সময় এখন ডেস্ক:
কাশিমপুর কারাগারের সামনেই মুদি দোকান জিল্লুর রহমানের। সিনেমায় অনেক আগে থেকেই পরীমনিকে দেখলেও কখনও সামনা-সামনি দেখেননি। পরীমনিকে যেদিন কাশিমপুর কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়, সেদিন থেকেই তাকে দেখার চেষ্টায় ছিলেন জিল্লুর রহমান।
মনের কোণে জমানো পরীমনিকে দেখার সেই বাসনা পূরণ হয়েছে জিল্লুর রহমানের। বুধবার দেখতে পেয়েছেন পরীমনিকে। শুধু দেখা নয়, হাতে হাত মেলাতে পেরেছেন জিল্লুর রহমান। দিয়েছেন এক প্যাকেট চকলেটও।
তিনি বলেন, আমি পরীমনির ভক্ত। পরীমনি জেলখানায় আসার পর থেকেই আকাঙ্ক্ষা ছিল তাকে দেখব। যে কোনো উপায়ে হোক, আজ আমি তার কাছাকাছি গিয়ে তার ছোঁয়া পেয়েছি। এ জন্য আমি নিজেকে অনেক ধন্য মনে করছি।
মাদক মামলায় গ্রেপ্তারের ২৭ দিন পর জামিনে ছাড়া পেয়ে বুধবার গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগার থেকে বনানীর বাসায় ফেরেন পরীমনি।
সকাল সাড়ে ৯টার দিকে যখন পরীমনি কাশিমপুর কারাগার ছাড়েন তখন তাকে দেখতে উৎসুক জনতা ভিড় করেন কারাগারের সামনে। সেই ভিড়েই ছিলেন মুদিদোকানি জিল্লুর রহমান।
তিনি বলেন, আমি কারাগারের সামনের স্থানীয় দোকানদার। সেই হিসেবে কারাগারে সব সময় যাওয়া-আসা আছে, কারাগারের সাথে আমি সম্পৃক্ত।
পরীমনিকে সামনে থেকে দেখার অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে জিল্লুর রহমান বলেন, এত মানুষের মাঝে তাকে দেখতে পেরে মনে হয়েছে আকাশের চাঁদ হাতের কাছে এসেছে। বাস্তবে দেখে অনেক বেশি ভালো লেগেছে, যেটা ভাষায় বোঝানো যাবে না।
ঢাকাই চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় নায়িকা পরীমনিকে বুধবার দেখতে কাশিমপুর কারাগারের সামনে অনেক দূর-দূরান্ত থেকে তার ভক্তরা জড়ো হয়েছিলেন।
সেখানেই পরীমনিকে এক নজর দেখতে এসেছিলেন কিশোরগঞ্জের বাজিতপুরের বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া হৃদয়। রুপালি পর্দায় পরীমনির অভিনয় দেখে তার ভক্ত বনে যান হৃদয়। সেই থেকে পরীমনিকে একনজর সামনে থেকে দেখার ইচ্ছে ছিল তার।
তবে কারাগারের সামনে আসলেও তিনি পরীমনিকে দেখতে পাননি। কারা ফটকে পৌঁছাতে দেরি হওয়ায় পরীমনিকে সামনে থেকে দেখার ইচ্ছা পূরণ হয়নি তার। হৃদয়ের চোখেমুখে ছিল পরীকে না দেখতে পাওয়ার সেই আক্ষেপ।
হৃদয় বলেন, পরীমনির সাথে মিট করতে (দেখা করতে) চাইছিলাম। কিন্তু আইসা তাকে ধরতে পারি নাই, চলে গেছে পরীমনি।
পরীমনির মামলা ও বিচার প্রসঙ্গে হৃদয় বলেন, আইনের বিষয়গুলো আমাদের চেয়ে আইনের লোকজন ভালো বুঝে। তারা যেটা ভালো মনে করেছে সেটাই রায় দিয়েছে। তবে হয়তো তার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা ও ষড়যন্ত্র হতে পারে।
বুধবার দুপুর ১টার দিকে বনানীর বাসায় প্রবেশ করেন পরীমনি। এ সময় তার আশপাশে সংবাদকর্মীদের ব্যাপক ভিড় দেখা যায়।
নায়িকার আইনজীবী নীলাঞ্জনা রিফাত সুরভী জানান, পরীমনি মানসিক ও শারীরিকভাবে বিপর্যস্ত। এ কারণে তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে আপাতত কথা বলবেন না।
গত ৪ আগস্ট রাত থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হেফাজত ও কারাগারে ছিলেন পরীমনি।
আজ সকাল সাড়ে ৯টার দিকে পরীমনি তার আইনজীবী ও খালুর সঙ্গে কারাগার থেকে ঢাকার পথে রওনা হন। এ সময় কারাফটকে তাকে বহন করা গাড়ি দাঁড়ালে উৎসুক লোকজন সেটিকে ঘিরে রাখে।
ওই সময় পরীমনির আইনজীবী নীলাঞ্জনা রিফাত সুরভী বলেন, আমরা সাড়ে ৯টার দিকে পরীমনিকে নিয়ে কারাফটক থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হয়েছি। আমরা তাকে তার বনানীর বাসায় পৌঁছে দেব।
পরীমনিকে তার বনানীর বাসা থেকে গত ৪ আগস্ট মাদকদ্রব্যসহ আটক করে র্যাবের একটি দল। পরের দিন বনানী থানায় এ অভিনেত্রীর বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে একটি মামলা করে বাহিনীটি।
সেই মামলায় মঙ্গলবার জামিন হয় পরীমনির। আদেশের কাগজ কারাগারে যেতে সময় লাগায় বুধবার সকালে কারামুক্ত হন আলোচিত এ অভিনেত্রী।
মাদক ছাড়াও পরীমনির নামে আরও বেশ কিছু মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এর মধ্যে পর্নগ্রাফি এবং ব্ল্যাকমেলিং চক্রের সাথে পরীমনির সম্পৃক্ততার কিছু তথ্য প্রমাণ আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে রয়েছে। সেসব নিয়ে তদন্ত চলমান বলে জানায় সূত্র।