বিশেষ প্রতিবেদন:
করোনা আক্রান্ত বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনা করে চিঠি দিয়েছেন ঢাকায় নিযুক্ত পাকিস্থানের হাই কমিশনার ইমরান আহমেদ সিদ্দিকী।
এতে সুস্পষ্টভাবে আবারও প্রমাণিত হলো একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধে পরাজিত শক্তি পাকিস্থানের ষড়’যন্ত্র বাংলাদেশের বিরু’দ্ধে এখনও চলমান। তাই তাদের মতাদর্শে বিশ্বাসী বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার অসুস্থতায় তাদের প্রাণে হাহাকার দেখা দিয়েছে। তাই তার সুস্থতা কামনায় চিঠি দিয়েছে, মত দেশের রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের।
গত ১০ এপ্রিল (শনিবার) দুই দফায় বিএনপি নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নমুনা সংগ্রহ করা হয়। সেই সংগ্রহ করা নমুনায় তার রিপোর্ট করোনা ‘পজেটিভ’ আসে। যদিও প্রথমে নমুনা সংগ্রহের বিষয়টি উড়িয়ে দেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। পরবর্তীতে জানাজানি হয়ে গেলে বিএনপির প্রেস উইং তা স্বীকার করে।
পরে মিডিয়ার মাধ্যমে খবরটি সবাই জানতে পারে রোববার (১১ এপ্রিল)।
এদিকে তার অসুস্থতার খবর শুনে বিচলিত হয়ে পড়েছে একাত্তরের পরাজিত শক্তি পাকিস্থান। সে কারণে ১৪ এপ্রিল ঢাকাস্থ পাকিস্থানের হাইকমিশনার ইমরান আহমেদ সিদ্দিকী খালেদা জিয়ার শারীরিক সুস্থতা কামনা করে তার একান্ত সচিব আব্দুর সাত্তার বরাবর চিঠি পাঠিয়েছেন।
বুধবার (১৪ এপ্রিল) রাতে বিএনপির চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইংয়ের সদস্য শায়রুল কবির খান এই তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, ম্যাডামের (খালেদা জিয়ার) সুস্থতা কামনা করে ১৪ এপ্রিল তার একান্ত সচিব আব্দুর সাত্তার বরাবর চিঠি পাঠিয়েছেন পাকিস্থানের হাইকমিশনার।
এ বিষয়ে দেশের রাজনৈতিক বিজ্ঞজনরা বলছেন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া পাকিস্থানের মতাদর্শে পথ চলেন, এ কথা অনেক আগেই প্রতিষ্ঠিত। ইতোপূর্বে বিভিন্ন সময়ে তার ও বিএনপির কর্মকাণ্ডে সেটি প্রকাশ পেয়েছে।
আসিফ নাওয়াজ জানজুয়া, পাকিস্তান আর্মির কর্নেল ছিলেন। চট্টগ্রামের হালিশহরে অবস্থিত ৮ম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের কমান্ডিং অফিসার ছিলেন। ঐ ইউনিটের ডেপুটি কমান্ডিং অফিসার ছিলেন মেজর জিয়া, খালেদা জিয়ার স্বামী।
মুক্তিযুদ্ধের পুরো সময়টা জানজুয়ার হাতে স্বেচ্ছায় আটক ছিলেন খালেদা জিয়া। জিয়াউর রহমান রণাঙ্গন থেকে ৪ বার জীবনের ঝুঁ’কি নিয়ে কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধাকে পাঠান খালেদা জিয়াকে উদ্ধার করে নিয়ে যেতে, কিন্তু খালেদা জিয়া তাদের সাথে যাননি।
মুক্তিযুদ্ধের পর জিয়াউর রহমান তাই খালেদা জিয়ার সাথে সংসার করতে অপারগতা প্রকাশ করেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মধ্যস্থতায় জিয়াউর রহমান পুনরায় খালেদা জিয়াকে ঘরে তুলে নেন।
১৯৯৩ সালের জানুয়ারি ৮ তারিখে পাকিস্থানের সেনাপ্রধান হিসেবে দায়িত্বরত অবস্থায় জানজুয়া মা’রা যান। খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া পাকি প্রধানমন্ত্রি নাওয়াজ শরীফের কাছে শোকবার্তা পাঠান। পাকি প্রধানমন্ত্রীও শোক জানাননি তখনও, এর মধ্যে পাকি সরকার খালেদা জিয়ার শোকবার্তা পেয়ে মহাবিব্রত হয়ে পড়ে। পরবর্তীতে তারা কেবল খালেদা জিয়ার শোকবার্তার কারণে সংসদে একটা শোক প্রস্তাব পাশ করতে বাধ্য হয়।
বিএনপির পাকিপ্রেম তাই অনেক পুরনো। এবার খালেদার করোনার খবরে আরেক দফা প্রমাণিত হলো সে বিষয়টি। খালেদার সুস্থতা কামনায় পাকিস্থানের চিঠিতেই স্পষ্ট হলো, বিএনপি এবং পাকিস্থান একে অপরের পরিপূরক। বিএনপির রাজনীতি পাকিকেন্দ্রিক এবং তাদের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই’র ইশারাতেই চলে যাবতীয় কার্যক্রম। নিউজব্যাংক।
208