প্রবাস ডেস্ক:
ইউরোপসহ উন্নত দেশগুলোতে লুকিয়ে অনুপ্রবেশ করতে গিয়ে প্রতিনিয়ত প্রাণ হারাচ্ছে অসংখ্য বাংলাদেশি তরুণ। অনেক সময় এই পথ ১ সপ্তাহে শেষ হয়, ঝামেলা হলে আরও বিলম্ব হয়। আবার কখনও শেষই হয় না সেই পথ অর্থাৎ গুম বা জিম্মি করা হয় স্বপ্নচারী সেই যাত্রীদের। এই পথে বিপদ প্রতি পদে পদে। সমুদ্রপথে খাবার পানি শেষ হলে শুরু হয় যাত্রীদের মৃত্যুর প্রহর গোণা। প্রচণ্ড গরমে হাহাকার করতে করতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করে সেই অসহায় যাত্রীরা।
এভাবেই স্বপ্ন পূরণের আশায় ইরান থেকে নদীপথে গ্রীস যাওয়ার পথে দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন পাপ্পু রায় নামে এক বাংলাদেশি যুবক। তিনি হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জ উপজেলার ইনাতগঞ্জ ইউনিয়নের মধ্যসামত গ্রামের মৃত বন রায়ের ছেলে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পাপ্পু রায়ের কাকাতো ভাই রজত রায়। ইরান থেকে নদী পথে গ্রীসে যাওয়ার উদ্দেশ্যে স্পিডবোটে উঠার সময় অসাবধানতাবশত ইঞ্জিনের প্রপেলারে পড়ে গলা কেটে তার হয়ে মৃত্যু হয় বলে জানায় পাপ্পুর পরিবার।
২ মাস আগে ভিসা নিয়ে ওমানে থাকা দুই ভাইয়ের কাছে পাড়ি জমান পাপ্পু। ওমান থেকে দালালের মাধ্যমে গ্রীস যাওয়ার উদ্দেশ্যে ইরানে পৌঁছান তিনি। সেখান থেকে ১০ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার গ্রিস যাওয়ার উদ্দেশ্যে স্পিডবোটে উঠার সময় স্পিডবোটের প্রপেলারের ওপর পড়ে পাপ্পুর গলা কেটে মৃত্যু হয়। পরে ইরানের স্থানীয় পুলিশ পাপ্পুর মরদেহ উদ্ধার করে। বর্তমানে তার মরদেহ স্থানীয় হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। এ খবরে পাপ্পুর পরিবারে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
দালালদের মাধ্যমে যারা ইউরোপে ঢুকতে পারে, তাদের মাথা গোঁজার ঠাঁই তৈরী করতে জীবনযুদ্ধে নামতে হয়। প্রথমে তাদের বাসস্থানের জন্য পরিচিতদের কাছে যেতে হয়। তারপর কাজ খোঁজা। ইউরোপের যে কোনো দেশে যেমন স্পেন, ফ্রান্স ইতালি কিংবা পর্তুগালে যথাযথ পারমিট ছাড়া কাজ পাওয়া সম্ভব নয়। এ ছাড়া যারা অ্যাসাইলাম কিংবা হিউম্যান রাইটসে বসবাসের জন্য আবেদন করেন তাদের আবেদন বিবেচনা কিংবা আমলে নিতে প্রায় ৮ মাস সময় লেগে যায়। কোন কোন দেশে কয়েক বছরও লাগে। এভাবেই কাটতে থাকে প্রবাসীদের জ্বালাময় জীবন।