প্রধান শিক্ষকের নৃশংসতা: ৫ম শ্রেণির ছাত্র নিজের প্রস্রাব চাটতে বাধ্য হয়!

0

ময়মনসিংহ সংবাদদাতা:

ময়মনসিংহ জেলার ত্রিশাল উপজেলায় অবস্থিত ভাটিদাস পাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আশরাফুল আলমের অশোভন আচরণ ও এক স্কুল ছাত্রকে অমানবিক অপমানের বিচার চেয়েছেন একই স্কুলের ভুক্তভোগী সহকারী শিক্ষক শরীফা খাতুন। মঙ্গলবার দুপুরে ময়মনসিংহ প্রেসক্লাব মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বিচারের দাবি জানান শরীফা খাতুন।

সংবাদ সম্মেলনে আল্টিমেটাম দিয়ে বলা হয়, আগামী ২৩ জানুয়ারির মধ্যে দায়ী প্রধান শিক্ষকের সুষ্ঠু তদন্তপূর্বক দৃষ্টান্তমূলক বিচার না হলে ঢাকায় প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনের সামনে আমরণ অনশনে যাবেন শরীফা খাতুন।

সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করে বলা হয়, প্রধান শিক্ষক আশরাফুল আলমের বিচার চেয়ে জেলা প্রশাসন ও জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস কর্মকর্তাদের দ্বারে দ্বারে ঘুরেও কোন প্রতিকার মেলেনি। উল্টো প্রধান শিক্ষকের বিচার চাওয়ার জেরে শরীফাকে হুমকি ধমকিসহ পদে পদে হয়রানি ও অপমান অপদস্থ হতে হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করে বলা হয়, ২০১৮ সালের ২৪ জুলাই স্কুলের ছাদে প্রস্রাব করায় ৫ম শ্রেণির এক মেধাবী ছাত্রকে সেই প্রস্রাব চেটে খেতে বাধ্য করেন প্রধান শিক্ষক আশরাফুল আলম। ঘটনা জানাজানি হওয়ার ১ মাস পর গঠিত তদন্ত কমিটি অবিশ্বাস্য দ্রুত গতিতে একদিনে তদন্ত করে ওই দিনই তড়িঘড়ি তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করে। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন স্কুলে এরকম কোন ঘটনাই ঘটেনি বলে দাবি করা হয়।

এই ঘটনার প্রতিবাদ করেছিলেন স্কুলের সহকারী শিক্ষক শরীফা খাতুন। এর জেরে প্রথমে শরীফাকে ক্লাস থেকে বাধ্যতামূলক বিরত রাখা হয়। বন্ধ রাখা হয়েছে বেতন ভাতাদি। এ নিয়ে শরীফা জেলা প্রশাসন ও জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে তথ্য প্রমাণাদিসহ লিখিত অভিযোগ দেয়ার পর থেকে তাকে হত্যার হুমকিসহ নানাভাবে অপমান অপদস্থ করেন প্রধান শিক্ষক ও বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির প্রভাবশালী সদস্যরা। জেলা প্রশাসন ও জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস কর্মকর্তারাও এ ব্যাপারে কোন সাড়া দেননি। ফলে এক সময় ঘটনা ধামাচাপা পড়ে যায়।

সংবাদ সম্মেলনে শরীফা খাতুন ও তার পরিবারের সদস্য, স্বজনসহ মানবাধিকার কর্মীরাও উপস্থিত ছিলেন। সংবাদ সম্মেলনের পর ময়মনসিংহ প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধনও করেন তারা। সংবাদ সম্মেলন ও মানববন্ধনে স্থানীয় মানবাধিকার নেত্রী মাফরুফা মিমি উপস্থিত ছিলেন।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মফাজ্জল হোসেন জানান, এই ঘটনায় দায়ী প্রধান শিক্ষক আশরাফুল আলমের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। এছাড়া প্রধান শিক্ষক আশরাফুল ও সহকারী শিক্ষক শরীফাকে অন্যত্র বদলির প্রক্রিয়া চলছে।

শেয়ার করুন !
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

এই ওয়েবসাইটের যাবতীয় লেখার বিষয়বস্তু, মতামত কিংবা মন্তব্য– লেখকের একান্তই নিজস্ব। somoyekhon.net-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এর মিল আছে, এমন সিদ্ধান্তে আসার কোনো যৌক্তিকতাই নেই। লেখকের মতামত, বক্তব্যের বিষয়বস্তু বা এর যথার্থতা নিয়ে somoyekhon.net আইনগত বা অন্য কোনো ধরনের কোনো প্রকার দায় বহন করে না।

Leave A Reply

error: Content is protected !!