বিএনপির ৭ শীর্ষ নেতা ঘুরপথে দেশ ছাড়ছেন, গন্তব্য- লন্ডন!

0

বিশেষ সংবাদদাতা:

ডাক এসেছে লন্ডন থেকে। বিএনপির শীর্ষ নেতাদের যেতে হবে লন্ডনে, তারেক জিয়ার জরুরী তলব। ঢাকা থেকে সরাসরি লন্ডন যেতে যদি বাধা পড়ে, সে কারণে তারা যাচ্ছেন ঘুরপথে। এখন পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে, বিএনপির শীর্ষ ৭ নেতা লন্ডনে যাওয়ার নিদের্শনা পেয়েছেন। এরা হলেন- বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশারফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী এবং ড. আবদুল মঈন খান, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আওয়াল মিন্টু এবং ব্যারিস্টার কায়সার কামাল। আগামী ৭ থেকে ১৫ দিনের মধ্যে এরা বিদেশে পাড়ি দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

জানা গেছে, তাদের মধ্যে ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ শুধু সরাসরি লন্ডনে যাচ্ছেন। তার কাছে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি ফেলোশিপ আমন্ত্রণ রয়েছে। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর যাচ্ছেন ব্যাংকক। সেখানে তিনি স্বাস্থ্য পরীক্ষা করিয়ে লন্ডনে যাবেন। ব্যবসায়ীক কাজে ভারতে যাচ্ছেন আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। সেখান থেকে তার যুক্তরাজ্য যাওয়ার কথা। ড. খন্দকার মোশারফ হোসেন আদালতের অনুমতি নিয়ে সিঙ্গাপুরে যাবেন উন্নত চিকিৎসার জন্য। আবদুল আউয়াল মিন্টু লন্ডনে যাবেন ব্যাংকক দিয়ে।

জানা গেছে, ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনের পর বিএনপিতে কোন্দল, হতাশা এবং বিভক্তির প্রেক্ষাপটে এই লন্ডন বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছে। এখানে দল পুনর্গঠন, নতুন নেতৃত্বের বিষয়টি সবথেকে গুরুত্ব পাবে বলে দলের একাধিক নেতা নিশ্চিত করেছেন। বর্তমান বাস্তবতায় বিএনপির পক্ষে কাউন্সিল সম্ভব নয়, তাই লন্ডন বৈঠকেই হয়তো কাউকে ভারপ্রাপ্ত মহাসচিবের দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে।

একটি সূত্র বলছে, সাংগঠনিক বিষয় ছাড়াও নির্বাচন পরবর্তী রাজনীতি এবং করণীয় নিয়ে আলোচনা ও সিদ্ধান্ত হবে লন্ডন বৈঠকে। বিএনপি এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট থেকে যে ৮ জন নির্বাচিত হয়েছেন তারা সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নেবেন কিনা, সে ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে লন্ডনেই। বিএনপি নেতারা সংসদে যোগ না দেওয়ার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিলেও, সংসদে যোগ দেওয়ার পক্ষে বিএনপির উপর চাপ বাড়ছে। আসন্ন উপজেলা নির্বাচন নিয়েও বিএনপি দ্বিধা বিভক্ত। দলের শীর্ষ নেতারা উপজেলা নির্বাচন বর্জনের পক্ষে থাকলেও তৃণমূল এই নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য মুখিয়ে আছে। ঢাকা সিটি উত্তরের নির্বাচনের ব্যাপারেও তারেক জিয়ার সিদ্ধান্ত প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন বিএনপির শীর্ষ নেতারা।

বিএনপির একজন নেতা বলেছেন, নির্বাচনের পর থেকেই বিএনপিতে এক অরাজক পরিস্থিতি চলছে। দলের সিনিয়র নেতারা মহাসচিবকে মানছেন না। দলের নেতৃত্বকে চ্যালেঞ্জ করছে তৃণমূল। লন্ডন থেকে বিভক্তি দূর করতে তারেক জিয়া বিভিন্ন সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে ধারাবাহিক কথা বলছেন বলে জানা গেছে। কিন্তু এতে সমস্যার সমাধান হয়নি এতটুকু। ‘আর টেলিফোনে এত বিস্তারিত আলাপও করা যায় না’- জানালেন একজন নেতা। এ কারণেই লন্ডনে বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছে। এই বৈঠকেই বিএনপির আগামী করণীয় নির্ধারিত হবে বলে জানা গেছে। বিএনপির একজন সিনিয়র নেতা বলেছেন, ‘সবার সামনে খোলামেলা আলোচনা করলে নেতাদের দূরত্ব কমবে। দলের মধ্যে হতাশাও কাটবে।’

শেয়ার করুন !
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

এই ওয়েবসাইটের যাবতীয় লেখার বিষয়বস্তু, মতামত কিংবা মন্তব্য– লেখকের একান্তই নিজস্ব। somoyekhon.net-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এর মিল আছে, এমন সিদ্ধান্তে আসার কোনো যৌক্তিকতাই নেই। লেখকের মতামত, বক্তব্যের বিষয়বস্তু বা এর যথার্থতা নিয়ে somoyekhon.net আইনগত বা অন্য কোনো ধরনের কোনো প্রকার দায় বহন করে না।

Leave A Reply

error: Content is protected !!