স্পোর্টস ডেস্ক:
প্যারিসে নতুন জীবন শুরু করতে যাচ্ছেন ফুটবল ক্লাব জায়ান্ট বার্সেলোনার সদ্য সাবেক হয়ে যাওয়া আর্জেন্টাইন তারকা লিওনেল মেসি।
শৈশব থেকে কাটানো প্রিয় শহর বার্সেলোনাকে নিজের রাজ্য বানিয়ে ফেলা মেসির কোনো কিছুই নেই প্যারিসে। নিজের একটা বাড়িও নেই, যা আছে সবই ফেলে এসেছেন স্পেনের বার্সেলোনায়।
হুট করে শহর বদলানোয় আপাতত কোথায় থাকবেন সেটিও ঠিক করেননি মেসি। অবশ্য প্যারিসে মেসির বাড়ি খুঁজে দেওয়ার দায়িত্ব তার নতুন ক্লাব পিএসজির।
বার্সেলোনা থেকে পিএসজিতে যোগ দেয়ার পর পরিবার নিয়ে লিওনেল মেসি আপাতত প্যারিসের লে রয়্যাল মনচিয়াও হোটেলে থাকছেন। সেখানে একসময় ছিলেন বিখ্যাত রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ও সিনেমাজগতের বড় তারকারা।
পিএসজির মাঠ পার্ক ডি প্রিন্সেস স্টেডিয়াম থেকে হোটেলটি মাত্র ১৫ মিনিটের পথ। বৃটেনের সাবেক প্রধানমন্ত্রী উইনস্টন চার্চিল, হলিউডের সিনেমা প্রযোজক ওয়াল্ট ডিজনি ও অভিনেতা রবার্ট ডি নিরোও রয়্যাল মনচিয়াও হোটেলে থেকেছেন। বাসা খুঁজে পাওয়ার আগে এই পাঁচ তারকা হোটেলেই থাকবেন মেসি।
সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, প্রতি রাতে এই হোটেলের ভাড়া ১৭ হাজার পাউন্ড। বাংলাদেশি মুদ্রায় অঙ্কটা প্রায় ২০ লাখ টাকা। ১৯২৮ সালে যাত্রা শুরু করা এ হোটেল প্যারিসে শিল্পী, সেলিব্রিটি ও বুদ্ধিজীবীদের দেখা করার জায়গা।
২০১৭ সালে পিএসজিতে পাড়ি জমানোর পর এই হোটেলেই উঠেছিলেন নেইমারও।
প্যারিসের সবচেয়ে বিলাসবহুল অঞ্চলে অবস্থিত মনচিয়াও হোটেল। হোটেলটিতে প্রায় সময়ই নানা রকম চিত্র প্রদর্শনী হয়ে থাকে। একঘেয়েমি কাটাতে এসব প্রদর্শনীতে সময় কাটাতে পারে মেসি ও তার পরিবার।
২৩ মিটার লম্বা সুইমিং পুল (প্যারিসে হোটেলগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড়), সিনেমা দেখার ব্যক্তিগত জায়গা ছাড়াও ৬টি বিলাসবহুল রেস্টুরেন্ট রয়েছে এ হোটেলে। মাতসুইশা রেস্টুরেন্ট এর মধ্যে সবচেয়ে খ্যাতিমান খাবার জায়গা। জাপানিজ থেকে পেরুভিয়ান রসুইঘরের খাবার পরিবেশন করা হয় এখানে।
তবে যতই বিলাসবহুল হোক না কেন, স্ত্রী-সন্তানসহ মেসির হোটেলে বসবাস পছন্দ নয় একসময়ের চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী সার্জিও রামোসের। তার মতে, হোটেল তো হোটেলই। মেসির সন্তানদের বাড়ির পরিবেশে রাখা জরুরি। আর সে জন্য মেসিকে নিজের বাড়িতে থাকার আমন্ত্রণ জানিয়েছেন রামোস।
স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যম এল পাইসের সাংবাদিক হুয়ান ইরিগোয়েন এমন খবর দিয়েছেন।
তিনি জানিয়েছেন, আগের শত্রুতা আর নেই মেসি-রামোসের মধ্যে। আর পেশাদার ফুটবল পেশায় সেটিই স্বাভাবিক। তাদের কেউই আর এখন লা লিগায় নেই। দুজনে একই দলের এখন। দুজনের প্রতিপক্ষ এক। কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে চলবেন তারা। রামোসের এই সৌজন্যবোধে সেটিই ফুটে উঠল।
শত্রুতা ভুলে মেসিকে নিজের বাড়িতে থাকতে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন রামোস। তিনি বলেছেন, বন্ধু আসো, তুমি যদি হোটেলে না থেকে কোনো বাসায় থাকতে চাও, চাইলে আমার বাসায় থাকতে পারো।
যদিও মেসি তার বাড়ি যাচ্ছেন এমন কোনো খবর এখনও অবধি আসেনি। জবাবে কী বলেছেন মেসি, তাও জানা যায়নি। পিএসজি বাড়ি ঠিক না করা পর্যন্ত রয়্যাল মনচিআও হোটেলেই থাকছেন বলেই জানা গেছে।
পিএসজির সঙ্গে ২ বছরের চুক্তি করেছেন মেসি। চাইলে চুক্তির মেয়াদ আরও এক বছর বাড়াতে পারবেন বার্সেলোনার সাবেক এ ফরোয়ার্ড। বেতন-ভাতা মিলিয়ে ক্লাবটিতে বছরে ৩ কোটি ৫০ লাখ ইউরো পারিশ্রমিক পাবেন তিনি।
খেলোয়াড়দের বেতন বাবদ বছরে পিএসজির খরচ ২৫ কোটি ২০ লাখ পাউন্ড (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ২ হাজার ৯৫৭ কোটি টাকা)।