যাদের উদ্দেশ্যে পরীমনি ‘তোদের ভালোবাসার দরকার নাই’ লিখেছেন

0

বিনোদন ডেস্ক:

আলোচিত চিত্রনায়িকা পরীমনি কাশিমপুর কেন্দ্রীয় মহিলা কারাগার থেকে মাদক মামলায় জামিনে মুক্তি পেয়েছেন। বুধবার (১ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে তাকে বহনকারী সাদা রঙয়ের গাড়িটি কারাফটক থেকে বের হয়। প্রায় ২৭ দিন পরীমনি কারাগারে বন্দি ছিলেন।

এদিকে পরীমনির জামিনের খবরের পর থেকে কারা ফটকে মানুষজন ভিড় করতে থাকে। ঢাকাই ছবির এ অভিনেত্রীও তার জন্য অপেক্ষমাণ ভক্তদের নিরাশ করেননি। কারামুক্ত হয়েই গাড়ি থেকেই ভক্তদের সঙ্গে সেলফি তুলেন পরীমনি।

এ সময় সাদা পোশাকে পরীমনিকে সবার উদ্দেশে হাত নেড়ে হাসিমুখে শুভেচ্ছা জানাতে দেখা গেছে। তার হাতের তালুতে ‘Dont love (প্রতীকী চিহ্ন) me Bitch’ [ভাবার্থ: তোদের ভালোবাসার দরকার নাই] লেখা ছিল। তবে এ লেখার উদ্দেশ্য কী- তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

এ নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় চলছে হৈ চৈ। নেটিজেনরা মুখর পরীমনির হাতের এই লেখা নিয়ে। তারা জানতে চাইছেন মেহেদি দিয়ে লেখা দিয়ে পরীমনি কী বোঝাতে চাইছেন। যেখানে একটি ‘মধ্যমা’ আঙুলের চিহ্নও রয়েছে। কিন্তু কাকে বা কাদের এ বার্তা দিলেন চিত্রনায়িকা?

সাংবাদিক আলি আফতাব লিখেছেন, ‘কিছু দিন আগে কারাগারে নিজ বান্ধবী নিয়ে সিসিটিভিতে ধরা পরে এক ব্যক্তি, আর একজন কারাগার থেকে জুম মিটিং করে, আর আজ দেখলাম আমাদের নায়িকা কারাগার থেকে হাতে মেহেদি লাগিয়ে বের হলেন… কারাগারে আর কী কী হয়?’

উপস্থাপক রুম্মান রশিদ খান লিখেছেন, ‌‘দুধের মাছি/সুসময়ের বন্ধু যারা; তাদের ভালোবাসার আর দরকার নাই পরীর।’

মডেল হৃদি উল্লেখ করেছেন, ‘যারা পরীমনির জন্মদিনে ফ্রিতে গিয়ে ফ্রি ফ্রি খেয়ে এসেছেন আর সেলফি তুলে গেছেন- তাদের বোঝানো হয়েছে এটি।’

তবে পরীমনি নিজে জানালেন এর উদ্দেশ্য-

গণমাধ্যমকে পরীমনি জানান, যারা বিচ তাদের উদ্দেশ্যে এমন কথা বলেছি। লেখাটা পড়ে যাদের মনে হবে, আল্লাহ, আমাকে নিয়ে এটা লিখল- তাদের উদ্দেশ্যেই এই লেখা।

ওদের তালিকা তো আমি নাম ধরে বলতে পারব না। আমাকে আটক, গ্রেপ্তার এবং কারাগারে নিয়ে যাওয়ার পর তাদের জীবন সার্থক মনে হয়েছে। কেউ কেউ তো খুশিতে নাচাও শুরু করেছে। যেই আমি ফিরে আসছি, অনেকে আবার মিস ইউ, লাভ ইউ বলা শুরু করছে।

এই ধরনের ভালোবাসা আমার দরকার নাই। আমি তাদেরকেই বলেছি, তোমরা আমাকে ভালোবাইসো না। আমি যাদের জন্য পরীমনি, যারা সত্যি সত্যি আমাকে অন্তরের মধ্যে বসাইয়ে রাখছে, তাদের আমি সব সময় ভালোবাসি। আজীবন ভালোবাসি।

এর আগে মঙ্গলবার (৩১ আগস্ট) ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েশ শুনানি শেষে ৫০ হাজার টাকা মুচলেকায় পরীমনির জামিন মঞ্জুর করেন।

কাশিমপুর মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার (ভারপ্রাপ্ত) সৈয়দ শাহ শরীফ জানান, আদালত থেকে পরীমনির জামিনের কাগজপত্র মঙ্গলবার (৩১ আগস্ট) রাতে কারাগারে এসে পৌঁছায়। পরে আদালতের কাগজপত্র যাচাই-বাছাই শেষে পরীমনিকে বুধবার সকাল সাড়ে ৯টায় কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে।

এ সময় পরীমনির স্বজনরা কারা ফটকে উপস্থিত ছিলেন।

কারাগার সূত্রে জানা গেছে, গত ৪ আগস্ট বিকেলে পরীমনির বনানীর বাসায় অভিযান চালায় র‌্যাব। এ সময় তার বাসা থেকে বিপুল পরিমাণ বিদেশি বিভিন্ন ব্র্যান্ডের দামি মদ, আইস, এলএসডিসহ বিভিন্ন মাদকদ্রব্য জব্দ করা হয়।

ওইদিন রাত সোয়া ৮টার দিকে বনানীর বাসা থেকে পরীমনিকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য র‌্যাব সদর দপ্তরে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে তার বিরুদ্ধে বনানী থানায় মাদক মামলা দায়ের করা হয়। ওই মামলায় গত ৫ আগস্ট পরীমনিকে ৪ দিন ও ১০ আগস্ট দ্বিতীয় দফায় ২ দিনের রিমান্ডে পাঠান আদালত।

পরে ১৩ আগস্ট পরীমনির জামিন আবেদন নাকচ করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ধীমান চন্দ্র মণ্ডল। আদালতের আদেশে ওইদিন সন্ধ্যা ৭টার দিকে প্রিজন ভ্যানে করে পরীমনিকে কাশিমপুর মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়।

এরপর ওই কারাগার থেকে গত ১৯ আগস্ট তৃতীয় দফায় পরীমনিকে এক দিনের রিমান্ডে ঢাকায় নেওয়া হয়। রিমান্ড শেষে ২১ আগস্ট পুনরায় পরীমনিকে এ কারাগারে পাঠানো হয়।

কারাগারের খাবারে অরুচি থাকলেও নিয়মিত কোক পেয়েছেন পরীমনি

কারাগার সূত্র জানায়, মহিলা কারাগারের রজনীগন্ধা ভবনের একটি কক্ষে কোয়ারান্টাইনে ছিলেন পরীমনি। এই কক্ষে একটি খাট ও টেবিল-চেয়ার ছিল। বেশির ভাগ সময় বিমর্ষ দেখা গেছে পরীমনিকে। কারাগারে অন্য বন্দিদের সঙ্গে তাকে কথা বলতে দেখা যায়নি।

কারাগারের এক কর্মকর্তা জানান, বন্দি অবস্থায় যেসব খাবার দেয়া হতো, তা পছন্দ করতেন না পরীমনি। প্রায়ই বার্গার আর কোক খেতে চাইতেন। তবে কারাগারের ক্যান্টিনে বার্গারের সরবরাহ নেই। তবে মাঝেমধ্যে তাকে কোক দেয়া হতো।

কারাগারে বোতলজাত পানি খেতেন পরীমনি, এই পানি আসত ক্যান্টিন থেকে।

শেয়ার করুন !
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

এই ওয়েবসাইটের যাবতীয় লেখার বিষয়বস্তু, মতামত কিংবা মন্তব্য– লেখকের একান্তই নিজস্ব। somoyekhon.net-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এর মিল আছে, এমন সিদ্ধান্তে আসার কোনো যৌক্তিকতাই নেই। লেখকের মতামত, বক্তব্যের বিষয়বস্তু বা এর যথার্থতা নিয়ে somoyekhon.net আইনগত বা অন্য কোনো ধরনের কোনো প্রকার দায় বহন করে না।

Leave A Reply

error: Content is protected !!