হেফাজতে এমন মামুনুলের সংখ্যা অনেক!

0

বিশেষ প্রতিবেদন:

মামুনুলের ভাগ্য নির্ধারণের জন্য কাল বৈঠকে বসেছিলো হেফাজত। হেফাজতের আমীর জুনায়েদ বাবুনগরীর নেতৃত্বে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু এই বৈঠকে বেরিয়ে এসেছে অনেক চাঞ্চল্যকর তথ্য। শুধু এক মামুনুল নয়-এরকম অনেক মামুনুলের সন্ধান পাওয়া গেছে হেফাজতের এই বৈঠকে।

এক নেতা অন্য নেতার ওপর এ ধরনের একাধিক স্ত্রী রাখা, গোপন সম্পর্ক এবং পরকীয়ার অভিযোগ এনেছেন। আর এর প্রেক্ষিতে দেখা যাচ্ছে, মামুনুল একা নন, অন্য নারীর সঙ্গে সম্পর্ক করা, গোপনে বিয়ে করা এবং নারী নির্যা’তন হেফাজতের অনেক নেতারই একটি বৈশিষ্ট্য। একে তারা তাদের স্বাভাবিক ঘটনা হিসেবেই মনে করেন।

হেফাজতের যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হকের বিরু’দ্ধে মোটাদাগে ৫টি অভিযোগ উঠেছে। প্রথম অভিযোগ, তিনি তার প্রথম স্ত্রীর অনুমতি ছাড়া দ্বিতীয় স্ত্রীকে বিয়ে করেছেন। দ্বিতীয় অভিযোগ, তিনি ঝর্ণাকে কি বিয়ে করেছেন, নাকি ঝর্ণা তার র’ক্ষিতা তা স্পষ্ট নয়।

তৃতীয় অভিযোগ, বিয়ে বা র’ক্ষিতা হিসেবে রাখার তথ্য হেফাজতের কাছে গোপন করেছেন। চতুর্থ অভিযোগ’ একাধিক নারীর সঙ্গে মামুনুলের সম্পর্ক রয়েছে এবং পঞ্চম অভিযোগ’ বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়েও ঝর্ণাকে তিনি বিয়ে করেননি অর্থাৎ জালিয়াতি করেছেন এবং ব্যা’ভিচার করেছেন।

কিন্তু হেফাজতের একাধিক সূত্র বলছে, হেফাজতের অনেকেই আছেন যারা একাধিক বিয়ে করেছেন। হেফাজতের নেতাদের মতে, একাধিক বিয়ে করা অপরাধ নয়। ইসলামী শরীয়া অনুযায়ী একজন পুরুষ একাধারে একসঙ্গে চারজন স্ত্রী রাখতে পারেন। কিন্তু প্রশ্ন হলো, যারা একাধিক বিয়ে করবেন তাদেরকে প্রথম স্ত্রীর অনুমতি নিয়ে দ্বিতীয় বিয়ে করতে হবে এটিই নিয়ম। কিন্তু এই নিয়ম হেফাজতের খুব কম নেতাই মানেন।

সংগঠনের বিভিন্ন নেতার সূত্রে জানা গেছে, হেফাজতের মধ্যে বেশ কয়েকজন নেতা আছেন যাদের দ্বিতীয় স্ত্রীর খবর এতদিন অজানা ছিল। মামুনুলকাণ্ডের পর তাদের সম্পর্কে তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। দ্বিতীয়ত, হেফাজতের অনেকে বলছেন, অনেকের বিরু’দ্ধে বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কের অভিযোগও এখন উত্থাপিত হচ্ছে। যদিও সংগঠনের পক্ষ থেকে এসব অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে। তারা বলছেন, যারা বহু বিবাহ করেছেন তারা আইন ও শরীয়া মেনেই করেছেন। বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক নেই কারো সাথে।

হেফাজতের একজন নেতা চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলেছেন, এ ধরনের কোনো তথ্য-প্রমাণ যদি দিতে পারেন, তাহলে তার বিরু’দ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। কিন্তু হেফাজতের বৈঠকেই এরকম অন্তত ৫ জনের নাম এসেছে যাদের বৈবাহিক সম্পর্কের ব্যাপারে স্পষ্ট কোনো তথ্য হেফাজতের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের কাছে নেই।

এছাড়াও বিভিন্ন মাদ্রাসায় অ’নৈতিক কর্মকাণ্ডের প্রসঙ্গটিও এবার সামনে এসেছে। গত কয়েকদিন ধরে বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় সংবাদ বের হচ্ছে, মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদেরকে ধ- এর দায়ে বেশকিছু মাদ্রাসার শিক্ষক ও হেফাজতের নেতা অভিযুক্ত হচ্ছেন। একে হেফাজত ষড়’যন্ত্র বলতে চাইছেন।

তাদের মতে, এখন যখন সরকারের সঙ্গে তাদের একটা টানাপোড়েন চলছে সেই প্রেক্ষিতেই এসব অভিযোগ উঠেছে। কিন্তু হেফাজতের কোনো নেতাই মামুনুলের কর্মকাণ্ডকে সমর্থন করেননি। যদিও তারা কেউই শেষ পর্যন্ত মামুনুলের বিরু’দ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণের ব্যাপারে একমত হতে পারেননি। পাশ কাটিয়ে সভা শেষে আমীর জুনায়েদ বাবুনগরী এসব ঘটনাকে মামুনুলের ব্যক্তিগত ব্যাপার বলে সাফ জানিয়ে দেন।

হেফাজতের নেতারা হয়ত বুঝতে পারছেন, এসব নিয়ে বেশি ঘাঁটাঘাঁটি করলে অনেকের গোপন খবর বেরিয়ে আসবে। আর তাতে ইমেজ সংকটে পড়ে যাবে হেফাজতে ইসলাম।

শেয়ার করুন !
  • 230
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

এই ওয়েবসাইটের যাবতীয় লেখার বিষয়বস্তু, মতামত কিংবা মন্তব্য– লেখকের একান্তই নিজস্ব। somoyekhon.net-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এর মিল আছে, এমন সিদ্ধান্তে আসার কোনো যৌক্তিকতাই নেই। লেখকের মতামত, বক্তব্যের বিষয়বস্তু বা এর যথার্থতা নিয়ে somoyekhon.net আইনগত বা অন্য কোনো ধরনের কোনো প্রকার দায় বহন করে না।

Leave A Reply

error: Content is protected !!