খুলনা সংবাদদাতা:
সারাদিন রাস্তায় রাস্তায় ঘুরত অনাথ শিশু মো. হোসেন (১২) ও আবদুর রাজ্জাক (১৫)। বিভিন্ন হোটেল, রেস্টুরেন্ট থেকে ফেলে দেয়া উচ্ছ্বিষ্ট খাবার কুড়িয়ে নিয়ে সেসব খেয়ে ক্ষুধা নিবারণ করত। আবার কখনও পথচারীদের কাছ থেকে হাত পেতে টাকা চেয়ে নিয়ে চলত তারা। রাতে ঘুমাত নগরীর পিকচার প্যালেস মোড় কিংবা হাদিস পার্কের পাশের ফুটপাতে। আর বেশিরভাগ সময় ক্ষুধার যন্ত্রণা ভুলতে পলিথিনের ব্যাগে নাকে মুখ গুঁজে আঠা (সলিউশন গাম) শুঁকে নেশায় বুঁদ হয়ে এদিক সেদিক ঘুরে বেড়াত। অনেক দিন ধরেই চলছিল এ অবস্থা।
মো. হোসেন, আবদুর রাজ্জাকসহ ১৩টি পথশিশুকে উদ্ধার করে আলোর পথে ফিরিয়েছে খুলনা থানা পুলিশ। শুক্রবার রাতে নগরীর ডাকবাংলো মোড়, পিকচার প্যালেস মোড়, রয়্যাল মোড় ও হাদিস পার্কের মোড় থেকে তাদের উদ্ধার করা হয়।
উদ্ধার হওয়া পথশিশুরা হলো- আনাজ (১২), রাপ্পী (১৫), নূর ইসলাম (১৪), আব্বাস (১১), সৌরভ (১৪), আকবর (৮), সাগর সরকার (১৫), আসিফ মৃধা (১৩), রাব্বী খান (৯), বাবু শেখ (১৫) ও আদু (১৫)।
খুলনা থানার ওসি হুমায়ুন কবীর জানান, উদ্ধারকৃত এই পথশিশুদের মধ্যে ৯ জনকে গতকাল শনিবার দুপুরে বটিয়াঘাটা উপজেলার শেখ রাসেল শিশু পুনর্বাসন ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে। আর ৪ জনকে খুলনা ও যশোরের বিভিন্ন স্থানে তাদের আত্মীয়স্বজনের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
তিনি জানান, পথশিশু ভেবে নেশায় আসক্ত আরও ৩ জনকে উদ্ধার করে আনা হয়েছিল। যাচাই-বাছাই করে দেখা গেছে, তারা শিশু নয়, যুবক। সে কারণে মাদক সেবনের অভিযোগে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
এ ব্যাপারে খুলনা নাগরিক সমাজের সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট মো. বাবুল হাওলাদার বলেন, পুরাতন রেলস্টেশন, বিআইডব্লিউটিএ ঘাট, নতুন বাজার লঞ্চঘাট, সোনাডাঙ্গা বাস টার্মিনাল, হাদিস পার্কসহ নগরীর বিভিন্ন স্থানেই পথশিশুদের দেখা যায়। তারা দিনভর আঠার নেশায় বুঁদ হয়ে থাকে। সবাইকে দ্রুত পুনর্বাসনের আওতায় আনা প্রয়োজন।