বিশেষ সংবাদদাতা:
উপজেলা নির্বাচনে সামনে। শুরু হয়ে গেছে দলের বিভিন্ন পর্যায়ে দৌড়ঝাঁপ আর লবিং। তবে দলীর নীতি নির্ধারণী পর্যায় থেকে যা জানা গেছে, উপজেলা নির্বাচনে হাইব্রিড এবং উড়ে এসে জুড়ে বসারা মনোনয়ন পাবে না এবার। মনোনয়নের ক্ষেত্রে বিবেচনা করা হবে দলের ত্যাগী, পরীক্ষিত ও জনসম্পৃক্ত নেতাদের। অন্তত ১২ বছর আওয়ামী লীগ বা এর অঙ্গসংগঠনের রাজনীতির সঙ্গে সরাসরি যুক্ত না থাকলে, তার মনোনয়নের সম্ভাবনা একেবারেই কম।
এমনই কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত এবং মাপকাঠির বিচারে উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থী বাছাইয়ের মাঠ জরিপ শুরু করেছে ক্ষমতাসীন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। নির্বাচন কমিশন ইতিমধ্যেই জানিয়ে দিয়েছে যে, ফেব্রুয়ারিতে উপজেলা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হবে। ৫টি ধাপে এই নির্বাচন হবে বলেও নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মতোই উপজেলা নির্বাচনেও সাফল্য চাই আমরা। এই নির্বাচনকে হালকাভাবে নেয়ার কোন সুযোগ নেই। স্থানীয় সরকার কাঠামোর একটি গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ হলো উপজেলা ব্যবস্থা। তাই আমাদের নির্বাচনী ইশতেহার বাস্তবায়নের জন্য, উপজেলায় আমাদের ভালো অবস্থান দরকার।’
ইতিমধ্যেই জানা গেছে, উপজেলা নির্বাচন আওয়ামী লীগ এককভাবেই করছে। তাই প্রার্থী বাছাইয়ের বিষয়ে অনেক ভাবনা চিন্তাও চলছে দলে। জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মতোই উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থী চূড়ান্ত করা হবে মাঠ পর্যায়ের জরিপের ভিত্তিতে। গতবারের মতো এবার উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী মনোনয়নের জন্য স্থানীয় আওয়ামী লীগকে দায়িত্ব দেওয়া হবে না। উপজেলা নির্বাচন নিয়ে জরিপের কাজ ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গেছে।
আওয়ামী লীগের একজন প্রেসিডিয়াম সদস্য জানান, আমরা জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় বলেছিলাম, যারা স্থানীয় সরকারের প্রতিনিধি তারা জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবে না। সেই সময়ই আমাদের মাঠ জরিপে উপজেলা নির্বাচন সম্পর্কে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উঠে এসেছিল। সেই হিসেবে বলতে গেলে জরিপের কাজ অনেকটাই করা ছিল, এখন ফিনিশিং টাচ দেয়া হচ্ছে।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলা নির্বাচনের আগে দলে অনুপ্রবেশ নিরুৎসাহিত করা হবে। এ বিষয়ে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, আমরা অন্যদল থেকে লোক এনে প্রার্থী করতে চাই না। যেহেতু জাতীয় সংসদে আওয়ামী লীগ বিপুল বিজয় অর্জন করেছে, তাই অন্যদলের সুযোগ সন্ধানীরা ভাবতে পারে, মনোনয়ন পেলেই উপজেলা চেয়ারম্যান বা ভাইসচেয়ারম্যান হওয়া যাবে। এই সুযোগ সন্ধানীদের প্রবেশ বন্ধ করতে হবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, উপজেলায় আওয়ামী লীগ সভাপতি দলের ত্যাগী, পরীক্ষিতদের মনোনয়ন দিতে আগ্রহী। যারা দলের দুঃসময়ে ছিলেন, তাদের এবার মূল্যায়নের পালা- এমন মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের এক সিনিয়র নেতা।
জানা গেছে, বিএনপি-জামায়াত থেকে আওয়ামী লীগে যোগদানকারী কাউকেই এবার মনোনয়ন নেয়া হবে না। এমনকি আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর যারা এখানে যোগ দিয়েছে তাদেরও বিবেচনা না করার পক্ষে মত এসেছে। নূন্যতম ১২ বছর অর্থাৎ ওয়ান ইলেভেনের সময় থেকেই আওয়ামী লীগ করে এমন তৃণমূলের প্রার্থীদেরই মনোনয়ন দেয়া হবে বলে আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে। আর জাতীয় সংসদের মতো এবারের উপজেলা নির্বাচনেও মনোনয়নের চূড়ান্ত ক্ষমতা দলের সভাপতির হাতেই থাকবে।
1