ঝালকাঠি সংবাদদাতা:
এক হিন্দু দম্পতিকে তাদের দোকানে আটকে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে হত্যার চেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনাটি ঘটেছে ঝালকাঠি জেলার রাজাপুর উপজেলায়। রাজাপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) জাহিদ হোসেন গণমাধ্যমকে জানান, শুক্তাগর ইউনিয়নে বুধবার রাতে এ আগুনে ওই দম্পতি প্রাণে বেঁচে গেলেও কয়েক লক্ষ টাকার মালামালসহ তাদের পুরো দোকানটি ভস্মীভূত হয়েছে।
ক্ষতিগ্রস্ত গোপাল চন্দ্র বিশ্বাস (৫৫) জানান, রাত ১০টার দিকে দোকান বন্ধ করে ছেলে সাগর বিশ্বাস (২২) বাড়ি চলে যায়। দোকানে আমি ও স্ত্রী মঞ্জু বিশ্বাস (৪৫) ঘুমিয়ে পড়ি। দোকান পাহারায় রাখার জন্য দীর্ঘদিন ধরে আমরা রাতে দোকানে অবস্থান করে আসছি। হঠাৎ রাত ২টার দিকে আগুনের তাপে আমাদের দুজনের ঘুম ভেঙে যায়। এ সময় দোকানের দরজা বাইরে থেকে আটকে দেয়া রয়েছে দেখতে পেয়ে টিনের চালা ভেঙে আমরা লাফিয়ে পড়ে কোনোমতে প্রাণ বাঁচাই।
এদিকে আগুনের খবর ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে গেলেও ততক্ষণে মালামালসহ দোকানটি সম্পূর্ণ পুড়ে গেছে। এ ঘটনায় জড়িত কারো নাম বলতে তারা ভয় পাচ্ছেন বলে জানান গোপাল।
শুক্তাগর ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য নূরে আলম মল্লিক জানান, বিষয়টি পূর্বশক্রতার কারণে পরিকল্পিত বলে আমার ধারণা। জমিজমা নিয়ে এলাকায় একটি মহলের সাথে গোপলদের পূর্বশত্রুতাও রয়েছে। এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করছি আমি। অপরাধী যে-ই হোক, ধরা পড়তে হবে।
ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে রাজাপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) জাহিদ হোসেন জানান, এ ঘটনায় একটি মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। কে বা কারা অগুন লাগিয়েছে তা এখনও নিশ্চিত না হওয়া যায়নি। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ঝালকাঠি জেলা হিন্দু-বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ সভাপতি ও রাজাপুর উপজেলার সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান চন্দ্রশেখর হালদার বলেন, রাজাপুর উপজেলা সদর থেকে ৬ কি.মি. উত্তর-পশ্চিমে শুক্তাগর গ্রামে বংশ পরম্পরায় বসবাস করে আসছেন গোপাল বিশ্বাসের পরিবার। বাড়ির পাশেই চাল-ডাল তেলসহ একটি মুদি দোকান বসিয়ে গোপাল বিশ্বাস, তার স্ত্রী মঞ্জু বিশ্বাস এবং বড় ছেলে সাগর বিশ্বাসকে নিয়ে ব্যবসা চালিয়ে আসছেন।
২০১৪ সালেও এ পরিবারটির মন্দিরে আগুন দেওয়া হয় জানিয়ে চন্দ্র শেখর বলেন, বিষয়টি পরিকল্পিত। এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে বিচার দাবি করছি।
9