সময় এখন ডেস্ক:
আপনি যদি বর্তমান জামানার চৌদ্দ-পনের বছরের ছেলে-মেয়েদের দিকে তাকান তবে দেখতে পাবেন যে, তাদের বিরাট অংশ জীবন সম্পর্কে হতাশ হয়ে পড়েছে। কারন তারা প্রয়োজনের পূর্বেই অনেক কিছু জেনে গেছে অথবা পেয়ে গেছে। তারা প্রযুক্তির কল্যাণে নারী-পুরুষের দৈহিক সম্পর্ক, দুনিয়ার হালনাগাদ তথ্য এবং আর্থিক স্বচ্ছলতার কারণে অনেক ভোগ্যপণ্য ভোগ করার অভিজ্ঞতার পাশাপাশি আরো অনেক নিষিদ্ধ বিষয় জেনে গেছে। ফলে জীবন সম্পর্কে তাদের কোনোই আগ্রহ নেই।
উপরোক্ত ঘটনার বিপরীতে আপনি যদি ৭০ কিংবা আশির দশকের চৌদ্দ-পনের বছরের ছেলে-মেয়েদের উদ্ভাবনী শক্তি, জীবন সংগ্রাম এবং বেঁচে থাকার আগ্রহের হেতু খুঁজে বেড়ান তবে দেখতে পাবেন যে, তাদের যেমন অনেক কিছু ছিলো না- তেমনি তারা অনেক কিছু জানতোও না। ফলে জানার আগ্রহ ও পাবার ব্যাকুলতার কারনে তারা কর্মজীবনে এসে অনেকেই বিরাট সফলতা লাভ করতো। তাদের সফলতার মূল মন্ত্র ছিলো- তারা হররোজ অবাক হয়ে যেতো- এবং মাঝে মাঝে আশ্চর্য হয়ে প্রকৃতির লীলা খেলার রহস্য খুঁজতে গিয়ে নিজেরা জীবন যুদ্ধের মস্ত বড় যোদ্ধায় পরিণত হয়ে যেতো।
আপনি যদি উল্লেখিত বাস্তবতার সঙ্গে সমকালীন রাজনীতির অন্তঃমিল খুঁজে বেড়ান তবে অবশ্যই বিএনপিকে পরামর্শ দেবেন আওয়ামী লীগের প্রতি কৃতজ্ঞ থাকার জন্য। কারন গত প্রায় একযুগ ধরে আওয়ামী লীগ অন্তত কয়েক ডজন বার বিএনপিকে হতবাক করে দিয়ে দলটির অভিজ্ঞতা, জীবনবোধ, বেঁচে থাকার স্বাধ ও সাধ্যের প্রতি যে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছে, তাতে রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপির অস্তিত্ব দিনকে দিন মজবুত হয়েছে।
আওয়ামী লীগের কর্মকুশলতার কারনে বিএনপির মধ্যে হতাশা সৃষ্টির পরিবর্তে বেঁচে থাকার লড়াই করার কৌশল জানা বাধ্যতামুলক হয়ে পড়েছে। বিএনপি যদি সবকিছু পেয়ে যেতো তবে তারাও বর্তমান কালের কিশোর-কিশোরীদের মতো হতাশ হতে হতে এক সময় আত্মহত্যার কথা চিন্তা করতো। কিন্তু আওয়ামী লীগের বদান্যতার কারনে বিএনপির মরার স্বাদ পালিয়ে গেছে। তারা এখন মৃত্যুকে এড়িয়ে বেঁচে থাকার জন্য নিদারুণ চেষ্টা তদবির ও গবেষণায় ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। ফলে আমি নিশ্চিত করে বলতে পারি যে আওয়ামী লীগের কৌশলের কারণেই বিএনপির অপমৃত্যু হবে না, আর এই কারণেই তাদের উচিত প্রতিপক্ষের প্রতি কৃতজ্ঞ থাকা।
(গোলাম মাওলা রনির ফেসবুক থেকে সংগৃহীত)