সময় এখন ডেস্ক:
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নোবেল পুরস্কার পাওয়ার উপযুক্ত বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, দুঃখ লাগে, অশান্তির দেশে নোবেল শান্তি পুরস্কার যায়। যেখানে যুদ্ধবিগ্রহ লেগে আছে, গ- হ’ত্যাআছে— সেখানে নোবেল যায়। অথচ পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তি চুক্তি, উইমেন এমপাওয়ারমেন্ট, ১২ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয়, দারিদ্র্য বিমোচন— এমন অনেক সাফল্য শেখ হাসিনার। নোবেল প্রাপ্য ছিল শেখ হাসিনার।
রোববার (১৬ মে) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে দলটির তথ্য ও গবেষণা উপ-কমিটির উদ্যোগে ‘শেখ হাসিনার চার দশক : বদলে যাওয়া বাংলাদেশের অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রা’ শীর্ষক তথ্যচিত্র প্রদর্শনীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।
সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের তার সরকারি বাসভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অনুষ্ঠানে যুক্ত হন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, আন্তর্জাতিকভাবে একটি স্বীকৃতি শেখ হাসিনার প্রাপ্য ছিল। অনেক অর্জন থাকা সত্ত্বেও আন্তর্জাতিক একটি স্বীকৃতি তিনি হয়তো পাননি, কিন্তু বাংলাদেশের মানুষের হৃদয়ে শেখ হাসিনার জন্য যে নোবেল পুরস্কার মানুষের অন্তরে লেখা হয়ে গেছে— এই পুরস্কার কেউ কোনোদিন ছিনিয়ে নিতে পারবে না। অনন্তকাল ধরে বাংলার মানুষ তাকে স্বীকৃতি দেবে।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু ছিলেন রাজনীতির রোল মডেল। উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে শেখ হাসিনার নাম চিরভাস্বর হয়ে থাকবে।
আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ড. মশিউর রহমানের সভাপতিত্বে আলোচনায় আরও অংশ নেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আফজাল হোসেন, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক ড. সেলিম মাহমুদ প্রমুখ।
বাংলাদেশের ইতিহাস কেউ বিকৃত করতে পারবে না: শেখ হাসিনা
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, অনেক ঝড় মাথায় নিয়ে দেশে আসতে হয়েছিল। এই বাংলাদেশ স্বাধীন দেশ, এটা স্বাধীনই থাকবে। জাতির পিতাকে হ’ত্যারপর তখনকার সরকার অনেক বাধা দিয়েছিল যাতে আমি দেশে ফিরতে না পারি। কিন্তু সব ঝড়-ঝাপ্টা অতিক্রম করেই দেশে ফিরেছি এবং আজকের এই অবস্থানে আসতে পেরেছি।
সোমবার (১৭ মে) মন্ত্রিসভার বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন।
আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, ১৭ মে ঝড় মাথায় নিয়েই দেশে এসেছিলাম। আজ একটা আত্মবিশ্বাস তৈরি হয়েছে, এই বাংলাদেশের ইতিহাস আর কেউ কোনোদিন বিকৃত করতে বা মুছতে পারবে না।
উল্লেখ্য, আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৪০তম স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস আজ ১৭ মে। ১৯৮১ সালের এদিনে দীর্ঘ নির্বাসন শেষে তিনি বাংলার মাটিতে ফিরে আসেন।
সেদিন বিকেল সাড়ে ৪টায় ইন্ডিয়ান এয়ারলাইন্সের বোয়িং বিমানে ভারতের রাজধানী দিল্লি থেকে কলকাতা হয়ে তৎকালীন ঢাকা কুর্মিটোলা বিমানবন্দরে এসে পৌঁছান আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হ’ত্যাকরা হয়। এ সময় তাঁর দুই কন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা প্রবাসে থাকায় ভাগ্যক্রমে বেঁচে যান।
পরবর্তী সময়ে ১৯৮১ সালের ১৪, ১৫ ও ১৬ ফেব্রুয়ারিতে ঢাকায় অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের জাতীয় কাউন্সিল অধিবেশনে শেখ হাসিনার অনুপস্থিতিতে তাঁকে আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত করা হয়। এরপরই তিনি ১৭ মে দেশে ফিরে আসেন।
শেখ হাসিনাকে বিমানবন্দরে স্বাগত জানানোর জন্য উপস্থিত প্রায় ১৫ লাখ মানুষের হৃদয় ছোঁয়া ভালবাসার জবাবে তিনি সেদিন বলেছিলেন, বাংলার মানুষের পাশে থেকে মুক্তি সংগ্রামে অংশ নেওয়ার জন্য আমি দেশে এসেছি। আমি আওয়ামী লীগের নেত্রী হওয়ার জন্য আসিনি। আপনাদের বোন হিসেবে, মেয়ে হিসেবে, বঙ্গবন্ধুর আদর্শে বিশ্বাসী আওয়ামী লীগের কর্মী হিসেবে আমি আপনাদের পাশে থাকতে চাই।
স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন দেশব্যাপী প্রতিবছর বিস্তারিত কর্মসূচি পালন করলেও এবার করোনা পরিস্থিতির কারণে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত পরিসরে দিবসটি পালন করা হচ্ছে।