শেখ হাসিনা এবারও সফল হবেন- সবাই এমনটা ভাবছে কেন?

0

বিশেষ সংবাদদাতা:

সদ্য সমাপ্ত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ৪র্থ বারের মতো দায়িত্ব নিয়েছেন শেখ হাসিনা। আগের চাইতেও তাঁকে এবার অনেক বেশি আত্মবিশ্বাসী মনে হচ্ছে। মাত্র ৩ সপ্তাহে প্রধানমন্ত্রী এমন কিছু পদক্ষেপ এবং সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, যাতে জনমনে আশাবাদ সৃষ্টি হয়েছে। তিনি কোন রাখঢাক না রেখেই বলেছেন, তিনি বাংলাদেশকে নতুন উচ্চতায় নিতে চান। দুর্নীতিমুক্ত দেশ গড়তে চান। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, গত দুবারের মত এবারও তিনি সফল হবেন। লক্ষ্য অর্জনে দৃঢ়। লক্ষ্য অর্জনের পথে এক চুল ছাড় দিতেও রাজি নন। কেন তিনি এবারও সফল হবেন, এ ব্যাপারে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা পেয়েছেন বেশ কিছু কারণ:

১. মন্ত্রিসভা থেকে সিনিয়রদের বাদ দেয়া: প্রধানমন্ত্রী এবারও সফল হবেন, কারণ মন্ত্রিসভায় সবাই তাঁর প্রতি অনুগত। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ অক্ষরে অক্ষরে পালনের চেষ্টা করবেন নতুন মন্ত্রীরা। ফলে মন্ত্রণালয়গুলোতে কাজ হবে দ্রুত এবং সততার সঙ্গে।

২. মন্ত্রিসভা স্বজনমুক্ত করা: প্রধানমন্ত্রী তাঁর কোন আত্মীয় স্বজনকে মন্ত্রিসভায় অন্তর্ভুক্ত করেননি। এতে প্রধানমন্ত্রীর মনোভাব স্পষ্ট হয়েছে। তিনি কারো প্রতি সহানুভূতি বা দরদ দেখাতে চান না। তিনি চান কাজ। এর ফলে দুর্নীতির সামান্যতম স্পর্শ থেকেও তিনি নিজেকে নিজেকে মুক্ত রাখলেন।

৩. দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রথম থেকেই কঠোর অবস্থান: প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণের প্রথম দিন থেকেই দুর্নীতির বিরুদ্ধে সোচ্ছার। টানা ৩য় মেয়াদে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নিয়ে তিনি এপর্যন্ত যতোগুলো বৈঠক এবং সভা করেছেন, তার প্রত্যেকটিতে দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর বার্তা দিয়েছেন। সবাই বুঝে গেছে, এবার দুর্নীতি করলে ছাড় নেই। প্রথমদিন থেকেই সরকারের মন্ত্রী এবং কর্মকর্তারা বদলে গেছেন।

৪. নির্বাচনী ইশতেহার সামনে আনা: নির্বাচনী ইশতেহার ছিলো রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য স্রেফ আনুষ্ঠানিকতা। নির্বাচনের পর ক্ষমতাসীন দল এবং তার নেতারা এটার কথা ভুলে যান। সরকার চলে গতানুগতিক ধারায়। কিন্তু এবার প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনী ইশতেহারকে মন্ত্রণালয়ের কাজের সঙ্গে যুক্ত করেছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, মন্ত্রণালয়গুলোকে নির্বাচনী ইশতেহারের সঙ্গে সমন্বিত কর্ম পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। ১৯ জানুয়ারির জনসভাতেও প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করেছেন যে, নির্বাচনী ইশতেহার অক্ষরে অক্ষরে পালন করা হবে।

৫. মন্ত্রণালয় পরিদর্শন: দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই প্রধানমন্ত্রী পালাক্রমে সবগুলো মন্ত্রণালয় পরিদর্শনে যাচ্ছেন। দিক নির্দেশনা দিচ্ছেন। এর ফলে একদিকে যেমন নতুন মন্ত্রীরা সহজেই বুঝবেন তাদের কী করতে হবে, অন্যদিকে মন্ত্রণালয়গুলো শুরুর আড়ষ্টতা কাটিয়ে কর্মমুখর হয়ে উঠবেন।

৬. চুক্তিভিত্তিক নিয়োগে নিরুৎসাহ: নতুন দায়িত্ব নিয়ে বর্তমান সরকার কোন চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেয়নি। চুক্তিভিত্তিক নিয়োগকে নিরুৎসাহিত করার কথাও বলা হয়েছে এর ফলে মাঝারি পর্যায়ে কর্মকর্তাদের মধ্যে কর্মস্পৃহা বাড়বে। এতে কাজের গতি বাড়বে।

প্রধানমন্ত্রী এমনিতেই কঠোর পরিশ্রমী। যারা তার সঙ্গে কাজ করেন, তারা স্বীকার করেন যে, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কাজে পেরে ওঠা মুশকিল। এবার তাঁর মধ্যে শুরু থেকেই কাজের ক্ষুধা তীব্র। মনে হচ্ছে, তিনি লক্ষ্য অর্জনে আগামী পাঁচটা বছর নির্ঘুম কাটাবেন। এজন্যই হয়তো সফল হবেন তিনি।

শেয়ার করুন !
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

এই ওয়েবসাইটের যাবতীয় লেখার বিষয়বস্তু, মতামত কিংবা মন্তব্য– লেখকের একান্তই নিজস্ব। somoyekhon.net-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এর মিল আছে, এমন সিদ্ধান্তে আসার কোনো যৌক্তিকতাই নেই। লেখকের মতামত, বক্তব্যের বিষয়বস্তু বা এর যথার্থতা নিয়ে somoyekhon.net আইনগত বা অন্য কোনো ধরনের কোনো প্রকার দায় বহন করে না।

Leave A Reply

error: Content is protected !!