‘বাবরি মসজিদের নামে বিদেশ থেকে কোটি কোটি টাকা আনতেন মামুনুল’

0

সময় এখন ডেস্ক:

পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মো. হারুন অর রশীদ বলেছেন, ভারতের বাবরি মসজিদের নামে ভারতবিরোধী বিভিন্ন দেশ থেকে কোটি কোটি টাকা আনতেন হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক।

তিনি বলেন, মামুনুলকে রিমান্ডে নেয়ার পরে তার মোবাইলটি সিজ করা হয়। সেই মোবাইল থেকে অনেক তথ্য তারা পেয়েছেন। এর মধ্যে বিশেষ করে, তার মোবাইলে কাতার, দুবাই, পাকিস্থানসহ অনেক দেশ থেকে প্রচুর পরিমাণ টাকা আসত।

মো. হারুন অর রশীদ রিমান্ডে থাকা মামুনুল হকের বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান।

তিনি বলেন, রিমান্ডে থাকা মামুনুল হকের মোবাইল আমরা সিজ করেছি। ভারতের বাবরি মসজিদের নামে ভারতবিরোধী বিভিন্ন দেশ থেকে কোটি কোটি টাকা আনতেন মামুনুল। টাকাগুলো বিকাশ, হুন্ডিসহ বিভিন্ন মাধ্যমে আনা হতো। বাবরি মসজিদের নাম দিলে ইসলামিক সেন্টিমেন্ট পাবে অন্যদিকে ভারতবিরোধী মনোভাবের লোকদের কাছ থেকে সহযোগিতা পাবে এজন্য বাবরি মসজিদের নামে টাকাগুলো আনা হতো।

ডিসি বলেন, এই টাকা দিয়ে বাংলাদেশের বিভিন্ন মসজিদে ও কওমি মাদ্রাসায় উগ্র জঙ্গিবাদী কায়দায় কিছু কিছু লোককে মামুনুল হক ম্যাসেজ করেছিলেন। মামুনুলকে যেন বিভিন্ন মাদ্রাসায় ওয়াজ মাহফিলের জন্য বক্তা হিসেবে নেয়া হয় সেজন্য সে অনুরোধ জানাতেন।

পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, মামুনুল হকের আপন ভগ্নীপতি মাওলানা মুফতি নেয়ামতুল্লাহ দীর্ঘ ১৫-২০ বছর পাকিস্থানে ছিলেন। সেখানে একটি মাদ্রাসাও করেছিলেন। পাকিস্থানের একটি জঙ্গিগোষ্ঠীর সঙ্গে মামুনুলের সম্পৃক্ততা ছিল। ২০০৫ সালে তিনি পাকিস্থানে যান। সেখানে ৪৫ দিন থেকে পরামর্শ ও প্রশিক্ষণ নিয়ে এসে দেশের বিভিন্ন স্থানে সহিং’সতার ঘটনা ঘটান। এছাড়া সরকার উৎখাতে মামুনুল হক সব ধরনের পরিকল্পনাও করেন।

পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের এই উপ-কমিশনার বলেন, মুফতি নেয়ামতুল্লাহ ও মামুনুল হক একসঙ্গে ৪৫ দিন পাকিস্থানে অবস্থান করেন। সেখান থেকে জঙ্গি ও উগ্রবাদী মতাদর্শ নিয়ে দেশে ফেরেন তিনি। পাকিস্থানের একটি রাজনৈতিক ধর্মীয় সংগঠনকে মডেল হিসেবে মনেপ্রাণে বিশ্বাস করে বাংলাদেশে এসে মওদুদী, সালাফী, হানাফী, কওমি, দেওবন্দসহ সব মতাদর্শের মানুষকে একত্রিত করেন।

তিনি বলেন, মুফতি নেয়ামতুল্লাহ দেশে এসে মোহাম্মদপুরের জামিয়া রহমানিয়া মাদ্রাসার শিক্ষক হন। তখন মামুনুল হক তার বোনকে বিয়ে দেন নেয়ামতুল্লাহর সঙ্গে। ২১ আগস্ট যে গ্রেনেড হাম’লায় জড়িত মাওলানা তাজউদ্দিনের (বিএনপির এমপি পিন্টুর ভাই) সাথে নেয়ামতুল্লাহর ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্ব ছিল।

মামুনুল হকের বোন-জামাই নেয়ামতুল্লাহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তারও হয়েছিলেন। তখন তৎকালীন বিএনপি সরকারের সময় মামুনুল হকের বাবা বিএনপির চারদলীয় জোটের নেতা থাকায় ওই সরকারের আমলে জেল থেকে নেয়ামতুল্লাহকে ছাড়িয়ে এনেছিলেন।

ডিসি তেজগাঁও বলেন, বিভিন্ন দেশ থেকে বাংলাদেশে তারা যে টাকা আনতেন সেই টাকা দিয়ে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের বিএনপি-জামায়াত নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে চলছিলেন। মামুনুল হকের আপন ভায়রা-ভাই জামায়াত নেতা কামরুল ইসলাম আনসারী। তার সঙ্গে মামুনুলের জামায়াতের একটি গোপন আঁতাত রয়েছে।

হারুন অর রশীদ আরও বলেন, কওমি মাদ্রাসার ছাত্রদের ব্যবহার করে রাজনৈতিক ফায়দা নেয়ার পাঁয়তারা করছিলেন মামুনুল। রিমান্ডে শাপলা চত্বরে যাওয়া থেকে শুরু করে অনেক কথার বিষয়ে স্পষ্ট ব্যাখ্যা দিতে পারেননি তিনি। এছাড়া বিভিন্ন বক্তব্যের বিষয়ে সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা দিতে পারেননি তিনি।

শেয়ার করুন !
  • 191
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

এই ওয়েবসাইটের যাবতীয় লেখার বিষয়বস্তু, মতামত কিংবা মন্তব্য– লেখকের একান্তই নিজস্ব। somoyekhon.net-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এর মিল আছে, এমন সিদ্ধান্তে আসার কোনো যৌক্তিকতাই নেই। লেখকের মতামত, বক্তব্যের বিষয়বস্তু বা এর যথার্থতা নিয়ে somoyekhon.net আইনগত বা অন্য কোনো ধরনের কোনো প্রকার দায় বহন করে না।

Leave A Reply

error: Content is protected !!