চট্টগ্রাম ব্যুরো:
চট্টগ্রামের কর্ণফুলী থানাধীন শিকলবাহা চৌমুহনী মোড় থেকে ৫ হাজার ৩০০ পিস ইয়াবাসহ এক কোরআনে হাফেজকে গ্রেফতার করার কথা জানিয়েছেন কর্ণফুলী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মনিরুল ইসলাম। গ্রেফতারকৃত ওই কোরআনে হাফেজের নাম আব্দুল মান্নান (৩৫)।
কর্ণফুলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলমগীর মাহমুদ জানান, মঙ্গলবার (৫ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১১টার দিকে তাকে গ্রেফতার করা হয় ।
গ্রেফতারকৃত আব্দুল মান্নান নরসিংদী জেলার সদর উপজেলার কাঁঠালিয়া ইউনিয়নের মোল্লাবাড়ি এলাকার অহিদ আলীর ছেলে। তিনি একই এলাকার দক্ষিণ নোয়াকান্দি গ্রামের একটি হেফজখানার শিক্ষক ছিলেন, সেখানে আরবি পড়াতেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। ইয়াবা পরিবহনের কাজে জড়ানোর পর হেফজখানায় পড়ানো ছেড়ে দিয়েছেন আব্দুল মান্নান।
কর্ণফুলী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘বাড়তি আয়ের লোভে আব্দুল মান্নান জড়িয়ে পড়েন ইয়াবা পাচারে। কক্সবাজারের টেকনাফ থেকে ইয়াবা কিনে ঢাকা-নরসিংদিসহ বিভিন্নস্থানে বিক্রি করতেন তিনি। দ্রুত বড়লোক হওয়ার নেশায় একসময় মক্তবে শিক্ষকতার পেশাও ছেড়ে দেন।’
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, ৩০ পারা কোরআনে হাফেজ আব্দুল মান্নান কওমি মাদ্রাসা থেকে এসএসসি সমমান পর্যন্ত পড়ালেখা করেছেন। অভাবে পড়ে তিনি গত একবছর ধরে ইয়াবা পাচারে নেমেছেন। নরসিংদী থেকে বাসে করে মঙ্গলবার ভোর সাড়ে ৫টার দিকে কক্সবাজার পৌঁছান। ১ ঘণ্টার মধ্যে আবদুল অহিদ নামে এক ব্যক্তির কাছ থেকে ইয়াবাগুলো সংগ্রহ করেন। ইয়াবাগুলো তিনি ঢাকায় আব্দুল্লাহ নামে আরেক ব্যক্তির কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য নিয়ে যাচ্ছিলেন।
থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মনিরুল ইসলাম জানান, ইয়াবাগুলো পৌঁছে দিলে প্রতি হাজারে আব্দুল মান্নান ৪ হাজার টাকা করে পেতেন। তার বিরুদ্ধে কর্ণফুলী থানায় মামলা দায়ের হয়েছে।
ইমাম ও মাদ্রাসা শিক্ষক এনায়েতের পায়ুপথে ২ হাজার ইয়াবা!
গত ২৬ জানুয়ারি কক্সবাজার থেকে আসা এক বাসযাত্রীকে চট্টগ্রামের শাহ আমানত সেতুর দক্ষিণ পাড় মইজ্জ্যারটেক এলাকা থেকে আটক করা হয়। এক্স-রে করে তার পেটে ২ হাজার ইয়াবার অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। মো. এনায়েত উল্লাহ নামে ওই ব্যক্তি কক্সবাজারের টেকনাফের একটি মসজিদের ইমাম ও মাদ্রাসার শিক্ষক বলে জানিয়েছে পুলিশ।
৫০ বছর বয়সী এনায়েত উল্লাহ টেকনাফ পৌরসভার ৭ নম্বর জালিয়াপাড়া ওয়ার্ডের মো. ইদ্রিসের ছেলে। তিনি টেকনাফের তুলাতলি জামে মসজিদের ইমাম এবং তুলাতলি ফোরকানিয়া মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করেন বলে জানিয়েছেন কর্ণফুলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলমগীর মাহমুদ।
ওসি গণমাধ্যমকে বলেন, ‘কক্সবাজারের বাস থেকে নামার পর দায়িত্বরত পুলিশ তাকে দেখে সন্দেহ করে। এসময় তাকে স্থানীয় একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নিয়ে এক্স-রে করানো হলে পেটের ভেতরে ইয়াবা দেখা যায়। পায়ুপথ দিয়ে টিউব আকারে পুঁটলি বেঁধে প্রবেশ করানো সেই ২ হাজার পিস ইয়াবা বিশেষ পদ্ধতিতে বের করা হয়।’
‘মসজিদে ইমামতি এবং মাদ্রাসায় শিক্ষকতার পরও ইয়াবা বহন করছে কেন, জানতে চেয়েছিলাম। তিনি জানান, ৬ মেয়ে ও ২ ছেলে আছে তার, স্ত্রী আছে, সংসারের খরচ সামলাতে লোভে পড়ে তিনি ইয়াবা পাচারে যুক্ত হয়েছেন।’ বলেন ওসি।