সুনামগঞ্জ সংবাদদাতা:
হাওরে ফসল রক্ষা বাঁধের নির্মাণকাজ নিয়ে তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করে পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক শামীম বলেছেন, যারা বাঁধ নির্মাণ কাজের অনিয়ম করবে তাদের কিছুতেই ছাড় দেয়া হবে না। প্রধানমন্ত্রী হাওরের বিষয়ে আন্তরিক। তিনি সব সময় হাওরের মানুষের খোঁজ খবর রাখেন। প্রধানমন্ত্রী দুর্নীতিবাজদের পছন্দ করেন না। আজ শুক্রবার সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলা পাবলিক লাইব্রেরি মিলনায়তনে আয়োজিত এক সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
এ সময় এক প্রকল্প চেয়ারম্যানকে উদ্দেশ্য করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রকল্প কাজ ভালভাবে না করলে ১ টাকাও বিল পাবেন না। বাঁধ নির্মাণকাজে অনিয়ম হলে আপনাদের ঘাড় ধরে পানিতে চুবাবো। আমি সেনাবাহিনীতে চাকরি করেছি। সেখানে সেক্টর কমান্ডারের দায়িত্বে ছিলাম। চাকরিরত অবস্থায় অন্যায়ভাবে একটি টাকাও খাইনি, এখনো খাব না।
এর আগে উপজেলার মাটিয়ান হাওরে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন প্রকল্পের কাজ পরিদর্শন প্রতিমন্ত্রী। তিনি নির্মানাধীন বোরো ফসলরক্ষা বাঁধের আনন্দ নগর, বোয়ালমারা, বনুয়া অংশের নির্মাণকাজ পরিদর্শন করেন।
এ সময় তার সঙ্গে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন) মুহাম্মদ ইউসূফ, সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক মো আব্দুল আহাদ, পুলিশ সুপার মুহাম্মদ বরকতুল্লাহ খান, তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
‘দালালিমার্কা’ সংবর্ধনার বাহুল্য, গাড়িবহর ও চাটুকারিতার বিরুদ্ধে পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রীর হুঁশিয়ারি
ফেসবুক পোস্টে প্রতিমন্ত্রী লিখেছেন-
‘অনুগ্রহপূর্বক আমাকে রিসিভ বা সংবর্ধনা দেওয়ার নামে মোটরসাইকেল, প্রাইভেটকার বা মাইক্রোবাসের বহর নিয়ে আসবেন না। কারণ এতে সাধারণ মানুষকে দুর্ভোগে পড়তে হতে পারে। আমি চাই না, আমার জন্য কোনও মানুষ দুর্ভোগের শিকার হোক। এ ছাড়া, কিছু অসাধু লোক দলীয় পরিচয়ে এসব অনুষ্ঠানের নামে সাধারণ মানুষ ও ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চাঁদাবাজি করে থাকে, যা মোটেও গ্রহণযোগ্য নয়।
আমার জন্য রাস্তায় কোমলমতি শিক্ষার্থীদের দাঁড় করিয়ে রাখা যাবে না; একেবারেই না। কোথাও শিক্ষার্থীদের লাইনে দাঁড় করিয়ে রাখলে আমি সেই অনুষ্ঠান বয়কট করবো এবং প্রতিষ্ঠান প্রধানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করবো। আমাকে স্বাগত জানানোর জন্য কোনও প্রতিষ্ঠান, সমিতি বা স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান যেন পাবলিক মানি ব্যয় করে কোনও গেট বা তোরণ নির্মাণ না করে। অনুগ্রহপূর্বক কোনও অনুষ্ঠানে অযথা বিপুল অর্থ ব্যয় করে স্টেজও বানাবেন না। অযথা অর্থের অপচয় থেকে বিরত থাকবেন।
কোনও অনুষ্ঠানে আপ্যায়নের নামে শিক্ষার্থী বা জনগণের টাকায় রকমারি খাবারের আয়োজন করা যাবে না। মনে রাখবেন, আমি সেবক; জনগণের দয়ায় নির্বাচিত প্রতিনিধি। আপনারা সর্বোচ্চ ভোট দিয়ে আমাকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত করেছেন বলেই জননেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব দিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ১০ বছর ধরে বাংলাদেশের উন্নয়নে যেভাবে নিরলস চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন, সেই গতিধারাকে অব্যাহত রাখতে এবং নেত্রীর হাতকে শক্তিশালী করতে প্রতিমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছি। প্রধানমন্ত্রীর উন্নয়নের ধারা অব্যাহত থাকুক– এটাই জনগণের একমাত্র আশা এবং আকাঙ্খা।’