‘এ্যালা ঘর পায়া হামার ভালো হইছে, দোয়া করি হাসিনার লাগি’

0

কুড়িগ্রাম সংবাদদাতা:

অন্ধ বৃদ্ধা ছমিরন বেওয়া ভিক্ষে করে জীবন-জীবিকা চালান। পৈত্রিক ভিটে গুজিমারীর চরে চলছিল তার সংসার। ব্রহ্মপূত্র নদের করাল গ্রাসে একদিন সব কিছু হারিয়ে আশ্রয় নেন অন্যের জায়গায়। এভাবে ৪ বার ভাঙনের শিকার হয়ে আশ্রয় নেন উলিপুর উপজেলার হাতিয়া ইউনিয়নের অনন্তপুর গ্রামে। এখানে ২ সন্তান নিয়ে ঝুপড়ি ঘরে মানবেতর জীবন কাটাতে থাকেন। বর্তমানে প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ন কর্মসূচীর আওতায় ‘জমি আছে, ঘর নাই’ প্রকল্পের মাধ্যমে ঘর পেয়ে খুশি পরিবারটি।

ঘর পেয়ে অসহায় বৃদ্ধা ছমিরন বেওয়া বলেন, আজ শান্তিতে ঘুমাতে পারছি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ। তার জন্য অনেক দোয়া করি আমাদের মতো সহায় সম্বলহীন পরিবারগুলোর পাশে দাঁড়ানোর জন্য। উপজেলার হাতিয়া ইউনিয়নের চলাঞ্চলের পরিবারসহ দূর্গাপুর ইউনিয়নের ৪০০ পরিবার প্রধানমন্ত্রীর দেয়া ঘর পেয়েছেন। ঘর পেয়ে খুশি এই গৃহহীন পরিবারগুলো।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস সূত্রে জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ন কর্মসুচীর আওতায় জমি আছে ঘর নাই প্রকল্পের অধিনে উপজেলার নদী ভাঙ্গন কবলিত হাতিয়া ইউনিয়নে ২০০ ও দুর্গাপুর ইউনিয়নের ২০০ পরিবারের মাঝে একটি করে আধা পাকা ঘর নির্মাণ করে দেয়া হয়েছে। রবি দাস সম্প্রদায়সহ নদী ভাঙ্গনের শিকার পরিবারগুলো যাদের জমি আছে ঘর নাই তাদের এ কর্মসুচীর আওতায় আনা হয়েছে। প্রতিটি ঘর নির্মান করতে ব্যয় হয়েছে প্রায় লক্ষাধিক টাকা।

হাতিয়া গ্রামের বাসিন্দা বিধবা তারামনী রবিদাস (৬৫) এর সাথে কথা হলে তিনি জানান, নদী হামার সইগ ভাঙ্গি নিয়ে গেইছে। ১৫ বছর থাকি মাইনষের জাগাত আছনোং, এ্যালা ঘর পায়া হামার ভালো হইছে। আইতত শান্তিতে নিন্দ পারবের পাই। হাসিনার লাগি দোয়া করি।

কথা হয় ওই এলাকার মনা রাম (৬০), আজিবে (৫০), মজিবর (৬০), শহীদুল ইসলাম (৬২), ভ্যান চালক নুরুজ্জামান (৫০) ও মঞ্জিলে বেওয়া (৩৫) সহ অনেকের সাথে। তারা ঘর পেয়ে অনেক খুশি। তারা বলেন, অনেক কিছু সাহায্য পাইছি, কিন্তু ঘর পাব এমন আশা কখনও করিনি। আল্লাহ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দীর্ঘজীবি করুক।

হাতিয়া ইউপি চেয়ারম্যান বিএম আবুল হোসেন বলেন, বাঁধের রাস্তায় আশ্রিত ২ হাজার পরিবার উচ্ছেদের পর মানবেতর জীবন-যাপন করছেন। আগামীতে এসব দুস্থ, নদী ভাঙ্গা ও অসহায় পরিবারগুলোর মাথা গোঁজার ঠাঁই হিসেবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর এ প্রকল্পের মাধ্যমে ঘরের ব্যবস্থা করবেন।

উপজেলা প্রকল্প বাস্থবায়ন অফিসার রবিউল ইসলাম জানান, চাহিদার তুলনায় বরাদ্দ কম হওয়ায় সব মানুষকে ঘর দেয়া সম্ভব হয়নি।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আব্দুল কাদের জানান, চাহিদা অনুযায়ী তালিকা করা হয়েছে। বরাদ্দ সাপেক্ষে বাকীদের পর্যায়ক্রমে এ প্রকল্পের আওতায় আনা হবে।

শেয়ার করুন !
  • 4
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

এই ওয়েবসাইটের যাবতীয় লেখার বিষয়বস্তু, মতামত কিংবা মন্তব্য– লেখকের একান্তই নিজস্ব। somoyekhon.net-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এর মিল আছে, এমন সিদ্ধান্তে আসার কোনো যৌক্তিকতাই নেই। লেখকের মতামত, বক্তব্যের বিষয়বস্তু বা এর যথার্থতা নিয়ে somoyekhon.net আইনগত বা অন্য কোনো ধরনের কোনো প্রকার দায় বহন করে না।

Leave A Reply

error: Content is protected !!