বিশ্ব বিচিত্রা ডেস্ক:
ইউরোপের রেনেসাঁ যুগের কালজয়ী চিত্রশিল্পী লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চি। বিখ্যাত চিত্রকর্ম মোনালিসার কারিগর। চিত্রশিল্পীর পরিচয় ছাড়াও তিনি একাধারে বিজ্ঞানী, প্রকৌশলী ও স্থপতি। ১৫১৯ সালে মারা যান ভিঞ্চি। প্রতিভাবান এই চিত্রশিল্পীর বংশগত প্রোফাইল তৈরি করতে কয়েক দশক ধরেই কাজ করে আসছেন একদল গবেষক।
ভিঞ্চি বিয়ে করেননি। আজীবন চিরকুমার ছিলেন। ফলে তার পরবর্তী প্রজন্ম নিয়ে সহজে বিস্তারিত জানা যায় না। তবে এবার ইতালিতে ভিঞ্চির ১৪ জন জীবিত বংশধরের খোঁজ মিলেছে। হিউম্যান ইভোলিউশন জার্নালের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান।
ভিঞ্চির বংশগত প্রোফাইল তৈরি করতে কাজ করছেন ইতিহাসবিদ আলেসান্দ্রো ভেজ্জোসি ও আগ্নেসো সাবাতো। খোঁজ পাওয়াদের বয়স ১ থেকে ৮৫ বছরের মধ্যে বলে জানান তারা।
এবার এদের ডিএনএ সংগ্রহ করে ‘ওয়াই’ ক্রোমোজোম নিয়ে গবেষণা করা হবে। ক্রোমোজোমটি সাধারণত বাবার দেহ থেকে ছেলের দেহে আসে। এটি ২৫ প্রজন্ম পর্যন্ত প্রায় অপরিবর্তিত থাকে। বিখ্যাত এ চিত্রশিল্পীর প্রতিভা নিয়ে রহস্যের কিনারা করতেই এ ধরনের গবেষণায় হাত দেন দুই ইতিহাসবিদ।
ভিঞ্চির আগের ও পরবর্তী ২১ প্রজন্মের পুরুষদের তালিকা করার কাজ সম্পন্ন হয়েছে। সবার ওপরে রাখা হয়েছে তার দাদুকে, যার জন্ম ১৩৩১ সালে। ইতিমধ্যেই এদের অনেকের কবর থেকে ডিএনএ সংগ্রহ করা হয়েছে।
এর আগে ২০১৬ সালে ভিঞ্চির ৩৫ জন জীবিত বংশধরের খোঁজ পাওয়া যায়। এদের মধ্যে ছিলেন সিনেমা নির্মাতা ফ্রাঙ্কো জেফেরেলি। কিন্তু তারা পুরুষানুক্রমে জন্ম নেওয়া নয়। ফলে তাদের ডিএনএতে যে ‘ওয়াই’ ক্রোমোজোম পাওয়া যাবে, সেগুলো ভিঞ্চির সঙ্গে মিলবে না। এতে যথাযথ তথ্য পাওয়া সম্ভব নয় বলে আবারও সন্ধান শুরু হয়।
অবশেষে খোঁজ মিলেছে ১৪ জনের। আলেসান্দ্রো ভেজ্জোসি জানান, ভিঞ্চি যেখানে থাকতেন এই ১৪ জন এখন আর সেই এলাকায় থাকেন না। পাশের এলাকায় থাকেন। তারা সাধারণ চাকরি করেন।
প্রতিভাবান এই শিল্পী মৃত্যুবরণ করেছেন ১৫১৯ সালে। শুধু চিত্রশিল্পী হিসেবে নয়, লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চি একাধারে ছিলেন সুনিপুণ ভাস্কর, স্থপতি, প্রকৌশলী, শরীরতত্ত্ববিদ, সঙ্গীতজ্ঞ, ভূতত্ত্ববিদসহ আরো অনেক কিছু।
মোনালিসা, দ্য লাস্ট সাপার, ভিট্টুভিয়ান ম্যান, সালভাতর মুন্ডি কিংবা দ্য ভার্জিন অব দ্য রকস তার একমাত্র পরিচয় নয়। পাখির ওড়ার কৌশল নিয়ে শ-পাঁচেক স্কেচ এঁকেছেন তিনি। উড়োজাহাজের নকশা করেছেন। মানুষের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের নিখুঁত ছবি এঁকে গেছেন আজ থেকে ৭০০ বছরের আগের বাস্তবতায় বসে।
হাজারো অক্ষরে নোটবইয়ের পাতায় পাতায় লিখে গেছেন তার দুর্দান্ত সব প্রকৌশলী ও দূরদর্শী চিন্তাভাবনাগুলো।