লকডাউনের মধ্যেই হেফাজতের নতুন নীলনকশা

0

বিশেষ প্রতিবেদন:

লকডাউনের সময় সারা দেশের বিভিন্ন স্থানে তা’ণ্ডব করার এক নীলনকশা তৈরি করেছে হেফাজত। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং গোয়েন্দা সংস্থাগুলো তেমন কিছু তথ্য পেয়েছে।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একাধিক সূত্র বলছে, সরকার বিষয়টি সম্বন্ধে অবগত এবং এ ব্যাপারে সরকার জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছে। আর হেফাজত যদি আবারও কোনো অঘটন ঘটানোর চেষ্টা করে, তাহলে সরকার কঠোর হস্তে সেটাকে দমন করবে।

ইতিমধ্যেই সেনসিটিভ এলাকাগুলোর থানাতে এলএমজি চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। সর্বশেষ ঢাকার মতিঝিল-পল্টন এলাকার থানাগুলোতেও নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। গোয়েন্দা সংস্থাগুলো বলছে, তাদের কাছে কিছু তথ্য আছে, লকডাউনের বিরোধিতার নামে হেফাজতসহ কয়েকটি সংগঠন মিলে না’শকতা চালানোর অপচেষ্টা করতে পারে।

গত কিছুদিন ধরেই হেফাজতের সঙ্গে সরকারের টানাপোড়েন চলছে। বিশেষ করে ২৬ এবং ২৭ মার্চ হেফাজত ঢাকা-চট্টগ্রাম এবং ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় যে তা’ণ্ডব চালিয়েছে এর ফলে সরকার হেফাজতের ব্যাপারে কঠোর অবস্থানে গেছে। ইতিমধ্যেই হেফাজতের বেশকিছু নেতাকর্মী গ্রেপ্তার হয়েছে। সাংগঠনিক সম্পাদকও গ্রেপ্তার হয়েছে।

হেফাজতের আমির জুনায়েদ বাবুনগরী এবং যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হকসহ ৪৩ জনের নামে আহমদ শফী হ’ত্যা মামলার অভিযোগ সংক্রান্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছে পিবিআই। এর প্রেক্ষিতে হেফাজত কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছে। বাবুনগরী বলেছেন, গ্রেপ্তারি পরোয়ানার দিলে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।

হেফাজতের এখন সরাসরি আন্দোলনে না গিয়ে বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করার চেষ্টা করছে। সরকার ইতিমধ্যে কওমি আবাসিক মাদ্রাসাগুলো বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। জেলা প্রশাসকদেরকে স্ব স্ব জেলার কওমি মাদ্রাসার তালিকা তৈরি করার নির্দেশনা দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

সরকার ধাপে ধাপে কওমি আবাসিক মাদ্রাসাগুলো করোনার সংক্রমণ ঠেকানোর জন্য বন্ধ করার উদ্যোগ নেবে। আর এটিকে কাজে লাগাতে চায় হেফাজত। এটি দিয়ে তারা মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদেরকে ক্ষেপিয়ে তুলতে চায় এবং তাদেরকে রাস্তায় নামাতে চায়।

তাছাড়া মসজিদে নামাজ পড়তে না দেওয়ারও বিরোধিতা করেছে হেফাজত। তারা বলছে, আল্লাহর ঘরে নামাজ পড়ার ক্ষেত্রে যদি সীমাবদ্ধতা তৈরি করা হয়, সেটিতে তারা প্রতিবাদ করবে। মূলত হেফাজত তাদের বিরু’দ্ধে উত্থাপিত অভিযোগগুলোকে ধামাচাপা দিতে ইসলামী ইস্যু সামনে আনছে যেন জনগণকে সহজেই বিভ্রা’ন্ত করা যায়।

হেফাজত মনে করছে, হঠাৎ বিভিন্ন জেলায় দুর্ঘটনা ঘটিয়ে বা উসকানি দিয়ে সরকারকে চাপে ফেলা যায়। হেফাজতের নেতারা এটাও মনে করছে এখন সাধারণ মানুষের মধ্যে অর্থনৈতিক শ’ঙ্কা নিয়ে এক ধরনের অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। আর এর ফলে মানুষকে সহজেই আন্দোলনের মধ্যে পাওয়া যাবে। দোকান মালিক থেকে শুরু করে নিম্ন আয়ের মানুষের যে কোনো পরিস্থিতিতে রাস্তায় নামতে পারে। এই সুযোগটাকে হেফাজত কাজে লাগাতে চায়।

তবে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা বলছে, হেফাজতের এই পরিকল্পনা সম্পর্কে তারা জ্ঞাত এবং দেশে কোথাও যেনো কোনো অ-প্রীতিকর ঘটনা না ঘটে সেজন্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থা সচেতন রয়েছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া বা হাটহাজারীর মতো ঘটনা আর ঘটতে দেওয়া হবে না। এ কারণেই এবার লকডাউনে যেন কোনো অনা’কাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি না ঘটে সেজন্য সরকার কঠোর অবস্থানে গেছে। বাংলাইনসাইডার।

শেয়ার করুন !
  • 188
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

এই ওয়েবসাইটের যাবতীয় লেখার বিষয়বস্তু, মতামত কিংবা মন্তব্য– লেখকের একান্তই নিজস্ব। somoyekhon.net-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এর মিল আছে, এমন সিদ্ধান্তে আসার কোনো যৌক্তিকতাই নেই। লেখকের মতামত, বক্তব্যের বিষয়বস্তু বা এর যথার্থতা নিয়ে somoyekhon.net আইনগত বা অন্য কোনো ধরনের কোনো প্রকার দায় বহন করে না।

Leave A Reply

error: Content is protected !!