ঘর পাচ্ছেন পরিত্যক্ত টয়লেটে বসবাস করা সেই শংকরী

0

সময় এখন ডেস্ক:

নতুন ঘর পাচ্ছেন দীর্ঘ প্রায় ২০ বছর শিকলবন্দী শংকরী গুহ।

নেত্রকোনার দুর্গাপুরে বাড়ির পাশে পুরনো একটি পরিত্যক্ত টয়লেটেই ছিল বসবাস। পায়ে বাঁধা শিকল নিয়ে সেই কুঠুরিতেই কাটিয়েছেন দীর্ঘ সময়। বর্তমানে শংকরীর বয়স ৪৫ বছর।

স্থানীয়রা জানান, উপজেলার পৌর শহরের আমলাপাড়া স্বর্গীয় শম্ভুলাল গুহের ৩য় সন্তান তিনি। তার বড় ২ বোন এবং ছোট একটি ভাই রয়েছে। ভাইয়ের অল্প রোজগারে কোনোরকম সংসার চলে। তারা নিজেরা যা খাচ্ছেন বোনকেও তাই খাওয়াচ্ছেন তারা। দীর্ঘদিন ধরে শংকরীকে এভাবেই এক ঘরের ভেতরেই দেখে আসছেন।

কেউ তাকে কখনই বাহিরে আসতে দেখেননি। খাওয়া দাওয়া গোসল সবই ওই কুঠুরিতেই করেন তিনি। তার ভাইও অনেক অসচ্ছল। আর্থিক সংকটের কারণে তাই বোনটিরও চিকিৎসা করাতে পারছেন না।

অবশেষে স্থানীয় প্রশাসনের নজরে আসলে তারা প্রাথমিকভাবে টিন, ঘরের জন্য ৬ হাজার ও চিকিৎসা বাবদ নগদ ৫ হাজার টাকা এবং দুই বস্তা চাল দিয়ে আসেন।

রোববার (২২ আগস্ট) বিকেলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাজিব উল আহসান নিজে গিয়ে পরিদর্শন করে এসব দিয়ে আসেন।

এসময় প্রাথমিকভাবে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডাক্তার তানজিরুল ইসলাম রায়হান চিকিৎসার বিষয়ে সার্বিক সহযোগিতা ও পরামর্শ দেওয়ার আশ্বাস প্রদান করেন।

জানা যায়, শংকরী দীর্ঘদিন শহরের বিরিশিরি মিশন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়ালেখা করেছেন। পড়াশোনাকালীন তার বাবার মৃত্যু হয়।

২০০১ সালে হঠাৎ করে একদিন নাকের সমস্যা দেখা দিলে কয়েকদিনের ব্যবধানে তা রূপ নেয় টিউমারে। চিকিৎসার পর হঠাৎ করে অস্বাভাবিকভাবে আচরণ পরিবর্তন হতে শুরু করে।

একপর্যায়ে পুরোপুরি মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। সেখান থেকেই শুরু হয় তার বন্দিজীবন। পায়ে কখনও মোটা রশি কিংবা শিকল দিয়ে বেঁধে আটকে রাখার চেষ্টা করেন স্বজনরা।

কোনো রকম শান্ত রেখে এমনই এক ভারসাম্যহীন মেয়েকে দেখাশোনা করতেন তার মা।

তবে ২০১৩ সালের শেষের দিকে তার মায়েরও মৃত্যু হলে সংসারের পুরো বোঝা কাঁধে পড়ে ছোট ভাই জীবনলাল গুহের ওপর। স্থানীয় একটি প্যাথলজিতে সামান্য পিয়নের চাকরি করে কোনো রকম সংসার চালান তিনি।

শেয়ার করুন !
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

এই ওয়েবসাইটের যাবতীয় লেখার বিষয়বস্তু, মতামত কিংবা মন্তব্য– লেখকের একান্তই নিজস্ব। somoyekhon.net-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এর মিল আছে, এমন সিদ্ধান্তে আসার কোনো যৌক্তিকতাই নেই। লেখকের মতামত, বক্তব্যের বিষয়বস্তু বা এর যথার্থতা নিয়ে somoyekhon.net আইনগত বা অন্য কোনো ধরনের কোনো প্রকার দায় বহন করে না।

Leave A Reply

error: Content is protected !!