সময় এখন ডেস্ক:
আওয়ামী লীগ নেত্রী বলে ঘোষণা দিয়ে নিজের জন্মদাত্রী মাকে ‘মা’ ডাকা বন্ধ করে খালেদা জিয়াকে মা ডেকেও ধরে রাখতে পারলেন না ছাত্রদলের পদ। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলা ছাত্রদলের নবগঠিত আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণার পর মাত্র ১৩ দিনের মাথায় তা বাতিল করেছে কেন্দ্রীয় ছাত্রদল।
সম্প্রতি কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সহ-দপ্তর সম্পাদক আজিজুল হক সোহেল স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়েছে, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার অধীন সরাইল উপজেলা ছাত্রদল বিদ্যমান আহ্বায়ক কমিটির কার্যত দৃশ্যমান কোনো কার্যকারিতা না থাকায় উক্ত কমিটি বাতিল ঘোষণা করা হলো।
আগামী ৩০ মার্চের মধ্যে তৃণমূল নেতাকর্মীদের প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণের মাধ্যমে কমিটি পুনর্গঠন করা হবে। জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি ফজলুর রহমান খোকন ও সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন শ্যামল এক সাংগঠনিক কার্যনির্বাহী সভায় এই সিদ্ধান্তের অনুমোদন দেন।
বুধবার রাতে কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সহ-দপ্তর সম্পাদক আজিজুল হক সোহেল কমিটি বিলুপ্ত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে, গত ১৪ ফেব্রুয়ারি সরাইল উপজেলা ছাত্রদলের ২১ সদস্যে আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় ছাত্রদল। এই কমিটির আহ্বায়ক এম রিফাত বিন জিয়ার বিরু’দ্ধে অভিযোগ উঠেছে তার ‘মা’ আওয়ামী লীগের রাজনীতি সঙ্গে সরাসরি জড়িত।
এছাড়া সদস্য সচিব আমানুল্লাহ আমান নিজেই আদম ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। ফলে সরাইল উপজেলা নবগঠিত ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটি গঠন হওয়ার পর পরই তোপের মুখে পড়ে এম রিফাত বিন জিয়া ও সদস্য সচিব আমানুল্লাহ আমান।
জানা গেছে, জিয়ার মা বেবি ইয়াছমিন সরাইল উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য।
এ ঘটনায় গত ২৫ ফেব্রুয়ারি রাতে জেলা ছাত্রদলের কাছে ২১ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটির ১৫ জনই পদত্যাগপত্র জমা দেন।
এসব অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে এক বিবৃতিতে আহ্বায়ক এম রিফাত বিন জিয়া বলেছিলেন, আমার মা আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে জড়িত হওয়ার কারণে আমি ‘মা’ ডাকা বন্ধ করে দিয়েছি। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া এখন আমার ‘মা’। জিয়া পরিবার আমার পরিবার।
তিনি আরও জানান, ১৯৭৯ সাল থেকে আমার বাবা বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। এ কারণে এরশাদবিরোধী আন্দোলনের সময় একাধিকবার জেলে যান তিনি। নবগঠিত সরাইল উপজেলা ছাত্রদলকে সাংগঠনিকভাবে দুর্বল করতে আমাকে নিয়ে গভীর ষড়’যন্ত্র হচ্ছে।
সরাইল সরকারি কলেজ শাখা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি রিগান খন্দকার বলেন, সরাইল উপজেলার সবাই জানেন গত ২ বছর আগে তার (এম রিফাত বিন জিয়া) মা সরাইল উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে নারী ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচন করেছিলেন।
পুরো নির্বাচনটা তিনি পরিচালনা করেন। নির্বাচনে জয় লাভ করাতে তার মায়ের সঙ্গে আওয়ামী লীগের এক মন্ত্রীর কাছেও যান সুপারিশ করতে।
তিনি আরও বলেন, এখন ছাত্রদলে নিজের পদ ধরে রাখতে বিভিন্ন জায়গায় বলছেন, নিজের মাকে ডাকা বন্ধ করে দিয়েছেন এম রিফাত বিন জিয়া।
এদিকে, বিত’র্কিত আহ্বায়ক কমিটি বাতিল করায় আনন্দ মিছিল করেন সরাইল উপজেলা ছাত্রদলের বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা।