বাংলাদেশের মিডিয়া আইএসআইর দখলে: মার্কিন সংস্থার রিপোর্ট

0

স্পেশাল করেসপন্ডেন্স:

বাংলাদেশের মানুষের মাঝে তীব্র হিন্দু ও ভারত বিরোধী মনোভাব তৈরি করতে বেশ জোরেশোরেই কাজ করছে পাকিস্থানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই। আর এই কাজ সহজ করতে তারা ক্রমশ দখল নিচ্ছে বাংলাদেশের মিডিয়া জগতকে।

বাংলাদেশে আইএসআই-এর ভারতবিরোধী কার্যকলাপের ইন্ধনের অন্যতম অঙ্গ হলো হিন্দুদের ভারতের গুপ্তচর আখ্যা দিয়ে এই দেশ থেকে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তাড়ানো। এই কাজে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে সাম্প্রদায়িক আখ্যা দিয়ে হিন্দু বিরোধী হাওয়ায় আগুন দেয়াও, ঘৃণায় প্রশ্রয় দেয়া ও মুক্তিযুদ্ধে ভারতের অবদানকে খাটো করা পাকিস্থানের মূল উদ্দেশ্য।

মার্কিন থিঙ্কট্যাঙ্কের গোপন খবরে প্রকাশ পুরো ব্যাপারটি নিয়ন্ত্রণ করছে পাকিস্থানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের নয়া নিযুক্ত নিরাপত্তা উপদেষ্টা NSA’র মইদ ইউসুফ।

পাকিস্থানের গোয়েন্দা সংস্থা তথা আইএসআই তাদের নীলনকশা বাস্তবায়নের জন্য আগে থেকেই এদেশে জামায়াত ও হেফাজতে ইসলামের উপর অঢেল অর্থ ব্যয় করছে। এদের মাধ্যমে দেশজুড়ে মাদ্রাসা ছড়িয়ে দিয়েছে। যার মাধ্যমে তারা উগ্রবাদী ইসলামকে এদেশে ছড়িয়ে দিচ্ছে, যা নিয়ন্ত্রণ করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকেও অনেকক্ষেত্রে হিমশিম খেতে হচ্ছে।

একই সঙ্গে মুজিব কন্যাও রাষ্ট্রের স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে আলেম-ওলামাদের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রাখার চেষ্টা করেছেন। তবে একথাও ঠিক যে, শেখ হাসিনা অত্যন্ত সুদক্ষ প্রশাসক। রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে নিজের রাজনৈতিক স্বার্থে আঘাত আসার মতো পরিস্থিতি তৈরি হলে উগ্র সাম্প্রদায়িক ও জঙ্গি শক্তিকে দৃঢ় হাতে দমন করেছেন সুদূর অতীতেও।

পাকিস্থান তার নীলনকশা বাস্তবায়নে ব্যবহার করছে বাংলাদেশি গণমাধ্যমকে

পাকিস্থানি গুপ্তচর সংস্থা একই সঙ্গে হিন্দু তথা অমুসলিম বিরোধী মনোভাব তৈরি করে দেশজুড়ে হিন্দুদের মধ্যে ভীতি তৈরি করে তাদের বাংলাদেশ থেকে বিতাড়িত করার উদ্দেশ্যে সংগঠিত করছে ধারাবাহিক আক্রমণ। এবারের দুর্গাপূজায় যার প্রতিফলন দেখা গেলো।

পাকিস্থান এই কাজে প্রচারমাধ্যমকে হাতিয়ার করতে চেয়েছে বরাবরই। এর কারণ হলো প্রচার যন্ত্রকে হস্তগত করতে পারলেই উদ্দেশ্য সাধনের দিকে খুব তাড়াতাড়ি এগোনো সম্ভব। পর্যবেক্ষকদের মতে বাংলাদেশে হিন্দু নিধনের মাধ্যমে ভারতের ওপর চাপ বাড়ানো আইএসআইয়ের একটি পুরনো কৌশল।

বিশিষ্ট স্ট্র্যাটেজিস্ট ভবানী সেনের বক্তব্য, “বাংলাদেশের প্রচারমাধ্যমকে মোটামুটি অনেকাংশে কব্জা করে নিয়েছে পাকিস্থানি গুপ্তচর সংস্থা। এই সম্বন্ধে উদাহরণস্বরূপ বলা যায় রোহিঙ্গাদের বিষয়ে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে মুসলিম দেশগুলোর সহানুভূতি আদায় করার জন্য ব্যাপকভাবে তাদের স্বপক্ষে প্রচার চালাচ্ছে আইএসআইয়ের নির্দেশে। প্রচারণার জন্য প্রচুর ডকুমেন্টারি, সিনেমা, ব্যাপকভাবে খবরের কাগজগুলোতে লেখালেখি হচ্ছে।”

ভবানী সেন আরো বলেন, এসব ব্যাপারে পাকিস্থানি গুপ্তচর সংস্থা ভারত ও বাংলাদেশের সংস্থাগুলোর চাইতে অনেক বেশি আক্রমণাত্মক ভূমিকা পালন করে আসছে।

আইএসআই বিগত এক দশক ধরে প্রচুর অর্থ ঢেলেছে বাংলাদেশি প্রচারমাধ্যমকে হস্তগত করার জন্য। এখন এর ফল ভোগ করছে তারা। কিছু ক্ষেত্রে কোনো প্রচারমাধ্যমকে কব্জা করতে প্রথম দিকে সমস্যা হলে, ৩-৪ গুণ অর্থ ঢেলে নিজেদের কাজ হাসিল করা হচ্ছে, সেন বলেন।

উল্লেখ্য, ভবানী সেন একসময় একটি প্রধান গুপ্তচর বাহিনীতে কর্মরত ছিলেন।

এদিকে ইন্টেলিজেন্স সূত্রটি দাবি করছে, একটি বড় পাবলিক রিলেশনস এজেন্সিকে অ্যাসাইনমেন্ট দেওয়া হয়েছে আইএসআই-এর প্রজেক্ট সফল করার ব্যাপারে সাহায্য করার জন্য। শেখ হাসিনার জন্য দুশ্চিন্তার কারণ হলো, পাকিস্থানি গুপ্তচর সংস্থার সাথে যোগসাজশ আছে বাংলাদেশের প্রধান দুটি নিরাপত্তা সংস্থার কয়েকজন কর্মকর্তার সাথে।

আইএসআই ও ওই পাবলিক রিলেশনস এজেন্সি মিলে খবরের কনটেন্টসহ পুরো হাউজের পলিসি ঠিক করে দিচ্ছে। অর্থাৎ কোন খবর কোথায় যাবে, কেন যাবে, কীভাবে যাবে, হেডলাইন কী হবে, কনটেন্ট কেমন হবে ইত্যাদি। শুধু তা-ই নয়, অনেক ক্ষেত্রে মিডিয়া হাউজের সম্পাদকসহ সাংবাদিকদের বেতনও ঠিক করে দিচ্ছে আইএসআই, ওই সূত্রের দাবি।

শুধুমাত্র টেলিভিশন চ্যানেল বা খবরের কাগজই নয়, সরকারবিরোধী বক্তব্যকে পুঁজি করে ব্যাপকভাবে গজিয়ে ওঠা ইউটিউব চ্যানেলগুলোর প্রসারে ও উৎসাহ যোগানো হচ্ছে। অনেকক্ষেত্রে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রভাবশালী চিহ্নিত করে তাদেরকে ব্যাপক অর্থ দিচ্ছে আইএসআই, তাদের ভারতবিরোধী এজেন্ডা চালাবার জন্য।

আর এসব কার্যক্রমের মাধ্যমে আইএসআই বাংলাদেশে তাদের প্রভাব দিনকে দিন বৃদ্ধি করে চলেছে। যা বাংলাদেশ তথা গোটা অঞ্চলে এক অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করছে। বাংলাইনসাইডার।

শেয়ার করুন !
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

এই ওয়েবসাইটের যাবতীয় লেখার বিষয়বস্তু, মতামত কিংবা মন্তব্য– লেখকের একান্তই নিজস্ব। somoyekhon.net-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এর মিল আছে, এমন সিদ্ধান্তে আসার কোনো যৌক্তিকতাই নেই। লেখকের মতামত, বক্তব্যের বিষয়বস্তু বা এর যথার্থতা নিয়ে somoyekhon.net আইনগত বা অন্য কোনো ধরনের কোনো প্রকার দায় বহন করে না।

Leave A Reply

error: Content is protected !!