লাইফ স্টাইল ডেস্ক:
ঘুমের ঘরে নাক ডাকার সমস্যাকে আমরা যতই হলকাভাবে নেই না কেন এটা কিন্তু মোটেও স্বাভাবিক ঘটনা নয়। কারণ নাক ডাকার অর্থ হল ঘুমনোর সময় নাসারন্ধ্র দিয়ে বাতাস চলাচল ঠিক মতো হচ্ছে না। আর এমনটা হওয়া মানে শরীরের ওপর মারাত্মক প্রভাব পরা। তাই নাক ডাকার সমস্যা কমাতে সময় থাকতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া একান্ত প্রয়োজন। না হলে কিন্তু বেজায় বিপদ!
গবেষণায় দেখা গেছে, ছোট থেকে বড়, বয়সভেদে যারাই নাক ডাকে, তাদের মস্তিষ্কের ক্ষমতা কমতে শুরু করে। ফলে আইকিউ তো কমেই, সেই সঙ্গে স্মৃতিশক্তিও ঝাপসা হতে শুরু করে। শুধু তাই নয়, অন্য বেশ কিছু গবেষণা অনুসারে দীর্ঘ সময় ধরে নাকা ডাকার প্রবণতা থাকলে স্ট্রোক, হার্ট ডিজিজ, অ্যারিথমিয়া, জি ই আর ডি, ক্রনিক মাথা যন্ত্রণা এবং ওজন বৃদ্ধির মতো সমস্যাও মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে।
ফলে স্বাভাবিকভাবেই আয়ু কমতে শুরু করে। তবে অকারণ চিন্তার কিছু নেই। এই প্রবন্ধে আলোচিত ঘরোয়া পদ্ধতিগুলো যদি মেনে চলতে পারেন, তাহলে উপকার পাবেন।
১. পিপারমেন্ট তেল: এই প্রকৃতিক উপাদানটিতে রয়েছে ইনফ্লেমেটরি উপাদান, যা মেমব্রেনের কর্মক্ষমতা বাড়িয়ে তোলে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই ঘুমনোর সময় শ্বাস-প্রশ্বাস ঠিক মতো হওয়ার কারণে নাক ডাকার প্রবণতা কমতে শুরু করে। এক্ষেত্রে শুতে যাওয়ার আগে ১ গ্লাস পানিতে ২ ফোঁটা পিপারমেন্ট তেল দিয়ে সেই পানি দিয়ে গার্গল করতে হবে। তাহলেই দেখবেন উপকার মিলবে।
২. অলিভ অয়েল: রাত্রে শুতে য়াওয়ার আগে মনে করে ২ চামচ অলিভ অয়েল খেলে শরীরে অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদানের মাত্রা বাড়তে শুরু করে। ফলে রেসপিরেটরি প্যাসেজ খুলতে শুরু করে। তাতে বাতাস চলাচলে কোনও বাধার সৃষ্টি হয় না, ফলে নাক ডাকার আশঙ্কা একেবারে কমে যায়।
৩. গরম পানির ভাপ: অনেক সময় সর্দি-কাশির কারণেও নাক দিয়ে বাতাস চলাচল ঠিক মতো হতে পারে। ফলে ঘুমানোর সময় নাক দিয়ে শব্দ বেরোতে শুরু করে। এক্ষেত্রে কিছু সময় পরপর গরম পানির ভাপ নিলে দারুণ উপকার পাওয়া যায়। তাই এবার থেকে সর্দি-কাশি হলেই এই ঘরোয়া পদ্ধতিটির সাহায্য নেবেন। দেখবেন ঘুমনোর সময় কোনও সমস্যাই হবে না।
৪. এলাচ: অনেক সময় নাকের ভেতরে কোনও বাধা থাকার কারণেও নাক ডাকার মতো সমস্যা দেখা দেয়। এক্ষেত্রে ঘুমনোর আগে নিয়মিত এলাচ চা খেলে কিন্তু দারুণ উপকার মেলে। কারণ এলাচের প্রকৃতিক গুণাগুণ নাকের ভেতরের বাধা সরিয়ে শ্বাস-প্রশ্বাসের প্রক্রিয়াকে স্বাভাবিক করতে বিশেষ ভূমিকা নেয়। আর একবার শ্বাস-প্রশ্বাস ঠিক মতো হতে থাকলে নাক ডাকার কোনও প্রশ্নই ওঠে না।
৫. হলুদ: অ্যান্টিসেপ্টিক এবং অ্যান্টিবায়োটিক উপাদানে পরিপূর্ণ এই প্রকৃতিক উপাদানটি গ্রহণ করলে শরীরের ভেতরে ইনফ্লেমেশন বা প্রদাহ কমতে শুরু করে। সেই সঙ্গে কমে নাক ডাকার প্রবণতাও। এক্ষেত্রে প্রতিদিন শুতে যাওয়ার ৩০ মিনিট আগে এক গ্লাস গরম দুধে ২ চামচ হলুদ গুঁড়ো মিশিয়ে পান করার অভ্যাস করতে হবে। এমনটা করলেই দেখবেন রাতের ঘুমে কেউ ব্যাঘাত ঘটাতে পারবে না।
৬. রসুন: নাকের ভেতরে মিউকাস জমতে বাধা দেয় এই প্রকৃতিক উপাদানটি। সেই সঙ্গে রেসপিরেটারি সিস্টেমের উন্নতি ঘটায়। ফলে শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক হতে শুরু করে, কমতে শুরু করে নাক ডাকার সমস্যা। এক্ষেত্রে নিয়মিত রসুনের ১-২টা কোয়া চিবিয়ে, এক গ্লাস পানি পান করে শুতে যেতে হবে। তাহলেই দেখবেন নাসিকা গর্জন আর আপনাকে বা আপনার প্রিয়জনকে সমস্যায় ফেলতে পারবে না।
৭. মধু: রাতে শুতে যাওয়ার আগে নিয়ম করে যদি এক গ্লাস গরম পানিতে ১ চামচ মধু মিশিয়ে খেতে পারেন, তাহলে নাকা ডাকার সমস্যা মাথাচাড়া দিয়ে ওঠার সুযোগই পায় না। কারণ মধুতে থাকা অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটারি উপাদান গলার প্রদাহ কমায়। সেই সঙ্গে শ্বাস-প্রশ্বাসের প্রক্রিয়াকে স্বাভাবিক করে তোলে। ফলে নাক ডাকার সম্ভাবনা কমে। সূত্র: বোল্ডস্কাই।