চট্টগ্রাম ব্যুরো:
আত্মহত্যা করার আগে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. মোস্তফা মোরশেদ আকাশ নিজের ফেসবুক ওয়ালে স্ত্রী ডা. তানজিলা হক চৌধুরী মিতুর পরকীয়া এবং একাধিক প্রেমিকের সঙ্গে মিতুর শারীরিক সম্পর্কের অশ্লীল কিছু ছবি ফাঁস করে কিন্তু মোবাইলটি উদ্ধারের পর সেই তথ্যের কিছুই পায়নি পুলিশ।
উদ্ধার করা ডা. মিতুর মোবাইলেও তেমন কোনো তথ্য নেই। এমনকি আকাশের আত্মহত্যার পর মিতুর ফেসবুক আইডিও ডিঅ্যাক্টিভ রয়েছে। যা নিয়ে নতুন গ্যাঁড়াকলে পড়েছেন বলে জানান মামলার তদন্ত কর্মকর্তা চান্দগাঁও থানার এসআই আবদুল কাদের।
তিনি বলেন, কয়েকটি প্রশ্নের উত্তর খুঁজছি আমরা। প্রথম প্রশ্ন- ডা. আকাশের মোবাইল থেকে ফেসবুকে দেয়া তথ্যসহ মিতুর শারীরিক সম্পর্কের অশ্লীল ছবি, মিতু ও তার মা-বোনের ভয়েস রেকর্ডগুলো ডিলিট করলো কে? এমনকি মিতুর মোবাইল থেকেও সব তথ্য মুছে দেয়া হয়েছে। মিতুর ফেসবুক আইডিটাও ডিঅ্যাক্টিভ করলো কে? তার কোনো হদিস মিলছে না। অথচ মামলার অভিযোগের স্বপক্ষে আকাশ ও মিতুর মোবাইলের সব তথ্য উদ্ধার করা জরুরি। ফলে এসব তথ্য উদ্ধারের জন্য তাদের মোবাইল সিআইডির ফরেনসিক ল্যাবে পাঠানো হয়েছে।
এসআই আবদুল কাদের আর বলেন, ৩১শে জানুয়ারি ভোরে ডা. আকাশ আত্মহত্যার আগে ফোন পেয়ে নগরীর চান্দগাঁও আবাসিক বি-ব্লকের ২ নম্বর সড়কের ২০ নম্বর বাড়ির তৃতীয় তলার বাসা থেকে গাড়িতে করে নিয়ে যান মিতুর বাবা আনিসুল হক চৌধুরী। অথচ রাতে নগরীর নন্দনকাননে খালাতো ভাইয়ের বাসা থেকে মিতুকে আটক করে পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট। আর মিতুর দেয়া তথ্যমতে তার মোবাইল উদ্ধার করা হয় নগরীর শাহ আমানত মাজার এলাকা থেকে। ডা. আকাশের মোবাইল উদ্ধার করা হয় তাদের বাসা থেকে। তবে মোবাইলটি তার মা ও ভাই কেউ স্পর্শ করেনি বলে জানান তারা। আর এ ব্যাপারে মিতুকে রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলেও তিনি কোনো সদুত্তর দেননি। তবে রিমান্ডে চার পরকীয়া প্রেমিকের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক থাকার কথা স্বীকার করেন মিতু।
তিনি বলেন, আকাশ যেদিন আত্মহত্যা করেছিল সেদিন কী কী বিষয় নিয়ে তাদের মধ্যে ঝগড়া হয়েছিল, কী তাদের উদ্দেশ্য ছিল, মোবাইলের তথ্যগুলোই বা মুছে দিলো কে-এসব জানতে দু’একদিনের মধ্যে পুনরায় রিমান্ড চেয়ে আদালতে আবেদন জানানো হবে।
উল্লেখ্য, গত ৩১ জানুয়ারি স্ত্রীর অনৈতিক সম্পর্ক মেনে নিতে না পেরে নিজ শরীরে ইনজেকশন পুশ করে আত্মহত্যা করেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক মোস্তফা মোরশেদ আকাশ। তিনি চন্দনাইশ উপজেলার বাংলাবাজার বরকল এলাকার মৃত আবদুস সবুরের ছেলে। এ ঘটনায় স্ত্রী মিতুসহ ৬ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়। সে রাতেই গ্রেফতার হন তার স্ত্রী তানজিলা হক মিতু।