বিশেষ প্রতিবেদন:
সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন স্থানে তা’ণ্ডবের দায়ে হেফাজতের একাধিক নেতা গ্রেপ্তার হচ্ছেন। একই সাথে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে ছাত্র যুব ও শ্রম অধিকার পরিষদের নেতাদেরকেও। এখন পর্যন্ত হেফাজতের ৫০ জনের বেশি বিভিন্ন শ্রেণীর নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আর সাবেক ডাকসু ভিপি নুরুর নেতৃত্বাধীন ছাত্র যুব ও শ্রম অধিকার পরিষদের ৫৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে তারা দাবি করেছেন।
এই দুটি ধরপাকড় অভিযান প্রায় সমান্তরালভাবে চলার প্রেক্ষিতে প্রশ্ন উঠেছে। যখন হেফাজতের বিরু’দ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগে অভিযান পরিচালনা করছে তখন নুরুর ছাত্র ঐক্য পরিষদের বিরু’দ্ধেও অভিযান কেন।
অনুসন্ধানে পাওয়া গেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। হেফাজত যে এলাকাগুলোতে তা’ণ্ডব চালিয়েছে, সেখানে হেফাজতের কর্মীরা ছাড়াও নুরুর ছাত্র অধিকার পরিষদের নেতাকর্মীরাও ছিলো। নুরুর গঠন করা এই সংগঠনটির পেছনে মদদদাতা হিসেবে জামায়াতের নাম রয়েছে।
একাধিক আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তারা ছাত্র অধিকার পরিষদের সঙ্গে হেফাজ ও জামায়াতের সম্পৃক্ততার যোগসূত্র পাচ্ছেন। দেশের বিভিন্ন স্থানে হেফাজত যে তা’ণ্ডব চালিয়েছে, বিশেষ করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া, চট্টগ্রাম এবং ঢাকায়, তার পেছনে জামায়াতের সুস্পষ্ট ইন্ধন ছিলো।
তবে জামায়াত সরাসরি নিজেদের ব্যানারে অংশগ্রহণ করেনি। তারা ছাত্র অধিকার পরিষদকে ব্যবহার করেছে। পাশাপাশি শিবির ক্যাডাররাও মাঠে নেমে জ্বালাও পোড়াও কর্মকাণ্ডে অংশ নিয়েছে। ছাত্র অধিকার পরিষদ বর্তমানে জামায়াত এবং হেফাজতের মধ্যে নেটওয়ার্ক হিসেবে কাজ করছে।
সবচেয়ে বড় ব্যাপার, হেফাজত নিজেদেরর প্রচার প্রচারণার দাবি করে, তারা কোরান সুন্নাহর আইন প্রতিষ্ঠা করতে চায়; যদিও এটা তরুণ সমাজের মধ্যে তেমন রেখাপাত করে না। তাই নুরুর ছাত্র যুব ও শ্রম অধিকার পরিষদের সৃষ্টি হয়েছে। যা সম্পূর্ণভাবে জামায়াতি পৃষ্ঠপোষকতায় ও তত্ত্বাবধানে পরিচালিত। এই সংগঠনটি বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী অনুষ্ঠান বানচালের জন্য জামায়াতের প্ররোচনায় উসকানি দিয়েছিল। আর তাদের নেটওয়ার্ক ব্যাকবোন ছিলো হেফাজতে ইসলাম।
তাই আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর ধারণা, হেফাজতের সঙ্গে ছাত্র অধিকার পরিষদের একটি গোপন সম্পর্ক রয়েছে। অনেকটা অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের মতো। ছাত্র অধিকার পরিষদের উদ্যোক্তাদের বড় অংশই মাদ্রাসার শিক্ষার্থী এবং হেফাজতের সমর্থক।
অর্থাৎ মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা একদিকে যেমন হেফাজতকে সমর্থন দিচ্ছে অন্যদিকে তারা ছাত্র অধিকার পরিষদেও সক্রিয়। এভাবে ছাত্র অধিকার পরিষদকে আরো বেশি উগ্রবাদী শক্তিরূপে গড়ে তোলার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। একদিকে যেমন সাধারণ শিক্ষায় শিক্ষিত শিক্ষার্থীরা থাকছেন তেমনি মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরাও থাকছে।
এভাবেই মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের ব্যবহার করা হচ্ছে উগ্রতা ও ভাঙচুরের জন্য। আর সাধারণ শিক্ষার্থীদেরকে ব্যবহার করা হচ্ছে সরকারবিরোধী প্রচার প্রচারণার জন্য। গত ২৫ ও ২৬ মার্চের তা’ণ্ডবের ব্যাপারে অনুসন্ধান করতে গিয়ে জানা গেছে, ছাত্র অধিকার পরিষদ এবং হেফাজত সমান্তরালভাবে আন্দোলন করেছে। দুটি সংগঠনই একই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে কাজ করেছে। একটি আরেকটির পরিপূরক বা অঙ্গ সংগঠন হিসেবেই কাজ করেছে। বাংলাইনসাইডার।
733