সময় এখন ডেস্ক:
নামধারী ইসলামিক বক্তা রফিকুল ইসলাম মাদানি ওরফে শিশুবক্তাকে আটক করার পর থেকে বেরিয়ে আসছে একের একের গোপন তথ্য। এবার নিয়মিত প- গ্রাফি ভিডিও দেখাসহ রাষ্ট্রবিরোধী বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করার তথ্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে স্বীকার করেছে রফিকুল মাদানী।
মঙ্গলবার (১৩ এপ্রিল) গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার ইলতুৎমিশ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, মাদানীর মোবাইল ফোনে প্রচুর আপত্তিকর ভিডিও পেয়েছে ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা। এছাড়া নিয়মিত এসব ভিডিও দেখার অভ্যাসের কথাও স্বীকার করেছেন তিনি। এজন্য তার বিরু’দ্ধে প- গ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১২ এর ৮(৫) (ক) ধারা যুক্ত করা হবে।
উল্লেখ্য, গত ৭ এপ্রিল নেত্রকোনার নিজ বাড়ি থেকে মাদানীকে আটক করে র্যাব। এ সময় তার কাছ থেকে ৪টি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়। পরে তার বিরু’দ্ধে গাজীপুরের গাছা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের করে র্যাব। বর্তমানে তিনি কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি জেলে রয়েছেন।
শিশুবক্তা হিসেবে হঠাৎ পরিচিত হয়ে ওঠা রফিকুল ইসলাম কিছুটা বামনাকৃতির, বালকসুলভ চেহারা ও কোমল কণ্ঠস্বরের অধিকারী। তার নিজের ভাষ্যমতে, ১৯৯৫ সালে আমার জন্ম। কে বলছে আমি শিশু? আমার বয়স ২৬ বছর।
রফিকুল ইসলামের বাড়ি নেত্রকোনায়। স্থানীয় স্কুলে শিক্ষাজীবন শুরু হলেও পরে তিনি মাদ্রাসায় ভর্তি হন ও নূরানি, হেফজ পড়েন। এরপর ৮ বছর কিতাবখানায় পড়েন।
মাদ্রাসার ছাত্র থাকার সময় বিভিন্ন ওয়াজ মাহফিলে ওয়াজ করতেন রফিকুল। তিনি দাওরায়ে হাদিস পড়েছেন রাজধানীর জামিয়া মাদানিয়া বারিধারা মাদ্রাসায়। একই সঙ্গে তিনি বিএনপি-জামায়াত জোটের শরিক দল জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের অঙ্গসংগঠন যুব জমিয়তের নেত্রকোনা জেলার সহসভাপতি।
নেত্রকোনার পশ্চিম বিলাশপুর সাওতুল হেরা মাদ্রাসার পরিচালক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করে আসছেন শিশুবক্তা।
রফিকুলের নামের শেষে ‘মাদানী’ শব্দ যুক্ত করা নিয়েও বিত’র্ক রয়েছে। সৌদি আরবের মদিনা বিশ্ববিদ্যালয়ে যারা পড়াশোনা করেন, তাদের নামের সঙ্গে ‘মাদানী’ যুক্ত করা হয়। ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা না করেই নিজের নামের সঙ্গে ‘মাদানী’ শব্দ যুক্ত করেছেন তিনি।
এরই মধ্যে ‘মাদানী’ শব্দ বাদ দিতে রফিকুলকে আইনি নোটিশ পাঠিয়েছেন মদিনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী হেফাজতে ইসলামের নেতা মাওলানা রফিকুল ইসলাম মাদানী। তার পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী শরীফুল হাসান খান গত ১৫ ফেব্রুয়ারি এই নোটিশ পাঠান।
বিত’র্কিত কর্মকাণ্ড ও উসকানিমূলক ওয়াজের কারণে রফিকুল ইসলামকে ওয়াজকারী বক্তাদের সংগঠন রাবেতাতুল ওয়ায়েজিন বাংলাদেশে এর সদস্য করা হয়নি। বরং সংগঠনটির পক্ষ থেকে তাকে বিভিন্ন সময় অ-প্রাসঙ্গিক বক্তব্য না দেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।
175