ব্রাহ্মণবাড়িয়া সংবাদদাতা:
আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে তৃর্ণমূলের মতামতকে উপেক্ষা করে যুদ্ধাপরাধী সংগঠন জামায়াতে ইসলামীর প্রয়াত আমির কুখ্যাত রাজাকার গোলাম আযমের নিকট আত্মীয়কে আওয়ামী লীগের প্রার্থী করায় সংবাদ সম্মেলনে প্রতিবাদ জানিয়েছে বঞ্চিত প্রার্থীরা। আজ শনিবার দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবের মিলনায়তনে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
এসময় নবীনগর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বঞ্চিত প্রার্থীরা এই সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন। মনোনয়ন প্রত্যাশী ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম ফেরদৌস সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলেন, আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে তৃর্ণমূলের মতামতকে উপেক্ষা করে কুখ্যাত রাজাকার গোলাম আযমের নিকট আত্মীয় হাবিবুর রহমান স্টিফেনকে দলীয় প্রার্থী করতে মনোনয়ন দিয়েছে উপজেলা আওয়ামী লীগ। স্টিফেন নবীনগরের বীরগাঁও গ্রামের সোনা মিয়া সরকারের ছেলে ও আমেরিকা প্রবাসী দ্বৈত ধর্মের অধিকারী বিতর্কিত ব্যক্তি।
প্রসঙ্গত, আওয়ামী লীগ থেকে নবীনগর উপজেলা নির্বাচন করতে মনোনয়ন ক্রয় করেছেন ৮ জন প্রার্থী। হাবিবুর রহমান সরকার স্টিফেন ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা। তার নাম মুক্তিযোদ্ধা তালিকা থেকে বাতিল করতে মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে স্থানীয় বীরগাঁও ইউনিয়ন মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের পক্ষে মুক্তিযোদ্ধা মো. সামছুল আলম আবেদন জানানো হয়েছে। বীরগাঁও গ্রামে গোলাম আযম প্রতিষ্ঠিত সোবহানিয়া দাখিল মাদ্রাসা পরিচালনা করেন হাবিবুর রহমান স্টিফেন।
অ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম ফেরদৌস বলেন, গত ২৮ জানুয়ারি নবীনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় ৩ জন প্রার্থী চূড়ান্ত করার দায়িত্ব ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৫ (নবীনগর) আসনের সংসদ সদস্য মোহাম্মদ এবাদুল করিমের কাধে তুলে দেন দলীয় নেতাকর্মীরা। পরে নবীনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি হাবিবুর রহমান স্টিফেন, সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তফা জালাল ও জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য শাহরিয়ার বাদলের নাম দলীয় মনোনয়নের জন্য কেন্দ্রে পাঠানোর সিদ্ধান্ত দেন স্থানীয় সাংসদ এবাদুল করিম।
মনোনয়ন প্রত্যাশী ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা যুবলীগের এই নেতা আরও বলেন, সাংস এবাদুল করিমের কার্যালয় থেকে ওই প্রার্থীদের ফোন করে তাদের জীবন বৃত্তান্তসহ সব কাগজপত্র নিয়ে যাওয়ার কথা বলা হয়। তবে হঠাৎ করে সাংসদ এবাদুল করিম দলের একক প্রার্থী হিসেবে হাবিবুর রহমান স্টিফিনের নাম কেন্দ্রে পাঠাতে বলেন। এই মনোনয়ন বঞ্চিত প্রার্থীরা স্টিফেনকে বাদ দিয়ে দলের ত্যাগী যে কোনো নেতাকে দলের মনোনয়ন দিলে কারো কোনো আপত্তি থাকবে না। অন্য যে কোনো একজনকে মনোনয়ন দিলে আমরা সবাই তার জন্য কাজ করব।
এসময় সংবাদ সম্মেলনে নবীনগর উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী ও কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের উপ কমিটির সহ-সম্পাদক কাজী জহির উদ্দিন টিটো, কেন্দ্রীয় উপ কমিটির বন ও পরিবেশ বিষয়ক সদস্য হাবিবুর রহমান হাবিব, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এইচএম আল আমীন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
তবে এ ব্যাপারে নবীনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম.এ হালিম জানান, ওনাকে (হাবিবুর রহমান স্টিফেন) নিয়ে বিতর্কের তো কোনো কারণ দেখছি না। যেহেতু হাবিবুর রহমান নিজে রাজাকার বা জামায়াতের লোক নন তাই নৌকা প্রতীক পেলে অমুক্তিযোদ্ধা/মুক্তিযোদ্ধা কোনো ব্যাপার না বলে জানান তিনি।
