সুন্দরবনে আবারও স্যাটেলাইট ট্রান্সমিটারযুক্ত বিরল প্রজাতির কচ্ছপ উদ্ধার!

0

বাগেরহাট সংবাদদাতা:

প্রায় ৪০ বছর বয়সী ও সোয়া ১০ কেজি ওজনের একটি স্যাটেলাইট ট্রান্সমিটারযুক্ত বাটাগুর বাসকা প্রজাতির বিলুপ্তপ্রায় একটি কচ্ছপ ধরা পড়েছে সুন্দরবনের নদীতে। এর আগে গত সোমবার দুপুরে মোংলার মিঠাখালীর পুটিমারী খালে এক জেলের জালে বেশ বড় আকৃতির আরও একটি একই প্রজাতির কচ্ছপ ধরা পড়েছিল। বুধবার সুন্দরবনের সুতারখালী নদীতে মাছ ধরার সময় কুলসুম নামে এক নারী জেলের জালে স্যাটেলাইট ট্রান্সমিটার বসানো এই কচ্ছপটি ধরা পড়ে।

পরে শুক্রবার সুন্দরবনের করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রের কর্তৃপক্ষের কাছে এটিকে হস্তান্তর করা হয়। এদিন শুক্রবার দুপুরে কচ্ছপটিকে উদ্ধার করে সুন্দরবনের করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রে নিয়ে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।

প্রসঙ্গত, স্যাটেলাইট জিপিএস ট্র্যাকিং ট্রান্সমিটার সিস্টেম সংযোজিত এ বাটাগুর বাসকা ছাড়ার মূল উদ্দেশ্য ছিল এর বিচরণক্ষেত্র, স্বভাব, পানির ওপরে রোদ পোহানো ও পানির নিচের অবস্থান নির্ণয়সহ প্রজননক্ষেত্র সম্পর্কে গবেষণার তথ্য সংগ্রহ। আর এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে অস্ট্রিয়ার ভিয়েনা জুটিএসএ আমেরিকা ও বাংলাদেশ বনবিভাগ।

পূর্ব সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের করমজলে এ প্রজেক্টের কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে আসছে। এছাড়া স্যাটেলাইটের মাধ্যমে পাওয়া তথ্যাদি সংগ্রহ করা হয়ে থাকে দেশ-বিদেশের কন্ট্রোল রুম থেকেই।

গত দুদিনের ব্যবধানে উদ্ধার হওয়া কচ্ছপ দুটিকে বর্তমানে সুন্দরবনের করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।

পূর্ব সুন্দরবনের বাটাগুর বাসকা প্রজেক্টর স্টেশন ম্যানেজার আ. রব জানান, সুন্দরবনের নলিয়ান রেঞ্জের কালাবগী স্টেশনের আওতাধীন সুতারখালী নদীতে বুধবার দুপুরে কুলসুম নামে এক নারী মাছ ধরছিলেন। এক পর্যায়ে তার জালে স্যাটেলাইট ট্রান্সমিটার বসানো কচ্ছপটি ধরা পড়ে। পরে তিনি বন বিভাগের কালাবগী স্টেশনে কচ্ছপটিকে হস্তান্তর করেন।

এর আগে গত সোমবার দুপুরে মোংলার মিঠাখালীর পুটিমারী খালে এক জেলের জালে বেশ বড় আকৃতির আরও একটি কচ্ছপ (বাটাগুর বাসকা) ধরা পড়ে। পরে বিক্রির জন্য সেটা বাজারে নেয়া হলে বন বিভাগ কচ্ছপটিকে উদ্ধার করে।

বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞ আ. রব আরও বলেন, ২০১৭ সালের ২ অক্টোবর স্যাটেলাইট ট্রান্সমিটার বসানো বিলুপ্তি প্রায় এ প্রজাতির ৫টি বাটাগুর কচ্ছপ সুন্দরবনের কালিরচরের সমুদ্র মোহনায় ছাড়া হয়েছিল। এ প্রজেক্টের মূল উদ্দেশ্য হলো বিরল প্রজাতির বাটাগুর বাসকা কচ্ছপের প্রজনন বৃদ্ধির মাধ্যমে এর বংশ বিস্তার করা।

পরে সুন্দরবনের নিলকমল ও তালতলী এলাকায় ২টি কচ্ছপ আগেই মারা গেছে। বাকি ৩টির মধ্যে সোমবার ও বুধবার উদ্ধার হওয়া কচ্ছপ দুটির শারিরীক সুস্থতা ফিরে পেলে কর্তৃপক্ষের নির্দেশ মোতাবেক আবারো ছাড়া হবে সমুদ্র মোহনায়।

শেয়ার করুন !
  • 1
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

এই ওয়েবসাইটের যাবতীয় লেখার বিষয়বস্তু, মতামত কিংবা মন্তব্য– লেখকের একান্তই নিজস্ব। somoyekhon.net-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এর মিল আছে, এমন সিদ্ধান্তে আসার কোনো যৌক্তিকতাই নেই। লেখকের মতামত, বক্তব্যের বিষয়বস্তু বা এর যথার্থতা নিয়ে somoyekhon.net আইনগত বা অন্য কোনো ধরনের কোনো প্রকার দায় বহন করে না।

Leave A Reply

error: Content is protected !!