গাজীপুর সংবাদদাতা:
প্রথম দর্শনেই যে কেউই বিভ্রান্ত হবেন ধর্ষণের দায়ে সাজাপ্রাপ্ত বৃদ্ধ বিল্লাল ভূঁইয়াকে দেখে! এমন অশীতিপর চেহারা নিয়ে কাঁচুমাচু অবস্থায় দাঁড়িয়ে থাকা এই বৃদ্ধ একটি শিশুকে ধর্ষণ করতে পারে- কারোই বিশ্বাসই হচ্ছিল না আদালত প্রাঙ্গনে।
গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার চিনাশুকানিয়া এলাকায় ৩য় শ্রেণির এক ছাত্রীকে ধর্ষণের চাঞ্চল্যকর মামলায় ষাটোর্ধ্ব বৃদ্ধ বিল্লাল ভূঁইয়ার যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ৬ মাসের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার, ৫ ফেব্রুয়ারি সকালে গাজীপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক এমএ মেজবাহ উদ্দিন জনাকীর্ণ আদালতে এ রায় দেন। এ সময় আসামি বিল্লাল ভূঁইয়া আদালতের কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত বিল্লাল ভূঁইয়া শ্রীপুর উপজেলার চিনাশুকানিয়া গ্রামের রহম উদ্দিন ভূঁইয়ার ছেলে।
মামলার বিবরণে জানা গেছে, গত ২০১৭ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর বেলা ১১টার দিকে স্থানীয় একটি স্কুলের ৩য় শ্রেণির ওই ছাত্রী বিল্লাল ভূঁইয়ার বসতবাড়িতে খেলতে যায়। এ সময় বিল্লাল ভূঁইয়া মেয়েটিকে তার ঘরের মেঝে ঝাড়ু দেয়ার জন্য ডেকে নেয়। মেয়েটি ঘরের মেঝে ঝাড়ু দেয়ার সময় বিল্লাল ভূঁইয়া তাকে ধর্ষণ করে এবং ঘটনাটি প্রকাশ না করতে মেয়েটিকে প্রাণনাশের হুমকি দেয়। পরে ভিক্টিম ঘটনাটি তার মাকে জানালে তিনি বাদী হয়ে ৩ জনকে আসামি করে ২১ সেপ্টেম্বর শ্রীপুর থানায় মামলা দায়ের করেন। পরে পুলিশ তদন্ত করে ওই বছরের ১৭ নভেম্বর বিল্লাল ভূঁইয়াকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দেয়।
আদালতের বিচারক এম এ মেজবাহ উদ্দিন ভূঁইয়া উভয়পক্ষের শুনানি শেষে মঙ্গলবার এ রায় দেন। অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় মামলার অপর দুই আসামি রুবেল ও হেলাল খানকে পুলিশ মামলার চার্জশিট থেকে অব্যাহতি দেয়।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের স্পেশাল পিপি ফজলুল কাদের। তিনি রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন।