভোর্স করাইলা। এনজিওর টাকায় ফ্লাট কিন্যা সেখানে রাখলা। বিদেশ থিকা কোটি কোটি টাকা আনলা ইসলামের সেবার কথা বইলা। সেই টাকায় নিজের লা’ম্পট্য উদযাপনে ব্যয় করলা।

ধরা পইড়া বললা বিয়ে করছো, অথচ প্রথম স্ত্রী জানে না। বাংলাদেশের আইন মাইনা তার অনুমতি নেয়া হইলো না। র’ক্ষিতার মতো যারে রাখলা, তারে ম্যাসাজ পার্লারে কাজ করতে হয় বাচ্চাদের খরচ পাঠাইতে। মেয়ের বাবা মাও জানে না তুমি তার স্বামী! রিসোর্টেও স্ত্রীর পরিচয় দিলা না, রেজিস্টারে নাম লেখলা প্রথম বউর। যাতে খোঁজ খবর নিলে বলতে পারো স্ত্রীর সঙ্গে আসছিলা।

তোমার মুরিদরা বলতেছে সব ফেইক, লাইভ ফেইক ভিডিও ফেইক, কল রেকর্ড ফেইক। কিন্তু তোমার স্বীকারোক্তিই বলে দেয় সব সত্য। তোমার উপর অনেক বদদোয়া।

জেনা করছো কি না সেটা আল্লাহ জানবেন। কিন্তু একটা সংসার ভাঙার বদদোয়া। দুইটা মাতৃহারা শিশুর বদদোয়া। তোমার প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে অ’ন্যায় ও জালিয়াতির বদদোয়া। এবং সতেরোটা লা’শের বদদোয়া, যাদের র’ক্ত মাড়ায়া তুমি রিসোর্টে ফূর্তি করতে গেছো।

আর তুমি সেসব ধামাচাপা দিতে মিথ্যার পর মিথ্যা বলতেছো। আল্লাহর গজবরেই অ’স্বীকার করতেছো! আবার বলতেছো সেটা অন্য মানুষের উপর পড়বে! ইসলাম, আল্লাহর পাক কালামরে আর কতো অপবিত্র করবা মিয়া?

আরো প্রচুর নারীর সঙ্গে তোমার অন্তরঙ্গ কথাবার্তা প্রকাশ পাইছে। তাদের সংসারের কী অবস্থা? তাদের কয়টা ফ্লাটে রাখছো? সেগুলাও কি এতিমের জন্য আনা টাকার হক মাইরা কেনা? আল্লাহ তোমারে সৎ পথে আনুন, তার আগে তোমার সত্যিকার চেহারাটা মানুষের কাছে উন্মোচিত করুন…।

লেখক পরিচিতি:
অমি রহমান পিয়াল
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক গবেষক, সাংবাদিক, ব্লগার ও অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট।

শেয়ার করুন !
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

এই ওয়েবসাইটের যাবতীয় লেখার বিষয়বস্তু, মতামত কিংবা মন্তব্য– লেখকের একান্তই নিজস্ব। somoyekhon.net-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এর মিল আছে, এমন সিদ্ধান্তে আসার কোনো যৌক্তিকতাই নেই। লেখকের মতামত, বক্তব্যের বিষয়বস্তু বা এর যথার্থতা নিয়ে somoyekhon.net আইনগত বা অন্য কোনো ধরনের কোনো প্রকার দায় বহন করে না।

Leave A Reply

error: Content is protected !!