সারাদেশের ওয়াজ মাহফিলগুলো থেকে বখরা পেত হেফাজত!‌

0

সময় এখন ডেস্ক:

রাষ্ট্রবিরোধী উসকানিমূলক ও ঔ’দ্ধত্যপূর্ণ বক্তব্য এবং সহিং’সতার মাধ্যমে সমাজে বি’শৃঙ্খলা সৃষ্টির দায়ে মামুনুল হকসহ হেফাজতে ইসলামের কয়েকজন শীর্ষ নেতাকে এরই মধ্যে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

সম্প্রতি কয়েকজন হেফাজত নেতাকে জিজ্ঞাসাবাদের পর সংগঠনের শীর্ষ নেতাদের কাছ থেকে পাওয়া গেছে নানা চাঞ্চল্যকর তথ্য।

হেফাজতে ইসলামের গ্রেপ্তার হওয়া নেতারা জিজ্ঞাসাবাদে ‘রাবেতাতুল ওয়ায়েজীন’ নামে একটি সংগঠনের বিষয়ে জানিয়েছেন। এর মাধ্যমে দেশব্যাপী ওয়াজ মাহফিল যারা করতেন, তাদের নিয়ন্ত্রণ করা হতো। প্রতিটি ওয়াজ মাহফিলে কাকে বক্তা হিসেবে নেয়া হবে, কত টাকা দিতে হবে, এসব নির্ধারণ এবং বক্তাদের আয়ের একটি অংশ পেত কমিটি।

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাংলাদেশের বেশিরভাগ ওয়াজ মাহফিলে চরম উসকানিমূলক বক্তব্য দেয়া হতো। আর এ ধরনের বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ ইউটিউব চ্যানেলগুলোতে আপলোড করা হলে সারাবিশ্বে উ’ন্মাদনা ছড়িয়ে পড়তো। আবার ইউটিউবে দর্শক বাড়ানো এবং তা থেকে বিপুল অর্থ আয়ের উদ্দেশ্যেও ইচ্ছেকৃতভাবে মাঠ গরম করা বক্তব্য দেয়া হতো বলে জানা যায়।

আরো জানা গেছে, হেফাজতে ইসলাম পশ্চিমবঙ্গসহ ভারতে বেশ কয়েকটি ইসলামপন্থী গোষ্ঠীর সঙ্গে এরই মধ্যে যোগাযোগ স্থাপন করেছে। পাশাপাশি হিজবুল মুজাহেদীনের মতো জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে এদের নিয়মিত যোগাযোগ রয়েছে।

তদন্ত সূত্রে জানা যায়, রাবেতাতুল ওয়ায়েজীনের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য ছিল বাংলাদেশের ওয়াজ মাহফিলের ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করা এবং সেসব অনুষ্ঠানে বক্তা হিসাবে হেফাজত সদস্যদের রাখতে চাপ দেয়া। আর কমিশন তো আছেই।

ওয়াজ মাহফিলগুলোতে অংশ নেয়া এসব বক্তাদের উগ্র ইসলাম ও জঙ্গিবাদ প্রচারের পাশাপাশি ভারতবিরোধী মনোভাব ছড়িয়ে দেয়ার বিষয়ে ভালোভাবে অবহিত করতেন হেফাজতে ইসলামের সদস্যরা। বক্তাদের ধর্মনিরপেক্ষ ব্যক্তি ও সংস্থার পাশাপাশি গণতান্ত্রিক শক্তিকে নির্মূল করারও দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল।

এছাড়া ইউটিউবে হাজারো চ্যানেল প্রতিষ্ঠা করে হেফাজতে ইসলাম। এর মাধ্যমে খিলাফতপন্থী সংগঠনটি ধর্মীয় উগ্রবাদ এবং জঙ্গিবাদের উ’ন্মাদনা ছড়িয়ে দেয়ার চক্রান্তে লিপ্ত হয়।

জানা গেছে, হেফাজত কর্মীরা প্রতিদিন ইউটিউব চ্যানেলগুলো থেকে হাজার হাজার ডলার উপার্জন করছে, যা হেফাজতে ইসলামের সাইবার ইউনিটগুলোর চালিকাশক্তি হিসেবে ব্যবহার করা হয়।

হেফাজতে ইসলাম সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, বিশেষত ফেসবুকের ওপর আধিপত্য প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে মাদ্রাসা শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের সমন্বয়ে সাইবার টিম গঠন করেছে।

এই গোষ্ঠীর হাই-কমান্ডের নির্দেশে ২০ থেকে ২৫ হাজার মাদ্রাসা শিক্ষার্থী ও শিক্ষক সমন্বিত সাইবার টিমের বেশ কয়েকটি দল রয়েছে। তাদের কাজ, হেফাজত নেতাদের বিরু’দ্ধে দেয়া ফেসবুক পোস্টগুলোতে নজর রাখা। সেসব পোস্ট ডাউন করার জন্য তারা কাজ করে। এমনকি ধর্মনিরপেক্ষতা, সেক্যুলারিজম, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পক্ষের পোস্টগুলোর বিরু’দ্ধেও তারা রিপোর্ট করে।

শেয়ার করুন !
  • 144
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

এই ওয়েবসাইটের যাবতীয় লেখার বিষয়বস্তু, মতামত কিংবা মন্তব্য– লেখকের একান্তই নিজস্ব। somoyekhon.net-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এর মিল আছে, এমন সিদ্ধান্তে আসার কোনো যৌক্তিকতাই নেই। লেখকের মতামত, বক্তব্যের বিষয়বস্তু বা এর যথার্থতা নিয়ে somoyekhon.net আইনগত বা অন্য কোনো ধরনের কোনো প্রকার দায় বহন করে না।

Leave A Reply

error: Content is protected !!