কক্সবাজার সংবাদদাতা:
কক্সবাজারের টেকনাফে সমুদ্রপথে মালয়েশিয়া যাওয়ার সময় ৩০ রোহিঙ্গা নারী ও শিশুসহ ৩২ জনকে আটক করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। আজ শুক্রবার ভোরে উপজেলার শাহপরীর দ্বীপ, গোলারচর ও শিলখালি উপকূলীয় এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়। টেকনাফ-২ বিজিবির অধিনায়ক লেফেটেন্যান্ট কর্নেল আছাদুদ-জ্জামান চৌধুরী সমকালকে এথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘দালালের খপ্পরে পড়ে সমুদ্রপথে মালয়েশিয়া যাচ্ছিল ৩২ জন। এর মধ্যে ৩০ জন রোহিঙ্গা এবং ২ জন বাংলাদেশি। রোহিঙ্গাদের মধ্যে ১৭ জন নারী, ৭ শিশু ও ৬ জন পুরুষ।’
বিজিবি কর্মকর্তা আরও বলেন, যাত্রীরা কেন কীভাবে ও কার মাধ্যমে সেখানে যাচ্ছিল তা জানার জন্য জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। আটক হওয়া রোহিঙ্গারা গত বছর মিয়ানমার থেকে পালিয়ে এসে কক্সবাজারে আশ্রয় নেয় বলে জানিয়েছেন তিনি।
২ লক্ষাধিক রোহিঙ্গা নিরুদ্দেশ ক্যাম্পগুলো থেকে!
মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের শারীরিক গড়ন, ভাষা, পোশাক-পরিচ্ছদ, আচার-আচরণ স্থানীয়দের সঙ্গে যথেষ্ট মিল রয়েছে। আর এ সুযোগে রোহিঙ্গা পুরুষ, নারী ও শিশুরা সহজেই স্থানীয় জনগণের সঙ্গে মিশে যাচ্ছে। সাম্প্রতিক হিসাবে জানা গেছে প্রায় ২ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্প ছেড়ে নিরুদ্দেশ হয়ে গেছে। এদিকে ক্যাম্প থেকে পালাতে গিয়ে ধরেও পড়েছে বেশ কিছু রোহিঙ্গা শরণার্থী।
রোহিঙ্গাবিষয়ক আন্তর্জাতিক সংস্থার সমন্বয়ের দায়িত্বে থাকা ইন্টার সেক্টর কো-অর্ডিনেশন গ্রুপ (আইএসসিজি) সূত্রে জানা গেছে, রোহিঙ্গা শিবিরগুলোতে বায়োমেট্রিক পদ্ধতির আওতায় আসা রোহিঙ্গার সংখ্যা রয়েছে ১১ লাখ ১৮ হাজার। অথচ বর্তমানে শিবিরে রোহিঙ্গার হদিস মিলছে ৯ লাখ ১৫ হাজার। আরও ২ লাখ রোহিঙ্গার কোনও হদিসই নেই!
বেশ কিছু রোহিঙ্গা পালাতে গিয়ে ধরা পড়ার পর বিষয়টি কর্তৃপক্ষের নজরে আসে। রোহিঙ্গাদের মধ্যে শিবির পালানোর প্রবণতা ঠেকাতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থাগুলো উদ্যোগ নিলেও বাস্তবে স্থানীয় জনসাধারণের সঙ্গে মিশে গিয়ে তারা পালিয়ে গেলে সবাইকে চিহ্নিত করা সম্ভব হয় না।
কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শিবিরে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গার সংখ্যা দিন দিন কমে যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শিবিরের তদারকির দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তাসহ দেশি-বিদেশি এনজিওকর্মীরাও।
রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনসহ রোহিঙ্গা শিবির তদারকির দায়িত্বে থাকা সরকারের অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ আবুল কালাম জানিয়েছেন, শিবিরে আশ্রয় নেয়া বেশ কিছু রোহিঙ্গার খোঁজ মিলছে না।
* ব্যবহৃত ছবিটি প্রতীকি