সময় এখন ডেস্ক:
নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের সন্ত্রা’সবিরোধী আইনে করা একটি মামলা তদন্ত করতে গিয়ে হেফাজত নেতা মামুনুল হকের সম্পৃক্ততা পেয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
তাকে ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে রিমান্ডে আনতে চায় বলেও জানিয়েছে সংস্থাটি। মামুনুল হক বর্তমানে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের রিমান্ডে রয়েছে।
মঙ্গলবার (২০ এপ্রিল) দুপুরে রাজধানীর মালিবাগে সিআইডির সদর দপ্তরে তদন্ত সংস্থাটির সিআইডি প্রধান ব্যারিস্টার মাহবুবুর রহমান। সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
এছাড়াও গত মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে হেফাজতের আন্দোলনে দেশের বিভিন্ন জেলায় অগ্নিসংযোগ, হাম’লা ও ভাঙচুর হয়েছে। এসব ঘটনার ইন্ধন ও নির্দেশদাতা এবং সরাসরি অংশগ্রহণকারীদের আইনের আওতায় আনার কথা জানিয়েছেন সিআইডি প্রধান।
তিনি বলেন, আমরা নারায়ণগঞ্জ, ঢাকা, কিশোরগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, চট্টগ্রাম জেলার ২৩টি মামলার তদন্তের দায়িত্ব পেয়েছি। আমাদের তদন্তের ভালো একটি সেটাপ রয়েছে। আমাদের সাইবার এক্সপার্ট, ডিএনএ, ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ রয়েছে। তারা ভিডিও ফুটেজগুলো দেখে শনাক্ত করার চেষ্টা করছে, কারা কারা এর সঙ্গে জড়িত রয়েছে।
ব্যারিস্টার মাহবুবুর রহমান বলেন, কারও দাবি-দাওয়া থাকতে পারে। তবে সেই দাবি আদায়ের গণতান্ত্রিক উপায় রয়েছে। কিন্তু বে-আইনি প্রক্রিয়ায় দাবি আদায়ের কোনও সুযোগ নেই। সবাইকে আইন মানতে হবে। অসন্তোষের প্রকাশ ভাঙচুর অগ্নিসংযোগ হতে পারে না।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ঘটনায় সরকারি দলের কারও সম্পৃক্ততা পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি না– জানতে চাইলে তিনি বলেন, কারও পরিচয় দেখে আমরা কাজ করি না। আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
হেফাজতের না’শকতার সময় আর্মস এন্ড এক্সপ্লোসিভের ব্যবহারের বিষয়ে তিনি বলেন, হেফাজত ইসলামের বিরু’দ্ধে এক্সপ্লোসিভ আইনে অনেক মামলা রয়েছে। আমরা সেগুলো তদন্ত করে দেখবো। সেই তদন্তে যদি কারও কাছে আর্মস পাওয়া যায় সেগুলো আমরা উদ্ধার করবো।
জোশের কারণে উসকানিমূলক বক্তব্য দিয়ে ফেলতাম: মামুনুল
ধর্মীয় বা অন্য সমাবেশে উত্তে’জক বা উসকানিমূলক বক্তব্য দেয়ার কারণ হিসেবে ‘জোশ চলে আসার’ কথা পুলিশকে জানিয়েছেন হেফাজতে ইসলামের নেতা মামুনুল হক।
রোববার গ্রেপ্তারের পরদিন ৭ দিনের রিমান্ডে নেয়া হয় হেফাজতের এই যুগ্ম মহাসচিবকে, যিনি ধর্মভিত্তিক দল খেলাফতে মজলিসেরও মহাসচিব হিসেবে দায়িত্বে আছেন।
তাকে মোহাম্মদপুরের জামিয়া রহমানিয়া আরাবিয়া মাদ্রাসা থেকে গ্রেপ্তার করে আনেন ঢাকা মহানগর পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার হারুন অর রশিদ।
মঙ্গলবার বিকেলে নিজ কার্যলয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে আসেন ডিসি হারুন। হেফাজত নেতাকে জেরায় কী তথ্য পাওয়া গেল, সে বিষয়ে কথা বলে তিনি।
এই পুলিশ কর্মকর্তা জানান, রিমান্ডে মামুনলকে তার কয়েকটি ওয়াজের ভিডিও দেখানো হয়, যেখানে তিনি সাধারণ মানুষকে উসকানি দিয়েছেন। প্রখ্যাত লেখক, সাংবাদিক শাহরিয়ার কবিরকে অ-শালীন ভাষায় আক্র’মণ করেছেন,
সাবেক মন্ত্রী হাসানুল হক ইনু এবং সুপ্রিমকোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি ও বীর মুক্তিযোদ্ধা শামছুদ্দিন চৌধুরী মানিককে যেখানে পাওয়া যাবে সেখানেই হাম’লা করতে নির্দেশ দিয়েছেন।
এসব বক্তব্যের জানতে চাওয়া হলে মামুনুল বলেন, ‘জোশের কারণে এসব মন্তব্য করে ফেলেছি।’
মামুনুল হকের বিভিন্ন বক্তব্যে প্রায়ই তিনি যে ভাষায় কথা বলেন, তাতে এটা স্পষ্ট যে, তিনি নিজেদেরকে বেশ ক্ষমতাধর হিসেবে মনে করেন। সরকারকে প্রায়শই হুঁশিয়ার করে দেন। তাদের কথা না শুনলে ক্ষমতা থেকে ফেলে দেয়ার কথা বলেন।
রাজনৈতিক দল হিসেবে খুবই ক্ষুদ্র শক্তির অধিকারী হলেও গত ২৫ মার্চ বায়তুল মোকাররমের সমাবেশে মামুনুল বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর অনুষ্ঠানে যদি নরেন্দ্র মোদি আসেন, তাহলে তারা সরকার পতনের ক্ষেত্রে তৈরি করবেন।
191